দেশে প্রতিবছর অসংখ্য শিশু হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে জন্ম নেয়। কিছু ক্ষেত্রে এর চিকিৎসা জটিল না হলেও বেশির ভাগ সময় ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে এসব শিশুর। অস্ত্রোপচার সফল না হওয়ায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, শিশুর জন্মগত হৃদযন্ত্রের ত্রুটির প্রধান কারণ ডাউন সিনড্রোম। প্রতি ৫০০ থেকে ৭০০ শিশুর মধ্যে একটি ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুর জন্ম হয়। আর ডাউন সিনড্রোম থাকলে ৫০ থেকে ৫৫ শতাংশ শিশুর জন্মগত হৃদরোগ থাকে।
ডাউন সিনড্রোম ছাড়াও প্রতি হাজারে ১ জন শিশুর জন্মগত হৃদরোগ হতে পারে। এর কারণ হিসেবে মায়েদের পূর্ব ইতিহাস যেমন আগে গর্ভে বাচ্চা মারা যাওয়া বা জন্মের পরেই নবজাতকের মৃত্যু, মায়ের উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) তথ্য অনুযায়ী, “ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্তদের একটি অতিরিক্ত ক্রোমোজোম থাকে। ক্রোমোজোম হলো শরীরে জিনের ছোট ‘প্যাকেজ’। এটি গর্ভাবস্থায় এবং জন্মের পরে শিশুর শরীর কীভাবে গঠিত হবে ও কাজ করবে তা নির্ধারণ করে।
“সাধারণত একটি শিশু ৪৬টি ক্রোমোজোম নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুদের এই ক্রোমোজোমের একটির একটি অতিরিক্ত অনুলিপি থাকে। এই অতিরিক্ত অনুলিপিটি শিশুর শরীর ও মস্তিষ্কের বিকাশ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি তার জন্য মানসিক ও শারীরিক চ্যালেঞ্জের কারণ হতে পারে।”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক (অবস্ ও গাইনি বিভাগ) রেজাউল করিম কাজল নিউজবাংলাকে বলেন, 'যেসব ভ্রূণের ডিএনএজনিত বা ক্রোমোজমে ত্রুটি থাকে তাদের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সঙ্গে হার্টেরও ত্রুটি থাকতে পারে।
‘হার্টের ত্রুটির সঙ্গে নবজাতকের বেঁচে থাকা বা না থাকার একটি সম্পর্ক আছে। তা ছাড়া হার্টের ত্রুটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করা শিশুর চিকিৎসা খুব ব্যয়বহুল। তাই জন্মের আগেই হার্টের বড় রকম ত্রুটি আছে কি না, জানা জরুরি।’
ডা. কাজল বলেন, ‘আমরা যে ডিএনএ টেস্ট করি অর্থাৎ ক্রোমোজোম পরীক্ষা সেটা সাধারণত গর্ভধারণের ১১ থেকে ১৪ সপ্তাহে করা হয়। এ সময় ভ্রূণের আকার এক থেকে দেড় ইঞ্চি হয়। ভ্রূণের ঘাড়ের দিকে একটা তরল পদার্থের অংশ থাকে। এটা আমরা মেপে দেখি। ওই সময় মায়ের রক্তের হরমোনও পরীক্ষা করা হয়।
'আল্ট্রাসনোগ্রাফি, হরমোন এই পরীক্ষাগুলোর মাধ্যমে বাচ্চার ডাউন সিনড্রোম আছে কি না, সেটা দেখা হয়। আমরা দেখেছি ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্তদের শতকরা ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে হার্টের ত্রুটি থাকে। এ কারণেই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায় অথবা পেটেই মারা যায়। আবার সন্তান জন্মের পরেও মারা যায়। আর যারা বেঁচে থাকে তাদের বড় ধরনের অপারেশন দরকার পড়ে।’
বাংলাদেশে গড়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ জন ডাউন সিনড্রোম আক্রান্ত শিশুর জন্ম হয় জানিয়ে ডা. কাজল বলেন, ‘এখন পর্যন্ত দেশে আড়াই লাখ ডাউন শিশু আছে। এরা সমাজে প্রতিবন্ধী শিশু হিসেবে বেঁচে থাকে।’
তিনি জানান, ভ্রূণের ২০ থেকে ২৪ সপ্তাহের মধ্যে হৃদযন্ত্রের ত্রুটি দেখার জন্য ফিটাল ইকো কার্ডিয়াম পরীক্ষা রয়েছে। এর মাধ্যমেও কোনো সমস্যা থাকলে তা নির্ধারণ করা সম্ভব। এ সময় অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ত্রুটি থাকলে সেটাও বোঝা যায়।
প্রতিকার কী?
