করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে গত দুই বছর স্নানোৎসব হয়নি নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দে। মহামারি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসায় চলতি বছর এ উৎসবের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আয়োজকরা।
ব্রহ্মপুত্র নদে শুক্রবার রাত ৯টা ১৩ মিনিটে শুরু হবে মহাষ্টমী স্নানোৎসবের। উৎসব শেষ হবে শনিবার রাত সোয়া ১১টায়।
এ উৎসবে বাংলাদেশিদের পাশাপাশি অংশ নেবেন ভারত, নেপাল ভুটানসহ কয়েকটি দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
ফুল, বেলপাতা, ধান, দুর্বা, হরিতকী, ডাব, আম্রপল্লব নিয়ে স্নানে অংশ নিতে তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পুণ্যার্থীর ঢল নামবে লাঙ্গলবন্দ এলাকায়। এরই মধ্যে স্নানের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে নলিত মোহন সাধু ঘাট, অন্নপূর্ণা ঘাট, রাজঘাট, মাকরী সাধু ঘাট, গান্ধী (শ্মশান) ঘাট, ভদ্রেশ্বরী কালী ঘাট, জয়কালী মন্দির ঘাট, রক্ষাকালী মন্দির ঘাট, পাষাণ কালী মন্দির ঘাট, প্রেমতলা ঘাট, মণি ঋষিপাড়া ঘাট, ব্রহ্ম মন্দির ঘাট, দক্ষিণেশ্বরী ঘাট, পঞ্চপাণ্ডব ঘাট ও পরেশ মহাত্মা আশ্রমসহ ১৬টি ঘাট।
নারায়ণগঞ্জ পূজা উদযাপন পরিষদ ও স্নান উৎসব কমিটির সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার জানান, হিন্দু দেবতা পরশুরাম হিমালয়ের মানস সরোবরে স্নান করে পাপমুক্ত হন। লাঙল দিয়ে চষে হিমালয় থেকে এ পানিকে ব্রক্ষ্মপুত্র নদরূপে নামিয়ে আনেন সমভূমিতে। সে রীতি মেনে প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুক্লাষ্টমী তিথিতে পাপমোচনের বাসনায় দেশ-বিদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লাঙ্গলবন্দে আসেন পুণ্যার্থীরা।
শান্তিপূর্নভাবে এ স্নানোৎসব পালন করতে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এ স্নানোৎসবের নিরাপত্তার জন্য প্রায় দেড় হাজার পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। এর পাশাপাশি অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও সাদা পোশাকে তৎপর থাকবে।
উৎসবস্থলে সাতটি ওয়াচ টাওয়ারসহ সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে; খোলা হয়েছে পুলিশের কন্ট্রোল রুম।
দুর্ঘটনা এড়াতে বা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিপুলসংখ্যক ফায়ার সার্ভিসের কর্মী নিয়োজিত করার পাশাপাশি মেডিক্যাল সেবা ক্যাম্প, বিশ্রামাগারের ব্যবস্থাও রয়েছে।