সর্বনিম্ন দর বা ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার পর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৬৬টি কোম্পানির বেশিরভাগের শেয়ারদর একদিনে যত কমা সম্ভব, কমেছে প্রায় ততটাই।
গত বছর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর প্রতিটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস ঠিক করে দেয়া হলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে লকডাউনের মধ্যে ৬৬টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া হয়।
বুধবার হঠাৎ করে এই সিদ্ধান্ত আসার পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে কী হয় তা নিয়ে শেয়ারধারীদের মধ্যে উদ্বেগ ছিল।
যে ভীতি ছিল, সেটাই সত্য হয়েছে। সকাল ১০টায় লেনদেনের শুরুতেই এসব কোম্পানির শেয়ারদর সর্বোচ্চ পরিমাণে কমে যায়।
আর এই বিষয়টি লকডাউন চলাকালে বাজারে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি করল। লকডাউনের আগের দিন প্রায় দুইশ পয়েন্ট সূচক কমে গেলেও লকডাউনের তিন দিনে এর চেয়ে বেশি সূচক বৃদ্ধিতে যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছিল, সেটি কার্যত ভেস্তে গেছে। নতুন করে আতঙ্ক তৈরির পর এক দিনে সূচক পড়ল ৮২ পয়েন্ট।
পুঁজিবাজারে প্রতিটি শেয়ারের দর একদিনে সর্বোচ্চ কত পরিমাণ বাড়তে বা কমতে পারে, তাকে বলা হয় সার্কিট ব্রেকার। ১০০ টাকার নিচে দাম যেগুলোর, সেগুলো সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বাড়তে বা কমতে পারে। তবে প্রতিটির দাম সর্বনিম্ন ১০ পয়সা হিসাবে বাড়ে বা কমে। একে বলে ড্রিপ। এই ড্রিপের হিসাবের পয়েন্টের হিসাবে কিছুটা কম কমতে পারে।
সাফকো স্পিনিং মিলের ফ্লোর প্রাইস ছিল ১১ টাকা ২০ টাকা। এক টাকা ১০ পয়সা দর হারিয়ে লেনদেন হয়েছে ১০ টাকা ১০ পয়সায়।
‘বি‘ ক্যাটাগরির সোনারগাঁও টেক্সটাইলের ফ্লোর প্রাইস ছিল ২৪ টাকা ৫০ পয়সা। সর্বোচ্চ দুই টাকা ৪০ পয়সা কমে দর দাঁড়িয়েছে ২২ টাকা ১০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইস উঠে যাওয়ার পর এম এল ডাইংলে শেয়ার প্রতি দর কমেছে ১০ শতাংশ। কোম্পানিটির ফ্লোর প্রাইস ছিল ৫০ টাকা। সেখানে থেকে দর কমে দাঁড়িয়েছে ৪৫ টাকায়।
এএফসি এ্যাগ্রোর ফ্লোর প্রাইস নির্ধারন করা হয়েছিল ১৭ টাকা। এক টাকা ৭০ পয়সা দাম কমে এখন দর দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ৩০ পয়সা।
সেন্ট্রাল ফার্মার সর্বনিম্ম দর নির্ধারণ করা হয়েছিল ১২ টাকা। ১০ শতাংশ কমে দর দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা ৮০ পয়সা।
নাহি অ্যালোমিনিয়ামের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৪৭ টাকা ১০ পয়সা। সেখান থেকে ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ দর কমেছে হয়েছে ৪২ টাকা ৪০ পয়সা।
মিউচ্যুয়াল ট্রান্ট ব্যাংকের ফ্লোর প্রাইস ছিল ২৪ টাকা ১০ পয়সা। ২ টাকা ৪০ পয়সা কমে দাম হয়েছে ২১ টাকা ৭০ পয়সা।
আলিফ ইন্ডাস্ট্রির শেয়ার প্রতি দর কমেছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। কোম্পানিটির ফ্লোর প্রাইস ছিল ২৬ টাকা ২০ পয়সা। সেখান থেকে দর কমে হয়েছৈ ২৩ টাকা ৬০ পয়সা।
ইয়াকিন পলিমার শেয়ার প্রতি দর কমেছে ৯ দশমিক ৯১ শতাংশ। ১১ টাকা ১০ পয়সা ফ্লোর প্রাইস থেকে দর কমে দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা।
ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টের শেয়ার প্রতি দর কমেছে ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। কোম্পানিটির ফ্লোর প্রাইস ৩৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৩৫ টাকা ৬০ পয়সায়।
সিলভো ফার্মা, কাট্টালী টেক্সটাইল, সায়হাম টেক্সটাইল, জাহিন স্পিনিং, স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সসহ সবকটি কয়েকটির দর অপরিবর্তিত থাকলেও বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে।
কী ছিল নির্দেশনায়
বুধবার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি নিয়মিত কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত হয় ৬৬ কোম্পানির ক্ষেত্রে কোনো ফ্লোর প্রাইস বা শেয়ারের সর্বনিম্ম কোনো দর থাকবে না।
এর ব্যাখ্যা হিসাবে বলা হয়, পুঁজিবাজারের প্রায় ১১০টি কোম্পানি সেগুলোর শেয়ার লেনদেন হচ্ছে না। এসব কোম্পানিতে যারা বিনিয়োগ করেছেন তারা শেয়ার বিক্রি করতে পারছেন না। সর্বনিম্ম দরে এসব কোম্পানির শেয়ার কেউ কিনতে আগ্রহী নন।
