রোজার ঈদের সিনেমার রেশ এখনো কাটেনি। এবার ঈদে ৬টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। প্রথম, দ্বিতীয় সপ্তাহ পর তৃতীয় সপ্তাহও প্রায় শেষের পথে। তবুও জমজমাট ঈদের সিনেমাগুলো। বিশেষ করে শাকিব-ইধিকা পালের বরবাদ, সিয়াম-বুবলীর জংলি, আফরান নিশো-তমা মির্জা অভিনীত দাগি সিনেমা এখনো বেশ দর্শক টানছে। তবে শতাধিক প্রেক্ষাগৃহ নিয়ে রীতিমতো দেশজুড়ে ঝড় তুলে দিয়েছে মেহেদী হাসান পরিচালিত শাকিব খানের বরবাদ সিনেমাটি। এখনো ছবিটির টিকিট পেতে বেগ পেতে হচ্ছে দর্শককে। যদিও কোন ছবি কতটা ব্যবসা করছে তার সঠিক তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি, তবে দু-একটি ছবি প্রত্যাশা অনুযায়ী ব্যবসা করতে পারছে না। মুক্তির শুরুতেই বেশ কয়েকটি সিনেমা হল থেকে নামিয়ে ফেলা হয়েছে শাকিব খান ও কলকাতার দর্শনা বণিক অভিনীত অন্তরাত্মা সিনেমাাটি। অন্যদিকে প্রত্যাশা অনুযায়ী না হলেও খারাপ যাচ্ছে না আবদুন নূর সজল ও নুসরাত ফারিয়া অভিনীত জ্বীন-৩ ছবিটি।
এদিকে এরই মধ্যে আবারও ঈদের আমেজ সিনেমাপাড়ায়। সিনেমাপাড়া ও বিভিন্ন পরিচালক-প্রযোজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার ঈদেও মুক্তির তালিকায় রয়েছে প্রায় এক ডজন ছবি। শুরু হয়ে গেছে আসন্ন ঈদুল আজহার সিনেমা মুক্তি দেওয়ার প্রস্তুতি। এখন পর্যন্ত এবারের ঈদুল আজহায় মুক্তির অপেক্ষায় থাকা সিনেমার মধ্যে রয়েছে তাণ্ডব, নীলচক্র, ইনসাফ, টগর, পিনিক, এশা মার্ডার : কর্মফল ইত্যাদি।
এর মধ্যে পিনিক, নীলচক্রসহ কয়েকটি ছবির শুটিং, ডাবিং এডিটিং শেষ করে মুক্তির জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। তবে কোরবানি ঈদের অন্যরকম প্রত্যাশিত ছবি শাকিব খান অভিনীত ‘তাণ্ডব’ সিনেমাটির শুটিং চলছে পুরোদমে। এর মধ্য দিয়ে ‘তুফান’ সাফল্যের পর আবারও পর্দায় জুটি হয়ে আসছেন রায়হান রাফী ও শাকিব খান। সিনেমাটিতে শাকিব খান ছাড়াও একটি বিশেষ চরিত্রে (সাংবাদিক) থাকছেন জয়া আহসান। নায়কের বিপরীতে কে থাকছেন, তা এখনো প্রকাশ্যে আনেননি নির্মাতা। তবে বিশেষ সূত্র মতে এই সিনেমার নায়িকা হিসেবে শেষ পর্যন্ত দেখা যাবে ছোটপর্দার প্রিয় মুখ সাবিলা নূরকেই।
নির্মাতা রায়হান রাফী বলেন, ‘আমাদের শুটিংয়ের কাজ পুরোদমে চলছে। তুফান-এর পর দর্শক এখানে অন্যরকম এক শাকিব খানকে দেখতে পাবে, যেমনটা আগে কখনো দেখেনি। আর কোরবানি ঈদ আমার জন্য খুব লাকি। সেই ধারাবাহিকতায় ‘তাণ্ডব’ কোরবানি ঈদেই আসছে। আর নায়িকা কে সেটা সময় হলেই সবাই জানতে পারবেন। তবে চমক আছে এটুকু বলতে পারি।’
এবার ঈদুল আজহায় দেখা যেতে পারে আরিফিন শুভকেও। দীর্ঘ বছর ঈদে তার দেখা মেলেনি, তবে এবার স্বরূপে হাজির হবেন তিনি। তার অভিনীত ‘নীলচক্র’ সিনেমাটি মুক্তির কথা রয়েছে। মিঠু খান পরিচালিত এ সিনেমায় আরিফিন শুভর সঙ্গে দেখা যাবে মন্দিরা চক্রবর্তীকে।
ঈদ ঘিরে নির্মিত হচ্ছে আরেক সিনেমা ‘ইনসাফ’। ঈদুল ফিতরে মুক্তির লক্ষ্যে নির্মাণ শুরু করলেও এখন এটি ঈদুল আজহাকে টার্গেট করেই এগোচ্ছে। ইতোমধ্যে সিনেমাটির ৯৫ ভাগ শুটিং শেষ বলে জানা গেছে। এই সিনেমার মধ্য দিয়ে অনেক দিন পর পর্দায় ফিরছেন শরিফুল রাজ। তার সঙ্গে পর্দায় হাজির হবেন মোশাররফ করিমও। সঞ্জয় সমদ্দার পরিচালিত এই সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন তাসনিয়া ফারিণ।
