বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ‘অত্যন্ত গর্হিত কাজ’: প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ২৮ মার্চ, ২০২২ ১২:৩২

যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, যারা আমাদের বিনা কারণে, বিনা দোষে র‍্যাবের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে স্যাংশন জারি করেছে, তাদের দেশে কিন্তু এ ধরনের অপরাধ করলে, তারা কিন্তু তাদের কোনো বাহিনীর বিরুদ্ধে কোনো রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে না।’

বিনা অপরাধে র‍্যাব এবং বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া নিষেধাজ্ঞাকে ‘অত্যন্ত গর্হিত কাজ’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

যুক্তরাষ্ট্রে তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অপরাধের ক্ষেত্রে বিচারহীনতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী।

গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে র‍্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। গেল বছরের ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর।

ঢাকার র‍্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরে সোমবার সকালে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে যোগ দিয়ে বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান প্রধানমন্ত্রী। গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আরেকটা কথা স্পষ্টভাবে বলতে চাই। সেটা হলো, আমাদের দেশে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা বা র‌্যাব বা পুলিশ বা যে কেউ, তারা নিজেরা যদি কোনো অপরাধে জড়িয়ে পড়ে, আমরা কিন্তু তার শাস্তির ব্যবস্থা করি।’

তবে আমেরিকায় এ ব্যবস্থা নেই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, যারা আমাদের বিনা কারণে, বিনা দোষে র‌্যাবের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে স্যাংশন জারি করেছে, তাদের দেশে কিন্তু এ ধরনের অপরাধ করলে, তারা কিন্তু তাদের কোনো বাহিনীর বিরুদ্ধে কোনো রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে না।’

যুক্তরাষ্ট্রে এ ধরনের ঘটনার উদাহরণও তুলে ধরেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট বলি, আমেরিকায় কিন্তু আপনারা দেখেছেন, সেখানে কিন্তু ছোট বাচ্চা ছেলে জাস্ট পকেটে হাত দিয়েছে, তাকে গুলি করে মারল অথবা রাস্তায় ফেলে পা দিয়ে গলা টিপে মেরে ফেলে দিল। সেখানে যদি এ ধরনের অপরাধ কেউ করে অর্থাৎ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার নামে যদি কেউ কোনো অপরাধ করে, অপরাধ করলেও কিন্তু তাদের কাউকে সেখানে কোনো শাস্তি দেয়া হয় না।’

এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সবার চেয়ে আলাদা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিন্তু বাংলাদেশ একমাত্র দেশ পৃথিবীতে, যেখানে কেউ অপরাধ করলে আমরা তার শাস্তির বিধান করি।’

এরপরও র‌্যাব ও বাহিনীটির সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপকে দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘যারা এ ধরনের অভিযান করে সাফল্য অর্জন করেছে, যেমন- হলি আর্টিজানের ঘটনায় মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আমরা সেটা উদ্ধার করি। জলদস্যু, বনদস্যু বা মাদক বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সাফল্য, আমি জানি না আমাদের সাফল্যগুলোতে এরা কোনো দুঃখ পেয়েছে কি না, তা আমি বলতে পারি না। কিন্তু বাংলাদেশে যে এই ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছে, এটি হলো সত্য। সে ক্ষেত্রে ধরনের একটি স্যাংশন জারি করা, এটি অত্যন্ত গর্হিত কাজ বলে আমি মনে করি।’

বিদেশে থেকে যারা দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তারা সবাই অপরাধী বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে দুঃখজনক হলো, আমাদের দেশের কিছু মানুষ, তারাই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার চালায়। আর যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে বিদেশে বসে, তারা কিন্তু অপরাধী। তারা কোনো না কোনো দোষে হয়তো চাকরি হারিয়েছে বা দেশ ছেড়েছে।’

অপপ্রচারকারীদের সঙ্গে যুদ্ধাপরাধী ও জাতির পিতার খুনিরা সম্পৃক্ত বলে মনে করেন সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘তার ওপর সেখানে আমাদের যুদ্ধাপরাধীরা যেমন স্থান পেয়েছে, তেমনি জাতির পিতার খুনি, আত্মস্বীকৃত খুনি, সাজাপ্রাপ্ত আসামি সেও কিন্তু আমেরিকায় বসবাস করছে। তাকে তারা ওখানকার সিটিজেন করে নিয়েছে। আমরা বারবার তাদের রিকোয়েস্ট করছি, অনুরোধ করছি, প্রেসিডেন্টের কাছে চিঠি দিচ্ছি, একের পর এক প্রেসিডেন্ট আসছেন, আমরা তার কাছে ধরনা দিয়ে যাচ্ছি।

‘জাস্টিস ডিপার্টমেন্টকে আহ্বান করেছি যে, এরা অপরাধী, এরা শিশু হত্যাকারী, এরা নারী হত্যাকারী। ১৫ আগস্ট তারা খুন করেছে, কাজেই তাদের আমাদের দেশে ফেরত দিতে হবে। তারা অপরাধীদের রক্ষা করে, তাদের দেশে স্থান দেয় আর বিনা অপরাধে আমাদের দেশে স্যাংশন দেয়। এটা যাদের চরিত্র তাদের বিষয়ে আর কী বলব!’

বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় র‌্যাবের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আজকে আমাদের যে উন্নয়ন, আমি মনে করি আমাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানসহ র‌্যাবেরও বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে র‌্যাবের প্রতিটি সদস্য আন্তরিকতা, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের কর্মদক্ষতা এবং পেশাদারত্ব স্বল্প সময়ের মধ্যে এ বাহিনীকে ঈর্ষণীয় সাফল্য এনে দিয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর