× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

স্বাস্থ্য
BMUs outpatient will be open on March 25 and April 2
google_news print-icon

বিএমইউর বহির্বিভাগ খোলা থাকবে ২৯ মার্চ ও ২ এপ্রিল

বিএমইউর-বহির্বিভাগ-খোলা-থাকবে-২৯-মার্চ-ও-২-এপ্রিল
বিএমইউর ডি ব্লক। ছবি: ফেসবুক
এ দুই দিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বহির্বিভাগে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দিনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিদিনই বিএমইউ হাসপাতালের ইনডোর ও জরুরি বিভাগ প্রচলিত নিয়মে খোলা থাকবে।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটির দিনগুলোতে যাতে চিকিৎসা ব্যবস্থার কোনো ঘাটতি না হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলম।

রোগীদের সুবিধার্থে ২৯ মার্চ ও ২ এপ্রিল খোলা থাকবে বিএমইউর বহির্বিভাগ।

এ দুই দিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বহির্বিভাগে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দিনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিদিনই বিএমইউ হাসপাতালের ইনডোর ও জরুরি বিভাগ প্রচলিত নিয়মে খোলা থাকবে।

হাসপাতালের জরুরি ল্যাব কার্যক্রম সেবাও চালু থাকবে।

বিএমইউর রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বহির্বিভাগ বন্ধ থাকবে ২৮, ৩০, ৩১ মার্চ এবং ১, ৩ ও ৪ এপ্রিল। এর মধ্যে পবিত্র শবে কদর উপলক্ষে শুক্রবার এবং সাপ্তাহিক ছুটি উপলক্ষে ৪ এপ্রিল বহির্বিভাগ বন্ধ থাকবে। বন্ধের দিনগুলোতে ২৯ মার্চ শনিবার থেকে ৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস, অফিস, বৈকালিক স্পেশালাইজড কনসালটেশন সার্ভিস, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কনসালটেশন সার্ভিস বন্ধ থাকবে।’

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, হাসপাতালে রোগীদের জন্য উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

স্বাস্থ্য
Artificial legs of 5 more people in the dream initiative

‘স্বপ্ন নিয়ে’র উদ্যোগে আরও ১০ জনের কৃত্রিম পা সংযোজন

‘স্বপ্ন নিয়ে’র উদ্যোগে আরও ১০ জনের কৃত্রিম পা সংযোজন স্বপ্ন নিয়ের উদ্যোগে গত ২০ মার্চ ঢাকার শ্যামলীতে অবস্থিত কৃত্রিম পা, হাত ও ব্রেইস সংযোজন কেন্দ্র ইজি লাইফ ফর বাংলাদেশে ১০ জনের কৃত্রিম পা সংযোজনের কার্মক্রম শুরু হয়। ছবি: স্বপ্ন নিয়ে
কৃত্রিম পা লাগানোর প্রসঙ্গে “স্বপ্ন নিয়ে’র প্রতিষ্ঠাতা আশরাফুল আলম হান্নান বলেন, ‘আমরা প্রায়ই আমাদের চারপাশে পক্ষাঘাতগ্রস্ত অসহায় মানুষ দেখে থাকি। আমরা স্বপ্ন নিয়ের মাধ্যমে সকলের সহযোগিতায় এর আগে ১১৭ জনের কৃত্রিম পা সংযোজন করে দিয়েছি। আমাদের সকলের যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী এ সকল মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসা উচিত।’

দীর্ঘদিন ক্রাচ, লাঠি কিংবা বাঁশের সাহায্যে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছিল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্নভাবে পা হারানো ১০ ব্যক্তি। সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা নিয়ে এ ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়িয়েছে সেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্ন নিয়ে’।

স্বপ্ন নিয়ের উদ্যোগে গত ২০ মার্চ ঢাকার শ্যামলীতে অবস্থিত কৃত্রিম পা, হাত ও ব্রেইস সংযোজন কেন্দ্র ইজি লাইফ ফর বাংলাদেশে ১০ জনের কৃত্রিম পা সংযোজনের কার্মক্রম শুরু হয়।

পা সংযোজন ও সাত দিন প্রশিক্ষণ শেষে বুধবার এ ১০ জনের কৃত্রিম পা প্রদান করা হয়।

ওই সময় উপস্থিত ছিলেন স্বপ্ন নিয়ের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য নূরুস সাবা, ইজি লাইফ ফর বাংলাদেশের পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম, স্বপ্ন নিয়ের প্রতিষ্ঠাতা আশরাফুল আলম হান্নান, পরিচালক (অপারেশন) ইমতিয়াজ আহমেদ, পরিচালক (প্রশাসন) মীর তানভীর আহমেদ, পরিচালক (ডেভেলপমেন্ট) অ্যাডভোকেট তসলিম, সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) আমিনুল ইসলাম আরিফ, সহকারী পরিচালক (স্বাস্থ্য) ইলিয়াস হোসেন, সহকারী পরিচালক (আইটি) ইফতেখার হৃদয় ও সদস্য জীবন চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্টরা।

কৃত্রিম পা লাগানোর প্রসঙ্গে “স্বপ্ন নিয়ে’র প্রতিষ্ঠাতা আশরাফুল আলম হান্নান বলেন, ‘আমরা প্রায়ই আমাদের চারপাশে পক্ষাঘাতগ্রস্ত অসহায় মানুষ দেখে থাকি। আমরা স্বপ্ন নিয়ের মাধ্যমে সকলের সহযোগিতায় এর আগে ১১৭ জনের কৃত্রিম পা সংযোজন করে দিয়েছি। আমাদের সকলের যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী এ সকল মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসা উচিত।

‘পক্ষাঘাতগ্রস্ত অসহায় ও গরিব মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য আসার পাশাপাশি যেন গতির সঞ্চার হয় এবং এর মাধ্যমে তাদের জীবন যাপন আরো সহজ ও সুন্দর হয়, সে লক্ষ্যেই স্বপ্ন নিয়ে এমন উদ্যোগ নিয়েছে। এ উদ্যোগকে বাস্তবায়ন করতে যারা আমাদেরকে অর্থসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন, তাদের প্রতি আমরা গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’

আরও পড়ুন:
রিং পরানো হয়েছে তামিমের হৃৎপিণ্ডে
বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে তামিম ইকবাল
এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরবেন বেগম খালেদা জিয়া
বাংলাবান্ধা দিয়ে নেপালে গেল আরও ১০৫ টন আলু
অবশেষে দেশে ফিরেছেন মিয়ানমারের স্ক্যাম সেন্টারে বন্দি ১৮ বাংলাদেশি