কোম্পানিগুলোকে লেনদেনে নিয়ে আসতে ফ্লোর প্রাইস বাতিল করার কথা জানানো হয়।
কেন কমল
ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধান গবেষণা কর্মকর্তা দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অনেক কোম্পানি আছে সেগুলোর ফান্ডমেন্টাল বিবেচনায় ফ্লোর প্রাইস বেশি নির্ধারিত হয়েছিল, সেগুলোর প্রতি আস্থা হয়ত কমবে।’
যখন ফ্লোর প্রাইস দেয়া হয় তখন কোম্পানির মৌলভিত্তি, ভবিষ্যত, আয় কত তা বিবেচনা না করে কেবল ২০২০ সালের ২২ মার্চের আগের পাঁচ দিনের পাঁচ দিনের গড় দাম হিসাব করা হয়।
পুঁজিবাজারে প্রায়ই বিভিন্ন লোকসানি কোম্পানি নিয়েও কারসাজি হয়।
এ কারণে বহু লোকসানি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস ভালো ও মৌলভিত্তি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইসের চেয়ে বেশি হয়ে যায়।
যেমন গত এক যুগে প্রতি বছর কমপক্ষে ১০ শতাংশ লভ্যাংশ দেয়া ন্যাশনাল ব্যাংকের ফ্লোর প্রাইস ঠিক হয় ৬ টাকা ৮০ পয়সা। কিন্তু লোকসানের কাজলে ডুবতে থাকা রেনউইক যগেশ্বরের ফ্লোর প্রাইস নির্ধারিত হয়েছে ৯০০ টাকা।
দেবব্রত কুমার বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতির কারণে মূলত বিনিয়োগকারীরা এসব কোম্পানির শেয়ারের প্রতি আগ্রহী হননি। তবে সবকটি কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে বলে যে আর বাড়বে না সেটা ভাবারও কোনো কারণ নেই।’
বিএসইসির নির্দেশনা উপেক্ষিত ডিএসইতে
ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর বিভিন্ন কোম্পানি রাইট ও বোনাস শেয়ার দেয়া হলেও ফ্লোর প্রাইস সমন্বয় করা হয়নি।
তবে গত ফেব্রুয়ারিতে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি একটি শেয়ারে দুটি বোনাস শেয়ার ঘোষণার পর বিএসইসি ঘোষণা দেয় ফ্লোর প্রাইস সমন্বয়ের।
সিদ্ধান্ত হয়, রেকর্ড ডেটে যে শেয়ারমূল্য থাকবে, সেটার সঙ্গে বোনাস ও রাইটের সমন্বয় হবে।
এই কোম্পানিটির রেকর্ড ডেটে দাম ছিল এক হাজার ৫৫৪ টাকা। সেই হিসাবে নতুন ফ্লোর প্রাইস ঠিক হয় ৫১৮ টাকা। কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ৩০ টাকা চূড়ান্ত লভ্যাংশও দিয়েছে। কিন্তু সেটি নতুন ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিবেচনায় আনা হয়নি।
কিন্তু শাহজালাল ব্যাংকের ক্ষেত্রে এই নিয়ম মানা হয়নি। কোম্পানিটি যে ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছে, সেটার পাশাপাশি শেয়ার প্রতি যে ৭০ পয়সা নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে, সেটিও হিসাব করা হয়েছে নতুন ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণের ক্ষেত্রে।
মার্কেন্টাইলে ব্যাংকের ক্ষেত্রে ঘটেছে আরও বিস্ময়কর ঘটনা। নির্দেশনা অনুযায়ী নতুন ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণই করা হয়নি।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নির্দেশনার কথা জেনে যারা দুটি ব্যাংকের শেয়ার কিনেছেন, তারা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। আর এ বিষয়ে বিএসইসির নিরবতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
আরও পড়ুন:প্রচ্ছায়া লিমিটেডের আট পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
দেশ ত্যাগে যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে তারা হচ্ছেন: প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক বুশরা সিদ্দিক, শেহতাজ মুন্নাসী খান, শহিদ উদ্দিন খান, শাহিন সিদ্দিক, শফিক আহমেদ শফিক, পারিজা পাইনাজ খান, নওরিন তাসমিয়া সিদ্দিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা আনজুম।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এই আদেশ দেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা ও তাঁর ছোট বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকী ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের নামে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্ত অভিযোগ অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সাত সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।