ঈদুল আজহায় মুক্তি পেতে পারে আদর আজাদ অভিনীত ‘পিনিক’। জাহিদ জুয়েল পরিচালিত এ সিনেমায় আদরের বিপরীতে দেখা যাবে শবনম বুবলীকে।
আলোক হাসান পরিচালিত ‘টগর’ রয়েছে মুক্তির তালিকায়। এই সিনেমায় জুটি হিসেবে দেখা যাবে আদর আজাদ ও পূজা চেরী জুটিকে। এরই মধ্যে সিনেমাটির মুক্তি ঘিরে প্রচারণা শুরু করা হয়েছে।
ঈদুল আজহায় মুক্তির তালিকায় রয়েছে ‘এশা মার্ডার : কর্মফল’ সিনেমাটিও। আসন্ন ঈদে মুক্তির লক্ষ্যে পুরোদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এর নির্মাতা সানী সানোয়ার। মার্ডার মিস্ট্রি গল্পে এই সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন, পূজা ক্রুজ প্রমুখ।
বলিউড অভিনেত্রী ইয়ামি গৌতম ও অভিনেতা ইমরান হাশমি সম্প্রতি শেষ করলেন একটি কোর্টরুম ড্রামার শুটিং। হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, এই সিনেমায় ইয়ামি গৌতম শাহ বানু চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ইমরান হাশমি অভিনয় করছেন তার প্রাক্তন স্বামী আহমেদ খান অনুপ্রাণিত একটি চরিত্রে। সিনেমার শুটিং ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। সেই ১৯৮৫ সালের আলোচিত শাহ বানু বনাম আহমেদ খান মামলার ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হচ্ছে ছবিটি। এই মামলাটি ভারতের আইন ও সমাজের ইতিহাসে একটি মোড় ঘোরানো মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি ধর্মীয় বিশ্বাস ও গণতান্ত্রিক অধিকার, বিশেষ করে মুসলিম পার্সোনাল ল’ এবং লিঙ্গ সমতার প্রশ্ন নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সূচনা করেছিল।
১৯৭৮ সালে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে, শাহ বানু নামের একজন মুসলিম মহিলা তার সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে আর্থিক সাহায্যের আবেদন করেন। আহমেদ খান নামের ওই ব্যক্তি একজন নামকরা আইনজীবী ছিলেন। তারা ১৯৩২ সাল থেকে বিবাহিত ছিলেন এবং পাঁচ সন্তানের জনক-জননী। শাহ বানু তার আবেদনটি ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৫ ধারা অনুসারে করেন, যেখানে বলা আছে- যদি কোনো নারী নিজে উপার্জন করতে না পারেন তবে তার স্বামী তাকে বিবাহ বিচ্ছেদের পরও খরচ দিতে বাধ্য থাকবেন।
তবে আহমেদ খান দাবি করেন, মুসলিম পার্সোনাল ল অনুযায়ী তিনি শুধু ইদ্দত পর্ব পর্যন্তই খরচ দিতে বাধ্য। ইদ্দত হচ্ছে বিবাহ বিচ্ছেদ বা স্বামীর মৃত্যুর পর একজন নারীর জন্য নির্ধারিত তিন মাসের অপেক্ষার সময়। এই মামলায় অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড আহমেদ খানের পক্ষ নেয় এবং দাবি করে, এই রকম পারিবারিক বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ ইসলামিক শরিয়াহ আইনের বিরুদ্ধে যাবে। তাদের মতে, ১৯৩৭ সালের মুসলিম পার্সোনাল ল (শরিয়ত) অ্যাপ্লিকেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী, মুসলিমদের পারিবারিক বিষয় ইসলামি আইন অনুযায়ী মীমাংসা হওয়া উচিত।