হৃদযন্ত্রের জন্মগত ত্রুটির চিকিৎসা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জটিল ও ব্যয়বহুল। তবে ছোট জটিলতা চিকিৎসার মাধ্যমে সহজেই নিরাময় করা সম্ভব।
ডা. রেজাউল করিম কাজল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হার্টের গঠনগত ত্রুটি সাধারণত দুই ধরনের হয়। এক. যেসব ত্রুটির চিকিৎসা নেই। অপারেশন করলেও তা ঠিক হবে না।
‘যেমন হার্ট ঠিকমতো তৈরিই হয়নি। হার্টের চারটা চেম্বার থাকে। দুইটা অলিন্দ, দুইটা নিলয়। দেখা গেল এর যেকোনো একটি বা দুটি তৈরি হয়নি। এদের অপারেশন করে বাঁচানো যায় না। তা ছাড়া আরও ত্রুটি আছে যেমন হার্টের ছিদ্র বা ভালভ নষ্ট। এগুলোর চিকিৎসা অনেক ব্যয়বহুল। আবার সফল না-ও হতে পারে।’
তিনি বলেন, 'আর ছোট ছোট ত্রুটিগুলো সাধারণত ঠিক হয়ে যায়। এগুলোর চমৎকার চিকিৎসা আছে। সেটা মায়ের গর্ভ থেকে আগেই নির্ণয় করা যায়। সে ক্ষেত্রে শিশুটি কোথায় জন্মগ্রহণ করবে সেটা আগে থেকেই ঠিক করতে হয়। যেমন নবজাতকের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র অর্থাৎ এনআইসিইউ রয়েছে। এ ধরনের ব্যবস্থা থাকা হাসপাতালে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শিশুকে চিকিৎসা দিয়ে থাকেন।’
হৃদযন্ত্রের নিরাময়যোগ্য ত্রুটির বর্ণনা দিয়ে তিনি বরেন, ‘যেমন দুটি নিলয়ের মাঝে একটি ছিদ্র বা দুটি অলিন্দের মাঝে একটি ছিদ্র। এগুলো অপারেশন করে একেবারে ঠিক করা যায়। তবে গর্ভাবস্থায় হার্টের কোনো চিকিৎসা করা যায় না। সবগুলোই জন্মের পরে করতে হয়।
‘এ ধরনের শিশুকে বিশেষায়িত হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করাতে হবে, যেখানে শিশু হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ আছেন। তিনি জন্মের পর যে ওষুধ লাগবে সেগুলো দেবেন বা প্রয়োজনীয় অপারেশন করবেন।’
ডা. কাজল বলেন, 'আমরা যদি নবজাতকের মৃত্যুহার কমাতে চাই তাহলে আগে থেকে ত্রুটি নির্ণয় করতে হবে। যদি জানতে পারি এই ত্রুটির কোনো চিকিৎসা নেই তাহলে সেই গর্ভাবস্থা চালিয়ে নেবেন কি না, সেটা মা-বাবার ওপর ছেড়ে দিতে হয়।’
ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতালের শিশু হৃদরোগ বিভাগের প্রধান অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নুরুন্নাহার ফাতেমা নিউজবাংলাকে বলেন, 'অনেকেই ফিটাল ইকো করেন, তখন হার্টের সমস্যা থাকলে ব্যবস্থা নেয়া যায়।
‘মায়ের পেটে থাকা অবস্থায় শিশুর হার্টের সে রকম কোনো চিকিৎসা নেই। তবে প্রতিরোধ হিসেবে আগে থেকে ব্যবস্থা নিতে হবে। যেমন গর্ভবতীকে ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট দেয়া হয়। যতগুলো ভ্যাকসিন দেয়া দরকার সেগুলো যদি আগে থেকে দেয়া যায় তাহলে কিছু কিছু রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
‘আমাদের দেশে অনেক বাচ্চার জন্মগত হার্ট ব্লক দেখা যায়। তাদের হার্টবিট ৪০ থেকে ৫০ হয়। এদের কমপ্লিট হার্ট ব্লক নামে একটি রোগ থাকে। সে ক্ষেত্রে হার্টবিট বাড়ানোর জন্য মাকে কিছু মেডিসিন দেয়া হয়। তবে হার্টে অনেক ছিদ্র বা ব্লক আছে এ রকম ক্ষেত্রে বা ভালভ চিকন আছে সে ক্ষেত্রে শিশুর চিকিৎসা আমাদের দেশে নেই। এমনকি এশিয়ার কোথাও নেই। আমেরিকা ও ইউরোপের দুই-একটা দেশে গর্ভাবস্থায় এই চিকিৎসাগুলো হয়।’
