বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অনলাইনে জুয়া পরিচালনা করে বাড়ি-গাড়ির মালিক

  •    
  • ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১৫:৪৩

সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা জানান, পলাতক সাথী আক্তারসহ ৫০ থেকে ৬০ জন দীর্ঘদিন ধরেই অনলাইন জুয়া পরিচালনা করে আসছেন। তারা মোবাইল হ্যান্ডসেটসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে অনলাইনে জুয়া খেলার সাইট পরিচালনা করতেন।

মোবাইল হ্যান্ডসেটসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের মাধ্যমে অনলাইনে জুয়া (বেটিং) পরিচালনা করতেন তরিকুল ইসলাম ওরফে বাবু ও রানা হামিদ। এর মাধ্যমে জমি, গাড়ি কেনার পাশাপাশি বাড়ি করেছেন অনলাইন জুয়া চক্রের বাংলাদেশ অঞ্চলের এ দুই মাস্টার এজেন্ট।

চক্রের ৫০ থেকে ৬০ সদস্যের সহায়তায় বেটিং পরিচালনা করতেন তারা। এসব অর্থের লেনদেন হতো রকেট, নগদ ও বিকাশসহ মোবাইল ব্যাংকিয়ের মাধ্যমে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার।

এর আগে গত শনিবার রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় অভিযান চালিয়ে তরিকুল, রানা ও তাদের সহযোগী সুমন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

অভিযানে তিনজনের কাছ থেকে একটি প্রাইভেট কার, ১১ লাখ ৮০ হাজার টাকা, বিভিন্ন মডেলের চারটি মোবাইল ফোন, পাঁচটি সিম কার্ড, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও ২৩টি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার তিন আসামির নামে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছে আদালত।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আক্তার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা জানান, পলাতক সাথী আক্তারসহ ৫০ থেকে ৬০ জন দীর্ঘদিন ধরেই অনলাইন জুয়া পরিচালনা করে আসছেন। তারা মোবাইল হ্যান্ডসেটসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে অনলাইনে জুয়া খেলার সাইট পরিচালনা করতেন।

তিনি বলেন, অনলাইন জুয়া সাইট থেকে অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ দিয়ে তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে জমি কেনেন। পাশাপাশি গাড়ি কেনাসহ অবৈধভাবে সম্পদ গড়ে তোলেন। গ্রেপ্তার তরিকুল, বাবু ও সুমন জুয়ার টাকা বিকাশ, নগদ ও রকেটসহ মোবাইল ব্যাংকিং বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন করতেন।

ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, তরিকুল ও বাবু অনলাইন জুয়া সাইটগুলোর মাস্টার এজেন্ট হিসেবে দেশের বাইরে থাকা সুপার এজেন্টের কাছ থেকে প্রতিটি ভার্চুয়াল কারেন্সি (পিবিইউ) ৬০ টাকার বিনিময়ে কিনতেন। পরে সাইটগুলোর ব্যবহারকারীদের কাছে প্রতিটি পিবিইউ ১৫০ টাকায় এবং লোকাল এজেন্টের কাছে ১০০ টাকায় বিক্রি করতেন। তরিকুল ও বাবু ৮ থেকে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে লোকাল এজেন্ট নিয়োগ করেন। পরে লোকাল এজেন্ট তার ব্যবহারকারীদের কাছে পিবিইউ বিক্রি করতেন। এভাবে সাধারণ ব্যবহারকারীদের টাকা গ্রেপ্তার তরিকুল ও বাবুর মাধ্যমে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছিল।

ডিবি জানায়, অনলাইনে সিয়াম আহমেদ নামে (ছদ্মনামে) দুটি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে তরিকুলের, যার মাধ্যমে এজেন্টরা গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকে। তরিকুল ও বাবুর প্রকাশ্যে কোনো আয়ের উৎস নাই।

প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, জব্দকৃত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোতে এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।

গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা হাফিজ আক্তার বলেন, সাইটগুলোতে বিভিন্ন ক্রিকেট খেলায় নির্দিষ্ট ওভার বা বলে কত রান হবে অথবা নির্দিষ্ট ম্যাচটি কোন দল জিতবে, তার ওপর ১:৩ অনুপাতে বেটিং করা হয়। সাধারণ ইউজার নির্দিষ্ট টার্গেট করা রান বা তার নির্দিষ্ট দল জিতলে তিন গুণ পিবিইউ বা বেটিংয়ের শর্ত অনুসারে পিবিইউ ফেরত পায়। এভাবেই বেটিং বা অনলাইন জুয়া পরিচালনা হয়।

এখন পর্যন্ত চক্রটি কত টাকা পাচার করেছে জানতে চাইলে হাফিজ আক্তার বলেন, ‘চক্রটি এখন পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, তবে পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার করা গেলে এবং তদন্ত করে সঠিক কত টাকা পাচার হয়েছে, তা বলা যাবে।’

জুয়া সাইটগুলোর অ্যাডমিন কারা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনলাইন জুয়া (বেটিং) খেলাগুলোর সাইটের অ্যাডমিন রাশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ভারতে। দেশে থাকা মাস্টার এজেন্টরা তাদের কাছ থেকে পিবিইউ নিয়ে খেলাগুলো পরিচালনা করছে। পুরো চক্রকে ধরতে পারলে ধারণা করা যাবে টাকার পরিমাণ অনেক বড়।’‌

পারিবারিক সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে হাফিজ আক্তার বলেন, ‘অনলাইন জুয়া সাইটগুলো বিটিআরসি বন্ধ করছে। তারপরও বলব প্রত্যেক পরিবারকে সচেতন হতে হবে। জুয়ার মাধ্যমে অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে। একমাত্র পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমেই তা বন্ধ করা সম্ভব।’

এ বিভাগের আরো খবর