দীর্ঘ শুনানির পর, ১৯৮৫ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট শাহ বানুর পক্ষে রায় দেয় এবং তাকে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী খরচ পাওয়ার অধিকার স্বীকৃতি দেয়। সেই সময়ের প্রধান বিচারপতি ওয়াই. ভি. চন্দ্রচূড় রায়ে বলেন, সিআরপিসি ধর্ম নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জন্য প্রযোজ্য। আদালত রায় দেয়, শাহ বানু খরচ পাবেন। তার খরচের পরিমাণ আরও বাড়ানো হয়।
একটু একটু করে নিজের মেধাশক্তি দিয়ে ক্রমেই দ্যুতি ছড়াচ্ছেন টালিউডের লাস্যময়ী অভিনেত্রী কৌশানি মুখার্জি। বলা চলে, ক্যারিয়ারের সেরা সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন এই অভিনেত্রী। বক্স অফিসে একের পর এক ছক্কা হাঁকাচ্ছেন তিনি। ‘বহুরূপী’র সাফল্যের পর ‘কিলবিল সোসাইটি’-তে নায়িকার অভিনয় নজর কেড়েছে দর্শকের। এর মাঝেই ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে নতুন গুঞ্জন। ক্যারিয়ারের সাফল্যই নাকি বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বনি-কৌশানির সম্পর্কে। দীর্ঘ দিন ধরে প্রেমের সম্পর্কে রয়েছেন তারা। তা নিয়ে অবশ্য কোনও দিন লুকোছাপাও করেননি নায়ক-নায়িকা। কিন্তু তাদের মধ্যে নাকি আর সব আগের মতো স্বাভাবিক নেই, এমনটাই আঁচ করছে বনি-কৌশানির ঘনিষ্ঠমহল। এক দিকে ‘হিট’ পরিচালকদের সঙ্গে জুটি বাঁধছেন অভিনেত্রী। অন্য দিকে নায়কের ঝুলিতে যেন হিট ছবির ভাটা। এই হিসেবনিকেশই কষছেন নিন্দকেরা।
প্রশ্ন উঠেছে সত্যিই কি অভিমানের পাহাড় জমেছে বনি-কৌশানির সম্পর্কে? সেই প্রশ্ন নিয়েই ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে যোগাযোগ করা হয় নায়কের সঙ্গে। প্রশ্ন শুনেই নাকি আকাশ থেকে পড়েন বনি। ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে যে এমন আলোচনা হতে পারে সেটা নাকি তিনি ভাবতেই পারছেন না। বনি বলেন, ‘এসব আলোচনার জন্যই আমাদের ইন্ডাস্ট্রি আর বড় হবে না। কোনো দিন কারও ভাল দেখতে পারে না। এমনটাও যে কথা হতে পারে আমি ভাবতেই পারছি না। যে দিন ‘কিলবিল সোসাইটি’র প্রিমিয়ার ছিল সেই দিন আমার ওড়িয়া ছবিরও বিশেষ স্ক্রিনিং ছিল। আমি উড়িষ্যাতে ছিলাম তাই আসতে পারিনি। কৌশানির অভিনয় দর্শকের ভাল লাগছে, তা শুনে সবচেয়ে বেশি আনন্দিত আমি।’
নায়ক জানান, সম্প্রতি মুম্বাইয়ের একটি ওয়েব সিরিজ়ের জন্য বাঙালি অভিনেত্রীর খোঁজ চলছে। সেই কথা কানে যেতেই তিনি সঙ্গে সঙ্গে তাঁর প্রেমিকা, অর্থাৎ কৌশানির কথা ভেবে দেখার কথা বলেছেন নির্মাতাকে। বনি আরও বলেন, ‘আমি বিরক্ত এমন আলোচনায়। যদি আমাদের মধ্যে ঝামেলা হত তা হলে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করতাম না। ২০ মে আমরা সব বন্ধু মিলে বালি, ব্যাঙ্কক ঘুরতে যাচ্ছি।’ তবে এর আগেও বনি-কৌশানির সম্পর্ক ভাঙা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এমনই এক প্রিমিয়ার শো-এ এসে ক্যামেরার সামনেই নাকি যুগলের মতানৈক্য চোখে পড়েছিল সবার। সে সময় নিজেদের ঝগড়ার কথা প্রকাশ্যে স্বীকারও করেছিলেন বনি-কৌশানি। যদিও সেই সব এখন অতীত। আপাতত ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত দুজনেই।