তিনি বলেন, 'অনেক বাচ্চার ডাউন সিনড্রোম থাকে। অর্থাৎ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ত্রুটি আগে থেকে বোঝা যায়। সেসব বাচ্চা স্বাভাবিক হয়ে জন্ম নেয় না বা ৪০ থেকে ৫০ বছরে পর্যন্ত বাঁচতে পারে। তখন মা-বাবাকে সাজেশন দেয়া যেতে পারে তারা বাচ্চাটা রাখবেন কি না।
‘এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তাদেরই নিতে হবে। বাচ্চার সঙ্গে মা-বাবার আবেগ জড়িত থাকে বলে আমরা তাদের ওপরেই সিদ্ধান্তটি ছেড়ে দিই।’
আরও পড়ুন:রাজধানী ঢাকায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মহাকাশ অভিযাত্রার গল্প শোনালেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)-এর প্রধান নভোচারী জোশেফ এম আকাবা। কথা ও গল্পে শিক্ষার্থীদের সামনে মহাশূন্যের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন এই যশস্বী মহাকাশচারী।
রোববার ‘ফ্রম আর্থ টু অরবিট: অ্যান অ্যাস্ট্রোনাটস টেল’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অসীম শূন্যতায় কাটানো সময়ের গল্প ও চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন নাসার এই নভোচারী।
জোশেফ এম আকাবা একজন অভিজ্ঞ মহাকাশচারী, যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা এবং একজন শিক্ষক। তিনি অনেক বার মহাকাশ মিশনে অংশ নিয়েছেন। তিনি এখন পর্যন্ত মোট ৩০৬ দিন মহাকাশে কাটিয়েছেন। এছাড়াও তিনি দুবার মহাকাশে হাঁটার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।
‘ফ্রম আর্থ টু অরবিট: অ্যান অ্যাস্ট্রোনাটস টেল’ অনুষ্ঠানটি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নাসার একজন দক্ষ মহাকাশচারীর বাস্তব অভিজ্ঞতা জানার সুযোগ করে দিয়েছে। এই অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা নাসার বিভিন্ন মিশন সম্পর্কে ধারণা লাভের সুযোগ পেয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে জোশেফ এম আকাবা তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, মহাকাশে থাকাকালীন বিভিন্ন বিষয়, মহাকাশ অনুসন্ধানের বৈজ্ঞানিক বিস্ময়সহ এসটিইএম (সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাথমেটিক্স) শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ ডাটা অ্যান্ড সায়েন্সেস-এর ডিন প্রফেসর মাহবুবুল আলম মজুমদার। আরও বক্তব্য দেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পাবলিক ডিপ্লোমেসি সেকশনের পাবলিক এনগেজমেন্ট-এর ডিরেক্টর স্কট ই. হার্টম্যান।
নাসার প্রধান মহাকাশচারী তার বক্তব্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘অনেকেই আমাকে বলেছেন যে আমি তাদের অনুপ্রেরণা। কিন্তু আপনাদের মাঝে আসতে পেরে আমি নিজেই অনুপ্রাণিত বোধ করছি। আপনাদের জ্ঞান অর্জনের তৃষ্ণা আমাকে অভিভূত করেছে।’
নভোচারী আকাবা তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীদেরকে লেখাপড়ায় সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিতে বলেন। তিনি বলেন, ‘একমাত্র লেখাপড়ার মাধ্যমেই নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করা সম্ভব।’
মহাকাশ গবেষণায় আগ্রহীদের তিনি নাসার ওয়েবসাইট ভিজিটের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘যারা মহাকাশচারী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তাদের উচিত নাসার ওয়েবসাইটটা ফলো করা। কারণ সেখানে অসংখ্য সুযোগ এবং পরামর্শ রয়েছে।’