প্রচ্ছায়া লিমিটেড নামীয় প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারহোল্ডারগণ যাতে সপরিবারে গোপনে দেশ ত্যাগ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি দেশত্যাগ করে বিদেশে পালিয়ে গেলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র প্রাপ্তিতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে। তাছাড়া সার্বিক অনুসন্ধানকাজে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ সমূহ ক্ষতির কারণ রয়েছে। এজন্য অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ যাত্রা রোধে আদালতের আদেশ দেয়া একান্ত প্রয়োজন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
কক্সবাজার হয়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ‘মানবিক করিডোর’ স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ কিংবা অন্যকোনো সংস্থার সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ইউএনবিকে জানান, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে তথাকথিত ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে কোনো আলোচনা করেনি সরকার।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান হলো— যদি জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইনে মানবিক সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়, তবে বাংলাদেশ সেক্ষেত্রে যৌক্তিক সহায়তা দিতে প্রস্তুত।’
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) তথ্যমতে, রাখাইন রাজ্যে বর্তমানে চরম মানবিক সংকট বিদ্যমান।
শফিকুল আলম জানান, বাংলাদেশ সবসময়ই সংকটকালে অন্যান্য দেশকে সহায়তা করে এসেছে, সম্প্রতি মিয়ানমারে ভূমিকম্পের পরও সেখানে মানবিক সহায়তা পাঠানো হয়েছে।
রাখাইন রাজ্যে মানবিক সংকট অব্যাহত থাকলে তা বাংলাদেশে নতুন করে বাস্তুচ্যুত মানুষের ঢল নামার কারণ হতে পারে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রেস সচিব।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, জাতিসংঘের দেওয়া মানবিক ত্রাণ সহায়তা রাখাইনকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করবে এবং শরণার্থীদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করবে।’
শফিকুল আলম জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাখাইনে সহায়তা পৌঁছানোর একমাত্র কার্যকর রুট হচ্ছে বাংলাদেশ। এ পথে ত্রাণ পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে যৌক্তিক সহায়তা দিতে সম্মত।
তবে রাখাইনে মানবিক সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। যথাসময়ে এ বিষয়ে দেশের সংশ্লিষ্ট স্বত্বভোগীদের (স্টকহোল্ডার) সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’
রাখাইন রাজ্যে যোগাযোগের জন্য মানবিক করিডর দেওয়ার বিষয়ে একটি বড় শক্তির সংশ্লিষ্টতা নিয়ে যা বলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং কল্পিত অপপ্রচার বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
প্রেস সচিব বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে ধারাবাহিক মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণা চালানো হয়েছে, এটি তারই অংশ। এ ধরনের অপপ্রচার আমরা আগেও দেখেছি, এখনো চলছে।
মেরাদিয়া বাজারের পূর্ব পার্শ্বে খালপাড়ের খালি জায়গায় অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর ইজারা বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছে হাইকোর্ট।
সেই সঙ্গে ওই বিজ্ঞপ্তি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেছে উচ্চ আদালত।
এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেয়।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী লিটন আহমেদ। তাকে সহায়তা করেন আইনজীবী জহিরুল ইসললাম।
আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান রিটকারী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার খুররাম শাহ মুরাদ। তিনি বলেন, ‘যে স্থানকে চিহ্নিত করে এই হাট বসানোর বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে তা একেবারেই অনভিপ্রেত। কারণ ওই স্থানে হাট বসানোর কোন পর্যাপ্ত খালি জায়গা নেই। এই হাট বসানোর ইজারা গৃহীত হলে ঈদ-উল আযহার সময় আবাসিক এলাকার মানুষের বাসা-বাড়ির গেটের সামনে পশুর হাট বসে যায়। ফলে জনভোগান্তির সৃষ্টি হয়। এছাড়া পশুর হাট বসানো হলে আবাসিক এলাকার কোন মানুষ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে পারে না। সবকিছু বিবেচনা করে হাইকোর্ট মেরাদিয়ায় পশুর হাট বসানোর ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে।’