টালিউড অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মাঝেমধ্যেই খবরের শিরোনামে উঠে আসেন। এবার আলোচিত এ নায়িকা জানিয়েছেন তিনি নাকি ৬০০০ জনকে প্রেম বিতরণ করতে চান। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনযায়ী, স্বস্তিকা মুখার্জি একবার জানিয়েছিলেন তিনি ৬ বার সম্পর্কে জড়িয়েছেন। তার এই মন্তব্য ঘিরে একশ্রেণির মানুষ নানা চর্চা শুরু করেছিলেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তাদের সেই চর্চাকে ব্যঙ্গ করে অভিনেত্রী এমন কথা বলেছেন। স্বস্তিকা বলেন, ‘৬টা নয়, আমি ৬০০টা প্রেম করেছি, আগে ভুল বলেছি। ক্যাওড়াতলা যাওয়ার আগে আমি আরও একটা শূন্য এর সঙ্গে জুড়তে চাই। এটাই আমার জীবনের উদ্দেশ্য। আমার জীবন, যদি আমার মনে হয় যে আমি ৬০০০ জন মানুষকে ভালোবাসা জ্ঞাপন করব, তাহলে বেশ করব। আমি তো বলছি না যে আমি ৬টা লোককে মারব, খুন করব, তাদের গলা চিরে রক্ত খাব বা তাদের ধর্ষণ করব বা তাদের সঙ্গে জালিয়াতি করব বা তাদেরকে কাজ করিয়ে পয়সা দেব না বা তাদের কাজ কেড়ে নেব। আমাদের আশপাশে সমাজে তো এগুলোই হচ্ছে। প্রেম করব তাতেও মানুষের সমস্যা। তাহলে যা হচ্ছে আশপাশে তাই হোক।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘ভালোবাসাটা কেন সমস্যা হবে? অবশ্য এটা নারী বলেই হয়। ছেলেরা করলে আমরা তাদের বলি, ‘হ্যাভিং অ্যা ওয়াইল্ড লাইফ।’ ভীষণ দারুণ একটা জীবন। আর মেয়েরা করলে তাদের বেশ্যা বলে। মেয়েরা ৬টা প্রেম করলে বেশ্যা। ছেলেরা ৬টা প্রেম করলে লোকে বলে, ‘ভাই এলেম আছে’। এই সমাজে আমরা বাস করছি।’
নায়িকার কথায়, ‘মানুষে যেভাবে তেড়ে এল। কারণ ৬টা সম্পর্ক মানে বিশাল একটা ভুল করে ফেলেছি আমি, একটা হওয়া উচিত ছিল। আমরা সবাই সাধু। আমার একটা সম্পর্ক হওয়া উচিত ছিল। জন্মে যার সঙ্গে প্রেম, তার সঙ্গেই বিয়ে হওয়া উচিত ছিল। তার সঙ্গেই বাকি জীবনটা বাঁচা উচিত ছিল। আমি করতে পারিনি, আমার তো একটা বড় ভুল।’
তারপর নিজের খানিক প্রশংসা করে স্বস্তিকা বলেন, ‘আমাকে যে রকম দেখতে, আমার যে রকম চেহারা, আমার যে রকম ব্যক্তিত্ব তাতে আমি ক্যাওড়াতলার স্টপেজ কালীঘাট, তার আগের স্টপ পর্যন্ত আমি প্রেম করতে চাই। প্রচুর মানুষকে ভালোবাসতে চাই। অনেক ভালোবাসা দেওয়ার আছে, আমি তা দিতে চাই। লিফলেটের মতো বিলি করতে চাই। করে খুবই ফুল-ফিলিং হয়ে আমি মরতে চাই।’
বলিউডের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অন্যতম মেধাবী অভিনেত্রী কৃতি শ্যানন। স্বল্প সময়ের ক্যারিয়ারে বেশিরভাগ ছবিতেই রোমান্টিক ছবিতে দেখা গেছে তাকে। তবে সেই বৃত্ত ভেঙে রোমান্টিক খোলস থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে যাচ্ছেন এই অভিনেত্রী। যখনই সুযোগ পেয়েছেন ভিন্ন ধরনের চরিত্রে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। এই অভিনেত্রীর কথায়, এমন অনেক চরিত্র আছে, যা পর্দায় তুলে ধরার জন্য মরিয়া হয়ে আছি। সেই অপেক্ষা খুব বেশিদিন লম্বা হলো না। খুব সহজেই নিজের ইচ্ছে পূরণ হতে যাচ্ছে তার। বলিউডের কালজয়ী সিনেমা ‘ডন’। শুরুতে অমিতাভ বচ্চন এবং পরবর্তীতে শাহরুখ খান এই ছবিতে অভিনয় করে বাজিমাত করেছেন। এবার ডনের নতুন কিস্ততে তৃতীয় প্রজন্ম হতে চলেছেন রণবীর সিং-এ খবর আগেই সবার জানা। তবে কে হবেন রণবীরের নায়িকা, এ নিয়ে এখনো জল্পনা তুঙ্গে।