জোশেফ আকাবা শিক্ষার্থীদের ভুলকে ভয় না পাওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘ভুলকে ভয় পেলে চলবে না। ভুল মানুষকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়।’
তিনি শিক্ষার্থীদেরকে নিজ জীবন ও চ্যালেঞ্জের গল্প বলেন এবং কীভাবে সেই অভিজ্ঞতাগুলো তাকে মহাকাশচারী হওয়ার স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করেছে সেসব তুলে ধরেন।
সুন্দর এই পৃথিবীকে আরও বাসযোগ্য করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে নাসার প্রধান নভোচারী বলেন, ‘আমাদের এই পৃথিবীটা অনেক সুন্দর। মহাশূন্যে একটিমাত্র ভুল পদক্ষেপ মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। আমাদের পৃথিবীতে তেমনটা হয় না। আমার মনে হয় না এখন পর্যন্ত আর কোনো গ্রহ মানুষের বসবাস উপযোগী। তাই এই পৃথিবীটাকে বাঁচিয়ে রাখার ক্ষেত্রে আমাদের আরও বেশি যত্নশীল হওয়া উচিত।’
নাসার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আকাবা বলেন, ‘নাসার লক্ষ্য হলো অজানা সীমানার বাইরে অনুসন্ধান চালানো। একসঙ্গে কাজ করলে আমরা অনেকদূর যেতে পারব। এজন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
মহাকাশ নিয়ে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের কৌতূহল আর উচ্ছ্বাস দেখে আকাবা বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, অচিরেই এই শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে কেউ নাসার আর্টেমিস স্কোয়াডে অংশ নেবেন।’
পুরো অনুষ্ঠানে আকাবা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অফিস অফ কমিউনিকেশন্স-এর ডিরেক্টর খায়রুল বাশার।
অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার। তিনি তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের মহাকাশ গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি মহাকাশচারীদের তালিকায় একদিন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের নাম থাকবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পাবলিক ডিপ্লোমেসি সেকশনের পাবলিক এনগেজমেন্ট-এর ডিরেক্টর স্কট ই. হার্টম্যান, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বিএসআরএম স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ডিন প্রফেসর আরশাদ এম চৌধুরী, ডিপার্টমেন্ট অফ কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর চেয়ারপারসন প্রফেসর সাদিয়া হামিদ কাজীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ।
আরও পড়ুন:বন্য খেজুর থেকে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ভিনেগার উৎপাদনের দাবি করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান মজুমদার ও তার গবেষক দল।
বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার তৈরি বাংলাদেশের খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের জন্য একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন এ অধ্যাপক।
গবেষক আনিছুর রহমান বলেন, ‘বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদনে প্রক্রিয়াকরণের জন্য গাজন প্রক্রিয়াটি পরিবেশবান্ধব। স্থানীয় কৃষিসম্পদ কাজে লাগিয়ে এবং অপচয় কমিয়ে এ পদ্ধতি খাদ্য উৎপাদনের কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতেও সহায়ক হতে পারে। গবেষণাটি বাংলাদেশের বৃহত্তর টেকসই উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।’