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Tamim Iqbals unique treatment of the golden age of Islam and Islam

তামিম ইকবালের সুচিকিৎসা ও ইসলামের স্বর্ণযুগের অনন্য চিকিৎসাব্যবস্থা

তামিম ইকবালের সুচিকিৎসা ও ইসলামের স্বর্ণযুগের অনন্য চিকিৎসাব্যবস্থা ইসলামের স্বর্ণযুগের চিকিৎসাকর্মী। ছবি: দ্য রিভিউ অব রিলিজিয়নস
১২৮৪ সালে মিসরের কায়রোতে নির্মিত এই ‘মানসুরি হাসপাতাল’ ছিল ইসলামের স্বর্ণযুগের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে উন্নত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। এখানে চারটি বড় আঙিনার কেন্দ্রে জলপ্রপাত ছিল, রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড, বহির্বিভাগ, ওষুধ বিতরণ কেন্দ্র এবং শিক্ষার্থীদের জন্য লেকচার হল ছিল। হাসপাতালের চিকিৎসকরা শুধু রোগীদের চিকিৎসাই করতেন না, বরং প্রয়োজনে তাদের বাড়িতেও গিয়ে সেবা দিতেন। বিশেষত, জ্বর ওয়ার্ডগুলোকে জলপ্রপাতের মাধ্যমে ঠান্ডা রাখা হতো এবং রোগীদের বিনোদনের জন্য সংগীতশিল্পী ও গল্প বলার ব্যবস্থা ছিল।

বাংলাদেশের জনপ্রিয় ক্রিকেটার তামিম ইকবালের সুস্থতায় দেশবাসী যেমন চরম আনন্দ পেয়েছে, তেমনই তাদের অনেকে প্রচলিত একটি ভুল ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছে। এতদিন দেশের মানুষের বিশাল অংশের একটি ধারণা ছিল যে, বাংলাদেশে ভালো চিকিৎসক নেই। কিন্তু তামিম ইকবাল যখন বুকে ব্যথা অনুভব করেন, তখন দুই ঘণ্টার মধ্যেই এনজিওগ্রাম, হার্টে স্টেন্ট তথা রিং বসানোসহ সবকিছু হয়ে যায়।

তামিম দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। তাই তার চিকিৎসায় বিলম্ব হয়নি। এই যে দ্রুত গতিতে চিকিৎসাসেবা পাওয়া, সেটি তার জন্য করুণা নয়; বরং ন্যায্য পাওনা।

আকস্মিক অসুস্থতায় মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখার পর তামিমের দ্রুত চিকিৎসা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। ঘটনাটি সমাজে ধনী-দরিদ্র্যের বৈষম্যকেও আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।

এ দেশের কোটি কোটি সাধারণ মানুষের জন্য চিকিৎসাপ্রাপ্তির অভিজ্ঞতা এত সুন্দর বা সহজ নয়। ভর্তির ফরম পূরণ, সিরিয়ালের অপেক্ষা, হাসপাতালের করিডোরে দীর্ঘ প্রতীক্ষা—আরও কতকিছুর মধ্য দিয়ে যেতে হয়। প্রতি পদে পদে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, এখানে উন্নত চিকিৎসা পেতে হলে আপনাকে ধনী, জনপ্রিয়ত হতে হবে অথবা আপনার ‌তদবির করার মতো লোক থাকতে হবে। যাদের সেগুলো আছে, তারা ভালো চিকিৎসা পাবে, যাদের নেই তারা প্রক্রিয়াগত জটিলতায় পড়বেন। ভাগ্য ভালো না হলে বেঘোরে প্রাণটা হারাবেন।

জনগণ তামিমের ঘটনা থেকে জানতে পারল বাংলাদেশে চিকিৎসা নেই কথাটা ‌‘যদি’, ‘কিন্তু’ ছাড়া ভুল। বাংলাদেশে উন্নত চিকিৎসা আছে, কিন্তু সেটা সাধারণ জনগণের জন্য সোনার হরিণেরমতো।

আসলে এটি শুধু বাংলাদেশের চিত্র নয়, সারা বিশ্বেই দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সুচিকিৎসা পেতে অনেক বেগ পেতে হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের প্রতি বছর প্রায় সাত হাজার ৭৪৯ ডলার খরচ করতে হয় স্বাস্থ্যবিমার জন্য। দেশটিতে গত এক দশকে বিমাহীন মানুষের সংখ্যা ৩৫ শতাংশ বেড়েছে, যা দরিদ্রদের চিকিৎসাসেবা গ্রহণে বড় বাধা সৃষ্টি করেছে।

জানলে অনেকে আঁতকে উঠবেন যে, জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের তথ্য অনুযায়ী, আমেরিকায় প্রতি বছর আড়াই লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় ভুল চিকিৎসায়। বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও অন্য কিছু প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সংখ্যা চার লাখেরও বেশি। হৃদরোগ ও ক্যানসারে ভুল চিকিৎসার জন্য মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি।

যদিও ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (OECD) নামে বৈশ্বিক নীতিনির্ধারণী একটি ফোরাম বলছে, আমেরিকার চেয়ে পৃথিবীর আর কোনো দেশে চিকিৎসা খাতে বেশি অর্থ ব্যয় করা হয় না। তবে চিকিৎসায় ব্যয়ের বেশির ভাগ অংশ সরাসরি রোগীদের চিকিৎসার জন্য নয়, বরং হাসপাতাল নির্মাণ, উন্নয়ন, স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন ও ওষুধের উচ্চমূল্যের পেছনে ব্যয় হয়। ফলে জনসাধারণ স্বল্প মূল্যে চিকিৎসা পান না।

আমরা যখন একুশ শতকে সামরিকভাবে প্রচণ্ড প্রভাবশালী রাষ্ট্রের এ চিত্র দেখছি, তখন শত শত বছর আগে ইসলামী ভাবধারার শাসনামলে চিকিৎসা ছিল ধনী-গরিব সবার জন্য সমান। পশ্চিমা জ্ঞানকাণ্ডে ইসলামের সোনালি এ দিনগুলোকে অন্ধকারাচ্ছন্ন হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও বাস্তবে ১২৮৪ খ্রিস্টাব্দে কায়রোর আল-মানসুর কালাউনের বিমারিস্তানের (হাসপাতাল) পলিসি স্টেটমেন্টটি দেখলে আপনি হয়তো ফিরে যেতে চাইবেন সেই সময়ে। চলুন দেখে নিই, কী ছিল সেই পলিসি স্টেটমেন্টে।