শুরুতে কিয়ারা আদভানিকে এ অ্যাকশন থ্রিলারে অভিনয়ের জন্য নির্বাচন করা হয়েছিল। তবে গর্ভাবস্থার কারণে অভিনেত্রী মেগা-বাজেটের অ্যাকশন সিনেমা থেকে সরে আসেন। এরপরই জোর আলোচনা শুরু হয়, তাহলে কে হবেন রণবীরের নায়িকা। এবার জানা গেল, ‘ডন ৩’-এ অভিনয়ের জন্য কৃতি শ্যাননের সঙ্গে নির্মাতা ফারহান আখতারের কথা হয়েছে এবং কৃতি এই সিনেমায় কাজ করতে তুমুল আগ্রহী। তাই আশা করা হচ্ছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তিনি সিনেমাটিতে সাইন করবেন।
ফারহান আখতার এবং এক্সেল এন্টারটেইনমেন্টে ‘ডন ৩’-তে একজন অভিজ্ঞ অভিনেত্রীকে অভিনয়ের জন্য খুঁজছিলেন এবং কৃতিতে ‘রোমা’ চরিত্রে অভিনয় করার জন্য উপযুক্ত মনে করেছেন। ফারহান আখতার এরইমধ্যে ‘ডন ৩’-এর লোকেশন খোঁজার কাজ শুরু করেছেন। এক্ষেত্রে বেশকিছু লোকেশন তিনি খুঁজেও পেয়েছেন। শোনা যাচ্ছে, খুব শিগগিরই একটি আন্তর্জাতিক স্টান্ট দলের সাথে অ্যাকশন ব্লকে কাজ করবেন ফারহান। ‘ডন ৩’-এর শুটিং মূলত ইউরোপে হবে। স্ক্রিপ্টও লক করা হয়েছে। প্রি-প্রোডাকশনের কাজ আগামী কয়েক মাস ধরে চলবে এবং দলটি ২০২৫ সালের অক্টোবর বা নভেম্বরের মধ্যে সিনেমাটি ফ্লোরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
উপমহাদেশের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের প্রয়াণ দিবস আজ। ১৯৯২ সালের ২৩ এপ্রিল হৃদ্যন্ত্রের জটিলতায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি। চলচ্চিত্র নির্মাণের পাশাপাশি তিনি একাধারে ছিলেন চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সংগীত পরিচালক ও লেখক। সত্যজিৎ কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ ও শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি কমার্শিয়াল আর্টিস্ট হিসেবে বিজ্ঞাপন সংস্থায় যোগ দেন। এই পেশায় থাকাকালীন ‘পথের পাঁচালী’র ছোটদের সংস্করণ ‘আম আঁটির ভেঁপু’র প্রচ্ছদ আঁকতে গিয়ে তিনি ‘পথের পাঁচালী’-কে চিত্রায়িত করার সিদ্ধান্ত নেন। ঘটনাচক্রে একই বছর প্রখ্যাত ফরাসি পরিচালক জ্যঁ রেনোয়া তার ‘দ্য রিভার’ চলচ্চিত্রটির শুটিং করতে কলকাতায় আসেন। ‘দ্য রিভার’ ছবিতে রেনোয়ার সহকারীর কাজ করতে গিয়েই সম্ভবত পুরোপুরিভাবে এক চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার চিন্তা-ভাবনা শুরু করেন সত্যজিৎ। তবে লন্ডনে সফররত অবস্থায় ইতালীয় নব্য বাস্তবতাবাদী চলচ্চিত্র ‘লাদ্রি দি বিচিক্লেত্তে’ (দ্য বাইসাইকেল থিফ) দেখার পরই তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন।