উৎপাদিত ভিনেগারটির দেশের বাজারে প্রভাব সম্পর্কে অধ্যাপক আনিছুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে এই গবেষণার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ভিনেগার উৎপাদন কেবল খাদ্য ও পানীয় হিসেবে ব্যবহারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি প্যাকেজিং, কসমেটিক ও ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পেও ব্যবহৃত হতে পারে।
‘বিশেষ করে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের কাছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পুষ্টিকর ভিনেগারের চাহিদা বাড়ছে, যা বাজারে এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবে।’
বাংলাদেশে বিগত কয়েক বছরে খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য স্থানীয় কৃষি সম্পদের টেকসই ব্যবহারের ওপর বাড়তি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক আনিছুর বলেন, ‘বাংলাদেশে বন্য খেজুর ইদানীং ব্যাপকভাবে পাওয়া যাচ্ছে। এটি বেশ সস্তা ও স্থানীয়ভাবে সহজলভ্য।
‘এই খেজুর গাছ সাধারণত গ্রামীণ এলাকায় এবং রাস্তার পাশের জমিতে পাওয়া যায়, তবে নানা পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ হওয়ার পরও এই বন্য খেজুর দেশের প্রেক্ষাপটে অনেকটাই অব্যবহৃত একটি সম্পদ।’
গবেষণা পদ্ধতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আনিছুর বলেন, ‘বন্য খেজুরের রস ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়া মাধ্যমে ভিনেগারে পরিণত করা হয়েছে। এ গবেষণায় এক ধরনের ইস্ট ব্যবহার করে ওই রসে অ্যালকোহল তৈরি করা হয় এবং পরে অ্যাসিটোব্যাক্টর প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া দিয়ে অ্যালকোহলকে অ্যাসিটিক অ্যাসিডে রূপান্তর করা হয়।’
গবেষক আরও বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে যে, রসের ঘনত্ব যত বেশি হয়, তত বেশি অ্যালকোহল ও অ্যাসিডিটি বৃদ্ধি পায়। বেশি ঘনত্বের রসটি সবচেয়ে ভালো পুষ্টিগুণ, অ্যাসিডিটি ও ম্যাক্রো মিনারেলস (পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম) সমৃদ্ধ হয়। তাই এটি স্বাস্থ্য সচেতন ভোক্তাদের জন্য একটি আকর্ষণীয় পণ্যও বটে।’
গবেষণাটি বিশ্ববিখ্যাত প্রকাশনা এলসভিয়ারের নামী সাময়িকী অ্যাপ্লায়েড ফুড রিসার্চে সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে।
ভিনেগার তৈরির এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও মাঠ পর্যায়ে সফলতা সম্পর্কে এ অধ্যাপক বলেন, ‘এই গবেষণা স্থানীয় কৃষকদের জন্য একটি নতুন আয় সৃষ্টির পথ খুলতে পারে। একদিকে খেজুর থেকে তৈরি ভিনেগারের উচ্চমান এবং পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হওয়ায় বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের স্থানীয় কৃষিপণ্যের চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করবে।’
অধ্যাপক আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে বাকৃবি, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) আরও ছয় জন গবেষক এই প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন। বাকৃবি থেকে গবেষক দলে রয়েছেন ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলিম, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. পলি কর্মকার এবং ওই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্নকারী শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা ও আ ন ম ইফতেখার আলম।