সেখানে বলা ছিল, ‘হাসপাতাল সকল রোগীকে-পুরুষ ও নারী- সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত রাখবে। সব খরচ হাসপাতাল বহন করবে, তা সে দূরবর্তী অঞ্চল থেকে আসুক বা নিকটবর্তী এলাকা থেকে, বাসিন্দা হোক বা বিদেশি, সবল হোক বা দুর্বল, উচ্চবিত্ত হোক বা নিম্নবিত্ত, ধনী হোক বা দরিদ্র, কর্মরত হোক বা বেকার, দৃষ্টিহীন হোক বা শারীরিকভাবে সক্ষম, মানসিক বা শারীরিকভাবে অসুস্থ, শিক্ষিত বা নিরক্ষর সবাইকে সমান সেবা দেওয়া হবে।’

এখানে কোনো শর্ত বা অর্থ প্রদানের বাধ্যবাধকতা নেই। কেউ যদি অর্থ প্রদান করতে না পারত, তাতেও কোনো আপত্তি বা ইঙ্গিত করার সুযোগ ছিল না। সম্পূর্ণ সেবাটি পরম দয়ালু আল্লাহর অনুগ্রহের মাধ্যমে প্রদান করা হতো।

১২৮৪ সালে মিসরের কায়রোতে নির্মিত এই ‘মানসুরি হাসপাতাল’ ছিল ইসলামের স্বর্ণযুগের সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে উন্নত চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। এখানে চারটি বড় আঙিনার কেন্দ্রে জলপ্রপাত ছিল, রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড, বহির্বিভাগ, ওষুধ বিতরণ কেন্দ্র এবং শিক্ষার্থীদের জন্য লেকচার হল ছিল।

হাসপাতালের চিকিৎসকরা শুধু রোগীদের চিকিৎসাই করতেন না, বরং প্রয়োজনে তাদের বাড়িতেও গিয়ে সেবা দিতেন। বিশেষত, জ্বর ওয়ার্ডগুলোকে জলপ্রপাতের মাধ্যমে ঠান্ডা রাখা হতো এবং রোগীদের বিনোদনের জন্য সংগীতশিল্পী ও গল্প বলার ব্যবস্থা ছিল।

বিশেষভাবে উল্লেখ করার বিষয় হলো রোগীরা হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সময় তাদের হাতে কিছু পরিমাণ অর্থ তুলে দেওয়া হতো, যাতে তারা আর্থিক সংকটে না পড়ে এবং কাজের জন্য প্রস্তুত হতে পারে।

এবার একটি চমকপ্রদ চিঠি তুলে ধরা হলো, যা দেখলে আপনি অবাক হতে পারেন। আর সেই সঙ্গে ইসলামী শাসনামলের চিকিৎসাব্যবস্থা সম্পর্কে আরও পরিষ্কার ধারণা পেতে পারেন।

দশম শতাব্দীতে কর্ডোবার একটি হাসপাতাল থেকে এক তরুণ ফরাসি যুবকের চিঠির কথা আমির গাফার আল-আরশদি কর্তৃক ১৯৯০ সালে বৈরুতের আল-রিসালা এস্টাবলিশমেন্ট থেকে প্রকাশিত The Islamic Scientific Supremacy শীর্ষক গ্রন্থে তুলে ধরা হয়।

চিঠিটির অনুবাদ নিচে দেওয়া হলো।

‘আপনি আপনার আগের চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন যে, আমার ওষুধের খরচের জন্য কিছু টাকা পাঠাবেন। আমি বলতে চাই, আমার একেবারেই সেই টাকার প্রয়োজন নেই, কারণ এই ইসলামী হাসপাতালে চিকিৎসা সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে দেওয়া হয়।

‘এ ছাড়াও এ হাসপাতালের আরেকটি চমকপ্রদ দিক হলো—যে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন, তাকে হাসপাতাল থেকে একটি নতুন পোশাক এবং পাঁচ দিনার দেওয়া হয়, যাতে তিনি বিশ্রাম ও পুনরুদ্ধারের সময় কাজ করতে বাধ্য না হন। প্রিয় বাবা, আপনি যদি আমাকে দেখতে আসতে চান, তবে আমাকে সার্জারি ও জয়েন্ট চিকিৎসা বিভাগের ওয়ার্ডে পাবেন। ফটক দিয়ে প্রবেশ করার পর দক্ষিণ কক্ষে যান, যেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয় বিভাগ রয়েছে। এরপর আপনি সন্ধান পাবেন বাত (জয়েন্ট) রোগ বিভাগের।’

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘আমার কক্ষের পাশে একটি গ্রন্থাগার এবং একটি হলঘর রয়েছে, যেখানে চিকিৎসকরা একত্রিত হয়ে অধ্যাপকদের বক্তৃতা শোনেন এবং এটি পড়াশোনার জন্যও ব্যবহৃত হয়। হাসপাতালের প্রাঙ্গণের অপর পাশে রয়েছে স্ত্রীরোগ বিভাগের ওয়ার্ড, যেখানে পুরুষদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। হাসপাতালের আঙিনার ডান দিকে রয়েছে বিশাল একটি হল, যেখানে সুস্থ হওয়া রোগীদের পুনরুদ্ধারের জন্য কিছুদিন রাখা হয়। এই কক্ষে একটি বিশেষ লাইব্রেরি ও কিছু বাদ্যযন্ত্রও রয়েছে।

‘প্রিয় বাবা, হাসপাতালের প্রতিটি স্থান অত্যন্ত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। বিছানা ও বালিশ দামাস্কাসের সূক্ষ্ম সাদা কাপড় দিয়ে মোড়ানো থাকে। কম্বল তৈরি হয় নরম ও মসৃণ প্লাশ কাপড় দিয়ে। প্রতিটি কক্ষে পরিষ্কার পানির ব্যবস্থা আছে, যা পাইপের মাধ্যমে বিশাল একটি ঝরনার সঙ্গে সংযুক্ত। শুধু তাই নয়, প্রতিটি কক্ষে গরম রাখার জন্য চুলাও রয়েছে।

‘খাবারের ব্যবস্থা এত ভালো যে, প্রতিদিন রোগীদের জন্য মুরগির মাংস ও সবজি পরিবেশন করা হয়। এমনকি, অনেক রোগী সুস্থ হয়েও হাসপাতাল ছাড়তে চান না শুধু এখানকার সুস্বাদু খাবারের প্রতি ভালোবাসার কারণে।’

চিকিৎসাব্যবস্থাকে পুঁজিবাদ ও ইসলাম সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে দেখে। বর্তমান পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় চিকিৎসা একটি লাভজনক ব্যবসা, অন্যদিকে ইসলাম চিকিৎসাকে মানবসেবার অংশ হিসেবে দেখে, যেখানে মুনাফার পরিবর্তে সবার জন্য সুলভ ও ন্যায়সঙ্গত চিকিৎসার ওপর জোর দেওয়া হয়।