সত্যজিৎ রায় ৩৭টি পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র, প্রামাণ্যচিত্র ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তার নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘পথের পাঁচালী’ (১৯৫৫) ১১টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করে, যার মধ্যে অন্যতম ছিল কান চলচ্চিত্র উৎসবে পাওয়া ‘বেস্ট হিউম্যান ডকুমেন্ট’ পুরস্কারটি। তারপর একের পর এক তিনি আমাদের উপহার দিয়েছেন ‘অপরাজিত’, ‘অপুর সংসার’, ‘পরশপাথর’, ‘জলসাঘর’, ‘তিন কন্যা’, ‘দেবী’, ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’, ‘ঘরে-বাইরে’, ‘চারুলতা’, ‘চিড়িয়াখানা’, ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’, ‘নায়ক’, ‘গুপী গাইন বাঘা বাইন’, ‘সোনার কেল্লা’, ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’, ‘গণশত্রু’, ‘শাখা-প্রশাখা’, ‘আগন্তুক’সহ ২৭টি কাহিনিচিত্র। পথের পাঁচালী, অপরাজিত ও অপুর সংসার- এই তিনটি একত্রে অপু ত্রয়ী নামে পরিচিত এবং এই চলচ্চিত্র-ত্রয়ী সত্যজিতের জীবনের শ্রেষ্ঠ কাজ হিসেবে বহুল স্বীকৃত।
বর্ণময় কর্মজীবনে তিনি বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছেন, যার মধ্যে বিখ্যাত হলো ১৯৯২ সালে পাওয়া একাডেমি সম্মানসূচক পুরস্কার (অস্কার), যা তিনি সমগ্র কর্মজীবনের স্বীকৃতি হিসেবে অর্জন করেন। তিনি এ ছাড়া ৩২টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, একটি গোল্ডেন লায়ন, দুটি রৌপ্য ভল্লুক লাভ করেন।
ভারতীয় সেলিব্রেটিদের মধ্যে এ সময়ের আলোচিত একটি নাম নোরা ফাতেহি। এরই মধ্যে বলিউডের নতুন আইটেমকন্যা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। যদিও এ তকমা তার এখন পছন্দ নয়। বরং আইটেম গানের বদলে নায়িকা হিসেবে অভিনয়ে মনোনিবেশের আভাস দিয়েছেন এ হার্টথ্রব তারকা। পাশাপাশি অভিনেত্রী ও গায়িকা হিসেবেও নিজেকে মেলে ধরছেন নোরা। একের পর এক সিনেমায় যেমন অভিনয় করছেন, তেমনি নিজের সলো গানও আনছেন প্রকাশ্যে। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী বলিউডের প্রতি গানে অভিনয়ের জন্য ২ কোটি টাকা পারিশ্রমিক নিচ্ছেন নোরা। তবে তারকাখ্যাতির এই পথটা মরোক্কান বংশোদ্ভূত নোরার জন্য খুব সহজ ছিল না। এমনকি বলিউডে কাজ করার স্বপ্ন নিয়ে তিনি যখন প্রথম ভারতে আসেন তখন এই তারকার কাছে মাত্র ৫ হাজার টাকা ছিল।
মুম্বাইয়ে তার প্রথম দিনগুলোতে চরম কষ্ট এবং প্রত্যাখ্যানের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। বেঁচে থাকার জন্য একটি হুক্কা বারে কাজ করতেন তিনি। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের সংগ্রামের কথা স্মরণ করে বলিউড লাইফকে নোরা বলেন, ‘মানুষ আমার প্রতি সদয় ছিল না। অডিশনের সময় ধমক দেওয়া, উপহাস করা এমনকি ‘তোমার দেশে ফিরে যাও’- এভাবেও আমার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। আমার জন্য হিন্দি শেখা ছিল বিশাল এক চ্যালেঞ্জ। তারা আমাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করত। এমনও হয়েছে, হতাশায় আমি রিকশায় বসে চিৎকার করতাম।’
এসব প্রতিকূলতার মধ্যেও নোরা তার কাজের প্রতি মনোযোগী ছিলেন। পারিবারিক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে তিনি সবকিছু ত্যাগ করেছিলেন। সে দিনগুলোর কথা স্মরণ করে ‘দিলবার’খ্যাত এ তারকা বলেন, ‘আমি অন্যসব মেয়ের মতো বাইরে মেলামেশা বা পার্টি করতাম না। আমার কোনো প্রেমিকও ছিল না। আমি প্রতিদিন ঘরে নিজেকে বন্দি করে রাখতাম, ভাষা শিখতাম, টিভি দেখতাম এবং অনুশীলন করতাম।’