এ ছাড়া সিকৃবির খাদ্য প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ফাহাদ জুবায়ের এবং ডুয়েটের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক লোপা আনসারী গবেষক দলে যুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন:মানব বসতির পৃথিবী, সূর্য ও বৃহস্পতি গ্রহ একই সরলরেখায় অবস্থান করবে আগামীকাল শনিবার। এদিন সারারাত বৃহস্পতি আকাশে দৃশ্যমান থাকবে। এই অবস্থানকে বলা হয় ‘জুপিটার্স অপজিশন’। এমন বিরল মহাজাগতিক ঘটনা সৌরজগতের রহস্য ও সৌন্দর্যের প্রতি মানুষের কৌতূহলকে বাড়িয়ে দেয়।
ফোর্বস ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, শনিবার বৃহস্পতিকে দেখার জন্য এই সময়ের আগে-পরে এক মাস ধরে এই বিস্ময়কর ঘটনা পর্যবেক্ষণের সুযোগ থাকবে। এমনকি একটি ছোট টেলিস্কোপ বা সাধারণ দূরবীন দিয়েও এই গ্রহের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, শুক্রবার পৃথিবী থেকে প্রায় ৬১১ মিলিয়ন কিলোমিটার বা ৩৮০ মিলিয়ন মাইল দূরে থাকবে বৃহস্পতি। এই দূরত্বে বৃহস্পতিকে বেশ উজ্জ্বল দেখাবে।
প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে বিশ্বের বৃহত্তম প্রবালের সন্ধান পেয়েছেন একদল গবেষক। সলোমন দ্বীপপুঞ্জের কাছে তিনশ’ বছরেরও বেশি পুরনো প্রবালটি খুঁজে পান ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ভিডিওগ্রাফার মানু সান ফেলিক্স। দৈর্ঘ্যে ১১১ ফুট ও প্রস্থে ১০৪ ফুট প্রবালটির আকার একটি পূর্ণবয়স্ক নীল তিমির চেয়েও বড়।
ধারণা করা হচ্ছে, এক বিলিয়নের বেশি ক্ষুদ্র প্রাণী ও জলজ অণুজীবের উপস্থিতি রয়েছে প্রবালটিতে। এর মাধ্যমে জলজ প্রকৃতি নিয়ে গবেষণার নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
তিনশ’ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে লোকচক্ষুর আড়ালে ছিল এই বিশাল প্রবাল। সদ্য আবিষ্কৃত এই জলজ বিস্ময়টি এখন পর্যন্ত জানা বিশ্বের সবচেয়ে বড় একক প্রবাল বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।
কোরাল বা প্রবাল এক ধরনের সামুদ্রিক অমেরুদণ্ডী প্রাণী। বছরের পর বছর ধরে একসঙ্গে থাকতে থাকতে, পুঞ্জিভূত হয়ে গঠিত হয় বিশাল প্রবাল প্রাচীর। সঙ্গে যুক্ত হয় শৈবাল, মৃত জলজ প্রাণীর দেহাবশেষ ও পলিপ। সব মিলিয়ে জীবন্ত প্রাণীর তৈরি এক আশ্চর্য স্থাপনা এই প্রবাল।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সামুদ্রিক জীব-বৈচিত্র্য। আজারবাইজানের বাকুতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৯ এর মধ্যেই, সমুদ্র তলদেশের অবস্থা পর্যালোচনা করতে বৈজ্ঞানিক অভিযান চালায় ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক।
অনেকটা দৈবক্রমেই প্রবালটি আবিষ্কার করেন ন্যাট জিও’র ভিডিওগ্রাফার মানু সান ফেলিক্স। সলোমন দ্বীপপুঞ্জের কাছে স্বচ্ছ পানিতে ছেলেকে নিয়ে ডুব দেন তিনি। প্রথমে এটিকে জাহাজের ধ্বংসাবশেষ মনে করে এগিয়ে গেলেও পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর বুঝতে পারেন জীবন্ত প্রাণীদের তৈরি অসামান্য সৌন্দর্য আবিষ্কার করে ফেলেছেন তিনি।
গবেষকদের ধারণা, বিশ্বের বৃহত্তম জলজ প্রাণী নীল তিমির চেয়েও আকারে অনেকটা বড় এই প্রবাল।