গত ২১ এপ্রিল ১১টি স্থানকে চিহ্নিত করে অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর লক্ষ্যে ইজারা বিজ্ঞপ্তি জারি করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। এই বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন লিগ্যাল রাইটস এর পক্ষে সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন সিকদার।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার জন্য নাগরিক প্ল্যাটফর্ম (এসডিজি) এর আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা হবে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মূল বিষয়।
মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) অফিসে ‘বাংলাদেশে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা: বর্তমান পরিস্থিতি এবং সংস্কার চিন্তাভাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রতি বৈষম্যমূলক নীতির পরিবর্তন করা উচিত। এই ক্ষেত্রগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। এর পাশাপাশি, আমাদের মানব সম্পদের বিকাশ করতে হবে।’
কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য সিটিজেনস প্ল্যাটফর্ম ফর এসডিজি’স এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা এবং সম্ভাব্য নীতিগত পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়ে জাতীয় উদ্যোগসমূহকে ত্বরান্বিত করার জন্য এই মিডিয়া ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সিপিডি’র সম্মানিত ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সরকারকে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার প্রতি যথাযথ মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি এখন বিভিন্ন দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে। দুর্ভাগ্যবশত, নীতিনির্ধারকরা তাদের কথা যথাযথভাবে শুনছেন না এবং তাদের বিষয়গুলো পর্যাপ্ত মিডিয়া কভারেজ পাচ্ছে না।’
গত বছর সিপিডি নাগরিক প্ল্যাটফর্মের সহযোগিতায় তৃণমূল পর্যায়ে একটি সামাজিক নিরীক্ষা পরিচালনা করে। এই উদ্যোগে অংশগ্রহণ করেন বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী, প্রশিক্ষণার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, সরকারি কর্মকর্তা এবং কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য স্টেকহোল্ডাররা।
গবেষণায় কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাদান পদ্ধতি, তাদের কার্যকারিতা, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে কারিগরি শিক্ষা সনদের গ্রহণযোগ্যতা এবং শিক্ষার্থী ও প্রশিক্ষণার্থীদের প্রতি নেতিবাচক সামাজিক মনোভাব সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
এই গবেষণার ভিত্তিতে পরবর্তীতে ২ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে ঢাকায় একটি জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস পুলিশ ও জনগণের মধ্যে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে তা কমিয়ে এনে মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পুলিশ সপ্তাহ-২০২৫ উদ্বোধনকালে প্রধান উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচারী শাসনের অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা জনরোষের শিকার হয়েছেন।’
পুলিশ জনগণের বন্ধু উল্লেখ করে প্রফেসর ইউনূস বলেন, পুলিশ বাহিনীকে সেই ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের কথা পুনর্ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশ সদস্যদেরকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।’
ফেনীর পরশুরামে মুহুরি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অপরাধে আওয়ামী লীগ নেতা মিরু চৌধুরীকে প্রধান আসামি করে এবং নাগরিক কমিটির সংগঠক ইমাম হোসেন সজীবসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাত আরও ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামি করা হয়।