ইসলামে চিকিৎসা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। ইসলামে রাষ্ট্রকে জনগণের কল্যাণ এবং তাদের মৌলিক অধিকারগুলোর প্রতি দায়িত্বশীল হতে নির্দেশ করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো চিকিৎসাসেবা।

ইসলামের মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষের শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক কল্যাণ নিশ্চিত করা এবং চিকিৎসাসেবা এর গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত এক হাদিসে বলা হয়, ‘আল্লাহ এমন কোনো রোগ সৃষ্টি করেননি, যার নিরাময়ের উপকরণ তিনি সৃষ্টি করেননি।’ হাদিসটি ইসলামি শাসনামলে চিকিৎসাশাস্ত্রে অগ্রগতির নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে।

এ ছাড়া ‘যে ব্যক্তি মুসলিম ভাইয়ের কোনো দুঃখ-কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ তৈরি করবেন’ এবং ‘মুসলিম একে অপরের ভাই। যদি কেউ তার ভাইয়ের সমস্যা সমাধান করতে সাহায্য করে, আল্লাহ তাকে সাহায্য করবেন’ ধরনের হাদিস তৎকালীন চিকিৎসকদের অনুপ্রাণিত করতো সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে।

সে সময় ভুল চিকিৎসায় কারও মৃত্যু হলে তাকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে দেখা হতো, তাই দক্ষতা ছাড়া কেউ এ পেশায় আসত না, যা ভুল চিকিৎসা রোধে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে।

চিকিৎসাসেবার মান নিয়ন্ত্রণ ও পর্যালোচনা নিয়ে ইবন আল-উখওয়া (Ibn al-Ukhuwa) তার গ্রন্থ মা’আলিম আল-কুরবা ফি তালাব আল-হিসবাতে কয়েকটি বিষয়টি উল্লেখ করেন।

• যদি রোগী মারা যান, তবে তার পরিবারের সদস্যরা প্রধান চিকিৎসকের কাছে অভিযোগ করতে পারেন। তারা চিকিৎসকের লেখা প্রেসক্রিপশন দেখান।
• যদি প্রধান চিকিৎসক মনে করেন যে চিকিৎসক তার কাজ যথাযথভাবে করেছেন, তবে তিনি পরিবারকে জানান যে এটি একটি স্বাভাবিক মৃত্যু।
• কিন্তু যদি চিকিৎসকের অবহেলা প্রমাণিত হয়, তবে প্রধান চিকিৎসক পরিবারকে বলেন, ‘তোমাদের আত্মীয়কে ভুল চিকিৎসার কারণে হত্যা করা হয়েছে। চিকিৎসকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করো!’

এই ন্যায়সঙ্গত পদ্ধতির কারণে শুধু অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত চিকিৎসকরাই চিকিৎসাব্যবস্থায় কাজ করতে পারতেন।

ইসলামি সভ্যতায় আধুনিক হাসপাতালের ধারণা নবী মুহাম্মাদ (সা.)-এর সময়েই জন্ম নিয়েছিল। ইসলামের প্রথম দিনগুলোতে চিকিৎসাসেবার মূল কেন্দ্র ছিল মদিনার মসজিদ, যেখানে রোগীদের চিকিৎসার জন্য তাঁবু স্থাপন করা হতো। বিশেষ করে, গাজওয়া খন্দকের সময় নবী (সা.) আহত সেনাদের চিকিৎসার জন্য রুফাইদা বিনতে সাদ (রাঃ)-এর তত্ত্বাবধানে একটি বিশেষ তাঁবু স্থাপন করেছিলেন।

পরবর্তী সময়ে ইসলামী খলিফারা চিকিৎসাসেবা আরও সংগঠিত করেন এবং ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল প্রবর্তন করেন, যা নির্দিষ্ট অঞ্চলে গিয়ে জনগণকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করত।

১৩০০ শতকের চিকিৎসক ও পর্যটক আবদুল লতিফ আল-বাগদাদির এক চমৎকার অভিজ্ঞতা দিয়ে শেষ করব, যা ইসলামি শাসনামলে চিকিৎসাব্যবস্থার উন্নত অবস্থার চিত্র তুলে ধরে।

দামেস্কে শিক্ষকতা করা এ চিকিৎসক এক চতুর পার্সি যুবকের গল্প বলেছেন, যিনি নূরী হাসপাতালের চমৎকার খাবার ও পরিষেবার প্রতি এতটাই আকৃষ্ট হয়েছিলেন যে, অসুস্থতার ভান করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। চিকিৎসক তার অসুস্থতা নিয়ে সন্দেহ করলেও তাকে তিন দিন ধরে ভালো খাবার পরিবেশন করেন। চতুর্থ দিনে, চিকিৎসক তার কাছে এসে মৃদু হেসে বললেন, ‘আরবীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী, আতিথেয়তা তিন দিনের জন্য হয়ে থাকে। এখন দয়া করে বাড়ি ফিরে যান!’

পরিশেষে, তামিম ইকবাল যে দ্রুত চিকিৎসা পেয়েছেন, তা যেন কোনো ‘বিশেষাধিকার’ না হয়, বরং প্রতিটি নাগরিকের প্রাপ্য হয়—সেই লক্ষ্যে এমন সমাজের জন্য কাজ করা জরুরি যে সমাজ রুফাইদা (রা.)-এর তাঁবু বা কালাউনের হাসপাতালের মতো ‘কাউকে অর্থ বা পরিচয় জিজ্ঞাসা করবে না, শুধু নিশ্চিত করবে মানবতা।’ কেননা পুঁজিবাদী ব্যবস্থার দৃষ্টিভঙ্গি যেহেতু মুনাফাকেন্দ্রিক, সেহেতু এ ব্যবস্থা বহাল রেখে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার জন্য সুচিকিৎসা বাস্তবতা বিবর্জিত স্বপ্ন হিসেবে প্রতীয়মান হতে পারে।

লেখক: সাংবাদিক

আরও পড়ুন:
হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির জরায়ু কেটে ফেলার অভিযোগ
অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা বাবদ ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ সরকারের
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা স্থিতিশীল: চিকিৎসক
বিদেশি চাটুকারদের উপদেষ্টা বানানো হচ্ছে: ফয়জুল করীম
চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পেলেন দুই আমেরিকান

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
How much sleep does a healthy man need

একজন সুস্থ মানুষের কতটুকু ঘুম দরকার

একজন সুস্থ মানুষের কতটুকু ঘুম দরকার প্রতীকী ছবি
একজন মানুষ ঘুম থেকে ওঠার পর তার ঠিকঠাক বিশ্রাম অনুভব হচ্ছে কি না, তার শরীরের অবসাদ বা ক্লান্তি ঘুমানোর পর কেটেছে কি না, সে প্রশ্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

ধরুন ঘড়ির কাঁটায় বেলা ১২টা বাজছে। আপনি হয়তো তখন খবরটি পড়ছেন। এর মানে আপনি গত রাতে ঘুমিয়েছিলেন; এখন জেগে রয়েছেন।

আচ্ছা জেগে তো রয়েছেন, আপনি কি নিজেকে সজীব-সতেজ অনুভব করছেন? প্রতিদিনের কাজে নিজেকে প্রাণবন্ত অনুভব করছেন?