২০১৪ সালে ‘রোর: টাইগার্স অব দ্য সুন্দরবনস’ সিনেমার মধ্য দিয়ে স্বপ্নের বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে অভিষেক করেন নোরা। কিন্তু তার সাফল্য আসে চার্টবাস্টার ‘দিলবার’ গানের মাধ্যমে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নোরা দর্শক থেকে শুরু করে ইন্ডাস্ট্রির সবার থেকে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেন।
আতঙ্কে দিন কাটছে বলিউডের বেশ কয়েকজন তারকার। গত বছরের শুরু থেকেই খুনের হুমকিতে বিপর্যস্ত বলিউড! প্রথমে বিষ্ণোই গ্যাংয়ের তরফে সলমন খানকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি আসে। এমনকি গোলাগুলি হয় ভাইজানখ্যাত সালমান খানের বাড়ির সামনেও। অক্টোবর মাসে সালমান ঘনিষ্ঠ বাবা সিদ্দিককে খুন করে ভাইজানকে খোলা হুমকি দেয় বিষ্ণোই গ্যাং। তার পরই গত নভেম্বর মাসে শাহরুখ-সালমানকে প্রাণে মেরে ফেলার জন্য মুম্বাই পুলিশের কাছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জোড়া হুমকি ফোন আসে। আবার চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে, বান্দ্রায় নিজের বাসভবনেই হামলা হয় সাইফ আলি খানের ওপর। এবার খুনের হুমকি টাইগার শ্রফকে।
বলিউড মাধ্যম সূত্রে খবর, সোমবার মুম্বাই পুলিশের ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমে আচমকাই এক ফোন আসে। যেখানে দাবি করা হয়, ২ লাখ টাকার বিনিময়ে টাইগার শ্রফকে মেরে ফেলার ‘সুপারিশ’ দেওয়া হয়েছে তাকে। এমন হুমকির ফোন আসায় ঘুম উড়ে যায় পুলিশ প্রশাসনের। কারণ গত বছরই ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমে আসা বলিউড তারকাদের উদ্দেশে ঘন ঘন হুমকি ফোন, চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছিল প্রশাসনের কপালে!
কে বা কারা বরাত দিয়েছে টাইগারকে খুনের জন্য? প্রাথমিকভাবে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ফোনটি আদতে পাঞ্জাব থেকে এসেছিল। অভিযুক্তের নাম মনীশ কুমার সুজিন্দর সিং। ৩৫ বছর বয়সি সেই ব্যক্তিই দাবি করেন, তাকে নাকি ২ লাখ টাকার অস্ত্র দিয়ে জ্যাকি শ্রফ পুত্রের খুনের বরাত দেওয়া হয়েছে। ফোন আসার পরই টাইগার শ্রফের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে জানা যায়, ওই ব্যক্তি ভুয়ো দাবি করেছেন। তবে গল্প ফেঁদে ছাড় পাননি তিনি।
সংশ্লিষ্ট ঘটনায় খর থানায় এফআইআর দায়ের হয়েছে। প্রথমে পাঞ্জাব পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় মুম্বাই পুলিশের তরফে। তারপর ভুয়ো তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য ওই ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। সূত্রের খবর, এরপরই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুম্বাই পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় ধৃতকে। মুম্বাই পুলিশের ডেপুটি কমিশনার নিমিত গোয়েল জানান, ‘একটি এফআইআর দায়ের করেছে। ইতোমধ্যেই অভিযুক্তকে আটক করা হয়েছে। এই হুমকি সম্পূর্ণ ভুয়ো, জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে ওই ব্যক্তি মনগড়া গল্প শুনিয়েছিলেন পুলিশকে।’
মন্তব্য