পরশুরাম পৌর ভ‚মি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা মো. ইয়াছিন বাদী হয়ে সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাতে মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ (সংশোধিত) ৪/৫/১১/১৫ ধারায় এই মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজহারে বলা হয়, মুহুরী নদীর বিলোনীয়া খেয়াঘাটের ১০০ গজ দক্ষিণ থেকে বাউরখুমা মৌজার দক্ষিণ সীমানা পর্যন্ত মুহুরি নদীর বালুমহাল (প্রথম অংশ) ১৪৩০ বাংলা সনে পূর্ণ মেয়াদে শাপলা টেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী মিরু চৌধুরীর নামে ইজারা দেওয়া হয়েছিল। ইজারাদারদেরকে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে পরিবেশগত ও অবস্থানগত ছাড়পত্র জমা দেবেন এই শর্তে মিরু চৌধুরীকে ইজারা চুক্তি সম্পাদন করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে মিরু চৌধুরী ছাড়পত্র জমা না দেওয়ায় তাকে ওই বালুমহালের কার্যাদেশ ও দখল দেয়নি জেলা প্রশাসক। এরপর ১৪৩২ বাংলা সনে ইজারার লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বান করা হলেও অদ্যাবধি চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ১৪৩১ বাংলা সনের শুরু হতে অদ্যাবধি ওই বালুমহাল ইজারাবিহীন অবস্থায় আছে।
বালু মহালের কার্যাদেশ ও দখল প্রদান না করা সত্ত্বেও আইন অমান্য করে মিরু চৌধুরী ইমাম হোসেন সজিবের সঙ্গে একটি চুক্তিপত্রের মাধ্যমে বালুমহাল সাবলীজ দেয়, যা সম্পূর্ণ বেআইনি।
এরপর সজিবের নেতৃত্বে চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত মুহুরি নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে বেআইনিভাবে দুই কোটি পচিশ লাখ টাকার নয় লাখ ঘনফুট বালু অবৈধভাবে উত্তোলন করে নদীর উভয় পাড়ে বিক্রির উদ্দেশে স্তুপ করে রাখে। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদীর তলদেশ থেকে মাটি সরে গিয়ে নদীর পাড় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে এবং নদীর পাড়ের জমি ও বসতঘর ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আসামিরা হলেন- আওয়ামী লীগ নেতা মীর আহমেদ চৌধুরী (৬০), মো. ইমাম হোসেন সজীব (৩৫), হাবিব উল্যা (৫০), পিংকু ভুঞা (৩৮), মো. হারুন ভুঞা (৩৫), ছায়দুল হক হাজারী (৩৫), আলী হোসেন (৪০), আবদুল মুনাফ (৪৮), আবদুল কাদের (৩৭) আবদুস সামাদ (৩৪), মো. মোস্তফা আবদুল হামিদ (৩৩), মো. রিপন (৪০), মো. এমরান (৪২), স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মনসুর (২৮), মির্জানগর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য মো. ফারুক (২৭), মো. শিশু (৩৮), মির্জানগর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক মো. শাহজালাল (৩৩), মো. ছিদ্দিক (৩৫), মো. আলম (২৯), মোহাম্মদ বাবুল (২৯), মনছুর আলী (৫০), মাহবুল হক (৫১), উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বাহার সর্দার (৪৫), বাবুল মিয়া (৩৯), আবদুর রহিম (৪০), হারেছ মিয়া (৩৮), জাহিদুল করিম (৩৯), মোহাম্মদ বাবু (২৫), মোহাম্মদ কাইয়ুম (৩৬), নুরুন্নবী (হোনা মিয়া) (৪৫), আমির হোসেন (৪২), জাকির হোসেন (৪০),
পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো, নুরুল হাকিম মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশ থেকে বছরের প্রথম হজ ফ্লাইট (ইএ-৩৫০১) সৌদি আরবের জেদ্দার কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হজ টার্মিনালে পৌঁছেছে।
আজ সকাল ৭.৩০ টায় ৪১৪ জন হজযাত্রী নিয়ে ফ্লাইটটি কিং আবদুল আজিজ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে।
সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ কথা জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দেলওয়ার হোসেন বিমানবন্দরে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের স্বাগত জানান। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেদ্দায় বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল মিয়া মো. মাইনুল কবির ও বাংলাদেশ হজ মিশনের কাউন্সিলর মো. জহিরুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তা।
বিমানবন্দরে বাংলাদেশি হজযাত্রীদের স্বাগত জানাতে আরও উপস্থিত ছিলেন সৌদি সিভিল এভিয়েশনের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মাজেন জাওয়াহার, হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের পরিচালক সালমান আল বেলাবী ও মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আগত হজযাত্রীদের শুভকামনা জানিয়ে বলেন, যে কোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ দূতাবাস, কনস্যুলেট ও বাংলাদেশ হজ মিশন সবসময় হজযাত্রীদের পাশে রয়েছে। সুন্দর ব্যবস্থাপনা ও উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়ে বাংলাদেশ থেকে আগত হজযাত্রীরা তাঁদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১শ’ জন পবিত্র হজ পালন করবেন ।
মন্তব্য