একজন মানুষ ঘুম থেকে ওঠার পর তার ঠিকঠাক বিশ্রাম অনুভব হচ্ছে কি না, তার শরীরের অবসাদ বা ক্লান্তি ঘুমানোর পর কেটেছে কি না, সে প্রশ্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

এ জন্য পরিমাণ মতো ঘুমানোর পাশাপাশি ঘুম পরিপূর্ণ হওয়াও জরুরি বলেছেন ঘুম বিশেষজ্ঞরা।

বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়, বেশির ভাগ মানুষ তার জীবনের এক-তৃতীয়াংশ ঘুমের জন্য ব্যয় করেন। তবে প্রতি রাতে আট ঘণ্টার বেশি বা কম ঘুমালেই সেটি যথেষ্ট। আবার বয়সের সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ঘুমের পরিমাণেরও পরিবর্তন ঘটে।

সাধারণত শিশু ও কিশোরদের তুলনামূলক বেশি ঘুমের প্রয়োজন হয়। অন্যদিকে ৬৫ বা তার বেশি বয়সী মানুষ ৭ থেকে ৯ ঘন্টা বা এরচেয়ে কিছুটা কম ঘুমালেও চলে।

তবে সুস্থ থাকার জন্য একজন মানুষের কতটুকু ঘুমানো দরকার, এ ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ কোনো ভেদাভেদ রয়েছে কি না, এ প্রশ্নও কিন্তু অনেকের মনেই ঘুরপাক খায়। এমন বাস্তবতায় জেনে নেওয়া যাক এ বিষয়ে ঘুম বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য।

গুরুত্বপূর্ণ ঘুম ভালো হওয়া

ঘুম যেন আস্ত একটি রহস্যের জগৎ। কত শত রহস্য যে এর মধ্যে লুকিয়ে আছে, তার কোনো ইয়ত্তা নেই।

এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে গবেষেণাও হয়েছে অনেক। কিছু প্রশ্নের উত্তর মিলেছে, কিছু অজানা।

সে যাই হোক, ঠিকঠাক ঘুম হওয়া মানুষের শরীরের সুস্থতার জন্য অতীব প্রয়োজনীয়।

যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘুম বিশেষজ্ঞ ড. রাফায়েল পেলায়ো বলেন, ‘আমরা কেন ঘুমাই, এটার কোনো নির্দিষ্ট কারণ এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে ঘুম আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজন। তাই আমরা প্রতিদিন ঘুমাই।’

তিনি বলেন, ‘ঘুমের সময় অসাধারণ কিছু ঘটে। ঘুম হলো মানুষের নিজের প্রতি যত্ন নেওয়ার সবচেয়ে স্বাভাবিক একটি পন্থা।’

জনস হপকিনস হাসপাতালের ঘুমবিষয়ক চিকিৎসক মলি অ্যাটউড বলেন, ‘একজন ব্যক্তি দৈনিক সাত থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমালে তার স্বাস্থ্যঝুঁকি সবচেয়ে কম থাকে। আবার ছয় ঘণ্টার কম বা ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমালে মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। যদিও সব মানুষের শারীরিক অবস্থা একরকম নয়।

বিহেভিওরিয়াল স্লিপ মেডিসিন নিয়ে কাজ করেন এ গবেষক। মানে ঘুমের সমস্যা, ঘুম-সংক্রান্ত বিভিন্ন লক্ষণ ও অনিদ্রার চিকিৎসা দিয়ে আসছেন তিনি।

সাত কিংবা ৯ ঘণ্টা ঘুমালেই হবে না; ঘুম ভালো হওয়াটা দরকারি বলে মত দিয়েছেন ড. রাফায়েল।

তিনি বলেন, ‘আপনি কত ঘণ্টা ঘুমিয়েছেন, তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ হলো ঘুম থেকে উঠে আপনি সতেজ বোধ করছেন কি না।’

অনেকক্ষণ ঘুমানোর পরেও যদি কেউ শরীরে ক্লান্তি অনুভব করেন, তাহলে নিশ্চয়ই ওই ব্যক্তির ঘুমে কোনো সমস্যা থাকতে পারে বলে ধারণা ড. রাফায়েলের।

তিনি বলেন, ‘প্রিয় খাবারের দোকানে গিয়ে কারও ক্ষুধার্ত হয়ে বের হতে নেই।’

অর্থাৎ একজন মানুষের ঘুমালে তার শরীরে ক্লান্তি থেকে যাওয়াটা একদমই উচিত নয় বলে মত দিয়েছেন ড. রাফায়েল।

বয়সের সঙ্গে প্রয়োজনীয় ঘুমের পরিমাণে পরিবর্তন

ঘুম প্রতিটি মানুষের জন্যই প্রয়োজন, তবে পরিমাণে তারতম্য রয়েছে।

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ঘুমের প্রয়োজনীয়তায় পরিবর্তন হতে থাকে। যেমন: নবজাতকের সবচেয়ে বেশি ঘুম প্রয়োজন। সেটি প্রায় ১৪ থেকে ১৭ ঘণ্টা।

মলি বলেন, ‘শিশু ও কিশোরদের বেশি ঘুম দরকার। কারণ এ বয়সে তাদের খুব দ্রুত শারীরিক বৃদ্ধি ঘটে থাকে।’

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশনের সুপারিশ অনুযায়ী, ২৬ থেকে ৬৪ বছর বয়সী প্রাপ্তবয়স্কদের দৈনিক সাত থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত। ৬৫ বা তার বেশি বয়সীদের কিছুটা কম (সাত ঘণ্টার কাছাকাছি), আর ১৬ থেকে ২৫ বছর বয়সী তরুণদের সাত ঘণ্টার সামান্য বেশি ঘুম দরকার।