এতোদিন যুক্তরাষ্ট্রের সামোয়াতে থাকা ‘বিগ মামা’ প্রবালটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবাল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে আসছিল। তবে নতুন সন্ধান পাওয়া প্রবালটি ‘বিগ মামা’র চেয়েও প্রায় তিন গুণ বড়। ৩৪ মিটার দীর্ঘ প্রবালটি এতটাই বিশাল যে ধারণা করা হচ্ছে, মহাকাশ থেকেও দেখা যাবে এটি।
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) মুনীরা সুলতানা।
এ নিয়োগ দিয়ে সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ১৯৬৫ সালের ২৬ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় আসে।
জাদুঘরটি বাংলাদেশের একমাত্র বিজ্ঞান জাদুঘর এবং জাতীয় পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
প্রোটিন নিয়ে গবেষণা করে ২০২৪ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন রসায়নবিদ।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে বুধবার জানানো হয়, এ বছর তিন গবেষকের মধ্যে একজনকে পুরস্কারের অর্ধেক এবং বাকি দুজনকে অর্ধেক দেয়া হয়েছে।
সাইটে উল্লেখ করা হয়, কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইন নিয়ে গবেষণার জন্য এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে ডেভিড বেকারকে। অন্যদিকে প্রোটিনের কাঠামো নিয়ে পূর্বাভাসের জন্য ডেমিস হ্যাসাবিস ও জন এম. জাম্পারকে এ পুরস্কারের অর্ধেক দেয়া হয়।নো হ বু এ
তিন গবেষকের মধ্যে হ্যাসাবিস ও জাম্পার জ্ঞাত প্রায় সব প্রোটিনের কাঠামো নিয়ে পূর্বাভাস দিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (এআই) সফলভাবে কাজে লাগান। অন্যদিকে ডেভিড বেকার প্রোটিনের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ জানার পাশাপাশি সম্পূর্ণ নতুন কিছু প্রোটিন উদ্ভাবন করেন।
পদার্থবিজ্ঞানে এবার নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির গবেষক জন জে. হপফিল্ড ও কানাডার টরন্টো ইউনিভার্সিটির গবেষক জেফরি ই. হিন্টন।
সুইডেনের স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিট) পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করে রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি।
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, কৃত্রিম স্নায়বিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মেশিন লার্নিংকে সক্ষম করা মৌলিক আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে জন জে. হপফিল্ড ও জেফরি ই. হিন্টনকে।
এতে উল্লেখ করা হয়, হপফিল্ড একটি কাঠামো নির্মাণ করেন, যেটি তথ্য মজুত ও পুনর্নির্মাণ করতে পারে। অন্যদিকে হিন্টন এমন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন, যা ডেটাতে স্বতন্ত্রভাবে প্রোপার্টি আবিষ্কার করতে পারে। বর্তমানে ব্যবহৃত বৃহদাকার স্নায়বিক নেটওয়ার্কের জন্য এ উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ।
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেয়া হচ্ছে ১৯০১ সাল থেকে। আজকের আগে ১১৭ জন এ পুরস্কার পান।
এ শাস্ত্রে সবচেয়ে কম ২৫ বছর বয়সে নোবেল পান লরেন্স ব্র্যাগ, যিনি ১৯১৫ সালে পুরস্কারটি পেয়েছিলেন। সবচেয়ে বেশি ৯৬ বছর বয়সে নোবেল পুরস্কার পান আর্থার অ্যাশকিন। তিনি ২০১৮ সালে পুরস্কারটি পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য