ঈদুল আজহার ছুটিতে দেশের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ভ্রমণে পাসপোর্টধারী যাত্রীর উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিগত তিন দিনে প্রধান এই স্থলবন্দর দিয়ে যাত্রী যাতায়াত বেড়ে প্রায় তিন গুণ দাঁড়িয়েছে।
বেনাপোল দিয়ে গত চার দিনে ৩০ হাজার ৪৮১ জন পাসপোর্টধারী যাত্রী বাংলাদেশ ও ভারতে আসা-যাওয়া করেছেন। ঈদের ছুটিতে ভারতে যাত্রী যাতায়াত বৃদ্ধি পেলেও অব্যবস্থাপনার কারণে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।
ভ্রমণ, ব্যবসা ও চিকিৎসার জন্য পাসপোর্টধারী যাত্রীরা এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাত্রা করেন। ইমিগ্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, ঈদুল আজহায় সরকারি ছুটি থাকায় গত চার দিনে রেকর্ডসংখ্যক যাত্রী বেনাপোল বন্দর দিয়ে পারাপার হয়েছেন। এটা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অন্তত তিন গুণ।
অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে দীর্ঘ সারিতে দাঁড়িয়ে দুই দেশের ইমিগ্রেশনে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন যাত্রীরা। বিশেষ করে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে ভোগান্তি বেশি বলে যাত্রীদের অভিযোগ।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, ১২ জুন থেকে ১৫ পর্যন্ত চার দিনে মোট ৩০ হাজার ৪৮১ জন পাসপোর্টধারী যাত্রী দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করেছেন। এর মধ্যে ২০ হাজার ১৩৭ জন বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছেন। আর ১০ হাজার ৩৪৪ জন ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। সরকারি ছুটি শেষ হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত আরও কয়েক হাজার যাত্রী ভারতে যাতায়াত করবেন বলে জানা গেছে।
বেনাপোল-পেট্রাপোল নো-ম্যান্স ল্যান্ডে সরেজমিনে গিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে আলাপকালে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
পলাশ নামে এক যাত্রী বলেন, ‘এবার পরিবার নিয়ে ভারতে ঈদ উদযাপন করতে যাচ্ছি। কিন্তু তীব্র গরম আর রোদের মধ্যে এখানে তিন ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। লাইন যেন আর কমছেই না। এখানকার অফিসাররা ধীরগতিতে কাজ করায় সময়টা বেশি লাগছে। এখনও কত সময় লাগবে বলতে পারছি না।’
গোলাম মোস্তফা নামে আরেক যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম শেষ করতে মাত্র কয়েক মিনিট লাগলেও পেট্রাপোল নো-ম্যান্স ল্যান্ডে রৌদের মধ্যে দুই ঘণ্টার উপরে দাঁড়িয়ে আছি। ইমিগ্রেশনে কখন ঢুকব বলা মুশকিল।’
বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদুল আজহার ছুটিতে চার দিনে ৩০ হাজার ৪৮১ জন যাত্রী দুই দেশের মধ্যে আসা-যাওয়া করেছেন। স্বাভাবিক সময়ে এ সংখ্যা গড়ে প্রতিদিন ৪ হাজার ৫০০ জনের মধ্যে থাকে। সে হিসাবে এবার রেকর্ডসংখ্যক যাত্রী যাতায়াত করছেন। এদের অধিকাংশই ঈদ উপলক্ষে দীর্ঘ ছুটির কারণে ভ্রমণ ও চিকিৎসার জন্য ভারতে গমন করছেন।’
পেট্রাপোলে ভোগান্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পেট্রাপোলের ওসির সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ হচ্ছে। যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে তাদের তাগিদ দেয়া হচ্ছে। সেখান থেকে জানানো হয়েছে, ইমিগ্রেশনে দেরি হচ্ছে না। দেরি হওয়ার মূল কারণ বিএসএফের তল্লাশি। এরপরও যাত্রীসেবার মান বাড়াতে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাগিদ দিচ্ছেন।’