মানুষের ঘুম প্রায় প্রতি ৯০ মিনিটে একটি চক্রে আবর্তিত হয় বলে জানান মলি।

তিনি বলেন, রাতের প্রথম ভাগে ঘুম চক্রে গভীর ঘুমের অংশ বেশি থাকে। এটি শরীরের সেরে ওঠা ও সতেজ করে তোলার জন্য অপরিহার্য।

এ সময়েই শরীর থেকে ‘গ্রোথ হরমোন’ নিঃসৃত হয় বলে জানান তিনি।

হরমোনটি মানুষের শারীরিক বৃদ্ধি ও উচ্চতার জন্য প্রয়োজন। হাড়ের গঠন, পেশির বিকাশে এর অবদান রয়েছে।

রাতের শেষভাগের ঘুমে মানুষ সাধারণত স্বপ্ন দেখে থাকে। মানুষের স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য ধাপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন ঘুম বিশেষজ্ঞ মলি।

তিনি বলেন, শিশুরা অর্ধেক সময়ই গভীর ঘুমে থাকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এ পরিমাণ কমতে থাকে।

ঘুমে নারী-পুরুষের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে কি না

গবেষণাতে এমন কোনো তথ্য পাওয়া না গেলেও গড়ে পুরুষদের তুলনায় নারীরা কিছুটা বেশি ঘুমান বলে মনে করেন মলি অ্যাটউড।

এ পার্থক্য ছোটবেলা থেকেই শুরু হয়ে যায় উল্লেখ করে ড. রাফায়েল বলেন, ‘কিশোরদের তুলনায় কিশোরীরা সাধারণত কম ঘুমান। এমনকি কিছু কিছু কিশোরীকে অনিদ্রা নিয়ে অভিযোগ করতেও শোনা যায়।’

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বার্কলির ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট ও ঘুম গবেষক অ্যালিসন হার্ভে বলেন, প্রথমবার মা হওয়ার পর রাতে শিশুর দায়িত্ব বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মায়েদের ওপর পড়ে। এতে তাদের ঘুম কম হয়। এ ছাড়া গর্ভাবস্থা ও মেনোপজের সময় হরমোনের প্রভাবেও নারীদের ঘুমের পরিমাণ ও গুণগত মান পরিবর্তিত হতে পারে।

মায়ো ক্লিনিকের স্নায়ু বিশেষজ্ঞ ডা. মিথরি জুনা বলেন, ‘মেনোপজের সময় বিশেষভাবে নারীদের ঘুমের মান কমে যায়। এ সময় রাতে বারবার ঘুম ভেঙে যায়। এতে ঘুমের স্থায়িত্ব বেড়ে যায়।’

মলি বলেন, ‘মাসিক চক্র শুরু হওয়ার ঠিক আগে নারীদের কিছুটা বেশি ঘুমের প্রয়োজন হতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘মাঝেমধ্যে মানুষের শরীর জানান দেয় যে, তার আরও কিছুটা ঘুম প্রয়োজন। এটি সবার গ্রাহ্য করা উচিত।’

ঘুম আমাদের শরীরের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। ঠিকঠাক ঘুম না হলে মানুষের শরীরে ক্লান্তি অনুভব হয়, মেজাজে বিরক্তি আসে, অমনোযোগী হয়ে ওঠেন তারা।

দীর্ঘমেয়াদে এ সমস্যাগুলো মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। এমনকি প্রাণঘাতীও হয়ে উঠতে পারে।

মলি জানান, যদি কোনো ব্যক্তির পর্যাপ্ত ঘুম না হয়, অনিদ্রা বা স্লিপ অ্যাপনিয়ার (ঘুমের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা, যাতে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটে) সমস্যা থাকলে, ঠিকঠাকভাবে চিকিৎসা না করানো হলে, তা হতাশা বাড়িয়ে দিতে পারে।

শুধু তাই নয়, পর্যাপ্ত ঘুম না হলে উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের মতো হৃদরোগজনিত সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায় বলে জানান তিনি।

মলি বলেন, ‘ঘুমের ঘাটতি মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়। এমনকি আলঝেইমার্স রোগেরও শিকার হতে পারেন কেউ কেউ।’

আলঝেইমার্স এক ধরনের স্নায়বিক রোগ। এতে মানুষ ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি হারাতে থাকেন।

রোগটির অবনতির সঙ্গে সঙ্গে রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। এমনকি রোগীরে মৃত্যুও হতে পারে।

ঘুম নিয়ে কোনো ধরনের সমস্যা হলে তা অবহেলা না করতে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

প্রতিনিয়ত ঘুমে সমস্যা হলে প্রাথমিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেছেন মলি। এতেও যদি সমস্যার সমাধান না হয়, ঘুম বিশেষজ্ঞদের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন:
গান গাইতে গাইতে মঞ্চে লুটিয়ে পড়লেন সাবিনা ইয়াসমিন
‘অনিদ্রা চক্র’ থেকে বের হবেন যেভাবে
রমজানজুড়ে সুস্থ থাকতে করণীয়
দুই মিনিটে ঘুমিয়ে পড়তে চাইলে যা করবেন

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
Tamims condition should improve at rest Doctor

তামিমের অবস্থার উন্নতি, থাকতে হবে বিশ্রামে: চিকিৎসক

তামিমের অবস্থার উন্নতি, থাকতে হবে বিশ্রামে: চিকিৎসক তামিমের স্বাস্থ্যের অবস্থা মঙ্গলবার সাংবাদিকদের জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর (ডানে) ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আবদুল ওয়াদুদ। ছবি: ইউএনবি
অধ্যাপক আবু জাফর বলেন, ‘আপনাদের সবার দোয়ায় আমাদের জাতীয় দলের ক্রিকেট তারকা তামিম ইকবাল এখন সুস্থ। তার সার্বিক অবস্থা আশাব্যঞ্জক। কিন্তু কখনও কখনও যে প্রাইমারি পিসিআই হয়েছে, এটা একটা ফরেন বডি, এটা রিঅ্যাকশন হতে পারে, হার্ট নানাভাবে এটার ওপর অ্যাকশন ও রিঅ্যাকশন হতে পারে। রে রিংটা লাগানো হয়েছে, সেটা সামায়িকভাবে, কোনোভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেই ঝুঁকি রয়েছে। যদিও সেই পরিসংখ্যান খুবই কম।’

জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলেও তাকে বিশ্রামে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর।

তিনি বলেন, ‘তবে তার স্বাভাবিক কাজকর্মে—অর্থাৎ খেলাধুলায়—ফিরতে অন্তত তিন মাস সময় লাগবে।’

সাভারের কেপিজি হাসপাতালে মঙ্গলবার দুপুরে তামিমকে দেখে সাংবাদিকদের তিনি এসব তথ্য দিয়েছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে এ চিকিৎসক বলেন, ‘তামিম ইকবালকে নরমাল কাজে ফিরে যাওয়ার জন্য অন্তত তিন মাস সময় দিতে হবে। মানে খেলাধুলায়। এ ছাড়া তিনি বাসায় স্বাভাবিক কাজকর্ম ও হাঁটাচলা করবেন সপ্তাহখানেক। তাকে বিশ্রামেই থাকতে হবে। যদিও সব পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সব রোগ সবসময় ধরা পড়ে না।

‌‘প্রথমিক ইসিজিতে কোনো চেঞ্জ আসেনি। আজ সকালে ইকো (ইকোকার্ডিওগ্রাম) করা হয়েছে। সবকিছুই ভালো। কিন্তু তারপরও যেকোনো সময় যেকোনো জিনিস ঘটে যেতে পারে। এ বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে তার পরিবারের সাথে আলাপ করেছি। এখন তাদের সিদ্ধান্ত আমাদের সিদ্ধান্ত।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমাদের জাতীয় সম্পদ তামিম ইকবালের শারীরিকভাবে অসুস্থবোধ করেন গতকাল সাড়ে ১০টায়। তিনি এখানে আসার পর ডাক্তাররা তাকে কার্ডিয়াক প্রবলেম হিসেবে সন্দেহ করেছেন। প্রাথমিকভাবে কিছু চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন। তাকে এখন মুভ (নিয়ে যাওয়া) করানো ঠিক হবে না বলেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।

‘তিনি একজন জাতীয় সেলিব্রেটি। নিজের অবস্থান বিবেচনা করে তিনি তাড়াতাড়ি ঢাকায় শিফট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। হেলিকপ্টারের ব্যবস্থাও হয়েছিল। আমাদের এখানকার দুজন ও ওখানকার দুজন মিলে চারজন চিকিৎসক মিলে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তখন তার হার্ট অ্যাটাক হয়, তার নাড়ির স্পন্দন পাওয়া যায়নি। তারপর ডাক্তারররা সিপিআর দিয়েছেন। হার্ট বন্ধ হয়ে গেলে চালু করার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।’

অধ্যাপক আবু জাফর বলেন, ‘আপনাদের সবার দোয়ায় আমাদের জাতীয় দলের ক্রিকেট তারকা তামিম ইকবাল এখন সুস্থ। তার সার্বিক অবস্থা আশাব্যঞ্জক। কিন্তু কখনও কখনও যে প্রাইমারি পিসিআই হয়েছে, এটা একটা ফরেন বডি, এটা রিঅ্যাকশন হতে পারে, হার্ট নানাভাবে এটার ওপর অ্যাকশন ও রিঅ্যাকশন হতে পারে।

‘রে রিংটা লাগানো হয়েছে, সেটা সামায়িকভাবে, কোনোভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সেই ঝুঁকি রয়েছে। যদিও সেই পরিসংখ্যান খুবই কম।’

তিনি বলেন, ‘তার পরিবারের সদস্যদের সেটা বলেছি। চিকিৎসক যারা ছিলেন, ডা. মারুফ, তাদের পরিশ্রমে, আল্লাহর বিশেষ রহমতে তাকে আমরা একটি নবজীবন দিতে পেরেছি। সর্বোচ্চ চিকিৎসা সুবিধা যেখানে সম্ভব, সেখানে মানুষ যেতে চাইবে। কিন্তু তার যাওয়াটা কতটা নিরাপদ, সে বিষয়ে আমরা তার পরিবারের সঙ্গে আলাপ করেছি। তার এই মুহূর্তে শিফট করায় ঝুঁকি আছে।’

এ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘ঝুঁকিটা কম, এক শতাংশ। যদি ঘটে যায়, তখন ঝুঁকিটা শতভাগ। ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা তার এখানে থাকা উচিত। তার পর তিনি অন্য কোথাও যেতে পারবেন।’

আবদুল ওয়াদুদ বলেন, ‘তামিমের যেটা হয়েছিল, অ্যাকিউট হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে সেটা কিন্তু হয়। আমরা দেখেছি, অ্যাকিউট হার্ট অ্যাটাক হলে ১০ থেকে ২০ শতাংশ রোগী কখনও হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন না। তার হার্ট অ্যারেস্ট হয়। এখানেও তাই হয়েছে। কিন্তু তার সাথে চিকিৎসকরা ছিলেন, সাথে সাথে কার্ডিয়াক ম্যাসেজ শুরু হয়েছিল। হার্ট নিজে পাম্প করছে না, জোর করে কিছুটা পাম্প করিয়ে রাখা হয়েছিল। তারপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

‘তার বন্ধ আর্টারি খুলে দেওয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, অ্যাকিউট এপিসোডটা গেছে। ৩২ মিনিটের মতো তাকে কার্ডিয়াক প্লেসে দিতে হয়েছে। সেখান থেকে উঠে আসার সৌভাগ্য সবার হয় না। যথাসময়ে উপযুক্ত চিকিৎসা পাওয়ার কারণেই তামিমকে আমরা ফিরে পেয়েছি। কতটা ফেরত পেয়েছি, আজ সকালবেলায় ইকোকার্ডিয়াক করে হার্টের ফাংশন দেখা হচ্ছিল, দেখে মনে হয়, কোনো সমস্যা নেই, একেবারে তরতাজা। মনে রাখতে হবে, এটিই একটি ছদ্মবেশ। হার্ট আবার অ্যাবনরমাল হতে পারে। তবে শঙ্কা অবশ্যই কমে গেছে।’

এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘তবে ওটা হয়েছিল, কারণ একটা বড় আর্টারি বন্ধ ছিল। খাবার নেই, অক্সিজেন নেই, ওই টিস্যুটা ইরিটেটেড, সে জন্যই এটা হয়েছিল। এখন সেটা খুলে গেছে। স্লাইট শঙ্কা আছে। সে জন্য আমরা তাকে বলেছি, ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত একটি ক্রিটিক্যাল টাইম, যাতে আর কোনো প্রবলেম না হয়।

‘কথাবার্তা একটু কম বলা উচিত, বিশ্রামে থাকা উচিত। এখানে থেকে স্থিতিশীল হয়ে আরও ভালো কোনো জায়গায় যদি যেতে চান, তাহলে যেতে পারবেন।’

আরও পড়ুন:
রিং পরানো হয়েছে তামিমের হৃৎপিণ্ডে
বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে তামিম ইকবাল
দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা সাকিব জ্যোতি তামিমদের
নারী ক্রিকেটারদের উপহার দিলেন প্রধানমন্ত্রী
লাইভে এসে ফোনালাপের বিষয়টি খোলাসা করলেন তামিম

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
The ring is worn on Tamims heart

রিং পরানো হয়েছে তামিমের হৃৎপিণ্ডে

রিং পরানো হয়েছে তামিমের হৃৎপিণ্ডে ক্রিকেটার তামিম ইকবাল। ছবি: ইউএনবি
ইউএনবিকে সোমবার এমন তথ্য নিশ্চিত করেন বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুনীরুল ইসলাম।

বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের হৃৎপিণ্ডে রিং পরানো হয়েছে।

বর্তমানে তাকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছে।

ইউএনবিকে সোমবার এমন তথ্য নিশ্চিত করেন বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুনীরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘তাকে রিং পরানো হয়েছে নিশ্চিত। প্রথমে মাঠে খেলার সময় তার বুকে ব্যথা ওঠে। আমরা তাকে হাসপাতালে পাঠাই। তাকে যখন হেলিকপ্টারে তোলা হচ্ছিল, তখন আবার বুকে ব্যথা শুরু হয়।

‘হঠাৎ করেই তার বুকে ব্যথা ওঠে। এরপর আমাদের অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসকসহ তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) চিকিৎসা বিভাগের প্রধান দেবাশীষ চৌধুরী সাংবাদমাধ্যমকে জানান, তামিমের দুইবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি উন্নতির দিকে।

বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে মোহামেডানের হয়ে শাইনপুকুরের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন তামিম। অধিনায়ক হিসেবে টসেও অংশ নেন।

এরপর হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করায় তামিমকে বিকেএসপিতেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় নিয়ে যাওয়া হয় বিকেএসপির পাশে সাভারের ফজিলাতুন্নেছা হাসপাতালে। এ মুহূর্তে তিনি সেখানেই ভর্তি।

তামিমের অসুস্থতার খবরে বিসিবির বোর্ড সভা স্থগিত করা হয়। দুপুর ১২টায় ১৯তম বোর্ড সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল।

এ ক্রিকেটারকে দেখতে হাসপাতালে যাচ্ছেন বিসিবি পরিচালক ও কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন:
ঝালকাঠিতে হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ককে ‌‘হত্যাচেষ্টা’: অ্যাম্বুলেন্সের চালক গ্রেপ্তার
গজারিয়ায় হাসপাতালের সামনে ভ্যানে সন্তান প্রসব
সিলেট জেলা হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শেষ, দায়িত্ব নিচ্ছে না কেউ
ভারতকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
টানা দুই জয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

মন্তব্য

স্বাস্থ্য
The fifth polluted city in the world with unhealthy wind

‘অস্বাস্থ্যকর বাতাস’ নিয়ে বিশ্বে পঞ্চম দূষিত শহর ঢাকা

‘অস্বাস্থ্যকর বাতাস’ নিয়ে বিশ্বে পঞ্চম দূষিত শহর ঢাকা
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার ২০ মিনিটে ১৫৮ একিউআই স্কোর নিয়ে শহরটি মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিকে আবারও বাড়িয়ে তুলেছে।

কর্ম ব্যস্ততার শেষ দিনে ঢাকার বাতাস দূষণে বিশ্বের পঞ্চম স্থানে রয়েছে, নগরীর বাসিন্দাদের জন্য যা অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। গতকাল বুধবার বায়ুদূষণের শহরগুলোর তালিকায় ঢাকার স্থান ছিল তৃতীয়।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার ২০ মিনিটে ১৫৮ একিউআই স্কোর নিয়ে শহরটি মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিকে আবারও বাড়িয়ে তুলেছে।

আলজেরিয়ার আলজিয়ার্স, ভারতের দিল্লি ও নেপালের কাঠমান্ডু যথাক্রমে ২১২, ১৯৪ ও ১৭৪ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান দখল করেছে।

যখন কণা দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে তখন বায়ুর গুণমানকে ’মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে ’সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে ’অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ’খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। এছাড়া ৩০১ এর বেশি হলে ’বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো-বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এর বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।

বায়ুদূষণে যে স্বাস্থ্যসমস্যা হতে পারে

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দ্য হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউটের প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বে যেসব কারণে সবচেয়ে বেশি অকালমৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, সেই তালিকায় দ্বিতীয় হচ্ছে বায়ুদূষণ। আর প্রথম হচ্ছে রক্তচাপ।

স্বল্প-সময়ের জন্য বায়ুদূষণের কবলে পড়লে অ্যাজমা হতে পারে, এমনকি হার্ট অ্যাটাক কিংবা স্ট্রোকও হতে পারে। বিশেষ করে যেসব বয়স্কদের আগে থেকেই চিকিৎসাসংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এমন ঝুঁকি বেশি। আর দীর্ঘমেয়াদে বায়ুদূষণে থাকলে হার্ট ও ফুসফুসের মারাত্মক সমস্যা দেখা দেওয়ার শঙ্কা আছে। যা মানুষকে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যেতে পারে।

বায়ুদূষণের কারণে হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) ও ফুসফুসে প্রদাহ হতে পারে।

জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থার সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোতে ৫০ কোটির বেশি শিশু অস্বাস্থ্যকার বাতাসে শ্বাস নিচ্ছে। প্রতিদিন পাঁচ বছরের কমবয়সী ১০০টি শিশুর মৃত্যুর সঙ্গে বায়ুদূষণের সম্পর্ক রয়েছে।

ইউনিসেফের পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক জুন কুনিজি বলেন, বায়ুদূষণে শিশুদের বৃদ্ধি কমে যায়, ফুসফুসে ক্ষতি করে এবং মানসিক দক্ষতার বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। প্রতিটি শ্বাসই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তা বহুশিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

আরও পড়ুন:
ভোলা ও নোয়াখালীর সঙ্গে চালু হচ্ছে চট্টগ্রামের জাহাজ সার্ভিস
ঢাকার ১৯ খাল দখলমুক্ত চলতি বছরেই: রিজওয়ানা
প্রথম ঘণ্টায় ঢাকার পুঁজিবাজারে সব সূচকের পতন
ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক পারস্পরিক স্বার্থে এগিয়ে যাবে: হাইকমিশনার ভার্মা
মাঠে আদালত স্থাপনের প্রতিবাদে ঢাকা আলিয়া শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

মন্তব্য

p
উপরে