× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
Not using Afghanistan against China Taliban
google_news print-icon

চীনের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানকে ব্যবহার নয়: তালেবান

চীনের-বিরুদ্ধে-আফগানিস্তানকে-ব্যবহার-নয়-তালেবান
তিয়ানজিনে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে সফররত তালেবান প্রতিনিধি দলের প্রধান আলোচক মোল্লা বারাদার আখুন্দ। ছবি: এএফপি
আফগানিস্তানে বর্তমান সহিংস পরিস্থিতির জন্য পশ্চিমা বিশ্ব তালেবানকে দায়ী করলেও গোষ্ঠীটিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বীকৃতি দিয়েছে চীন। চীনে তালেবানের সফরে সে স্বীকৃতি আরও জোরদার হলো বলে মত নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের।

কোনো শক্তিকেই চীনের বিরুদ্ধে আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবে না বলে বেইজিংকে আশ্বস্ত করেছে আফগানিস্তানের ধর্মভিত্তিক সশস্ত্র রাজনৈতিক সংগঠন তালেবান।

চীন সফররত তালেবান প্রতিনিধিদের একটি দল বুধবার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে সাক্ষাতে এ আশ্বাস দেয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, বেইজিংয়ের আমন্ত্রণে তালেবানের ৯ সদস্যের দলটি দুই দিনের সফরে চীনের উত্তরাঞ্চলীয় তিয়ানজিন শহরে অবস্থান করছে। বৈঠকের আলোচ্য হলো শান্তি আলোচনা ও নিরাপত্তা ইস্যু।

তালেবানের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাঈম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে লিখেছেন, ‘আফগানিস্তান ও চীনের রাজনীতি, অর্থনীতি ও অন্যান্য ইস্যু, আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি ও শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

নাঈম বলেন, ‘চীনের বিরুদ্ধে আফগান ভূখণ্ডকে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না বলে চীনা সরকারকে নিশ্চিত করেছে তালেবান প্রতিনিধিদলটি। প্রতিক্রিয়ায় চীনও আফগানিস্তানের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছে।’

তিনি জানান, আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করে বরং সংকট সমাধান ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছে বেইজিং।

তালেবানের পক্ষে প্রধান আলোচক ছিলেন তালেবানের উপপ্রধান মোল্লা বারাদার আখুন্দ। তিনি আফগানিস্তানে চীনের বিশেষ দূতের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক জোটের পূর্ণাঙ্গ সেনা প্রত্যাহারের মুখে চীনের সীমান্তসংলগ্ন প্রতিবেশী আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে আগ্রাসী হয়ে উঠছে তালেবান। দখলে নিয়েছে দেশটির ৪১৯ জেলার অর্ধেকের বেশি।

ইরান, তাজিকিস্তান, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আফগানিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত নিরাপত্তা চৌকি ও বর্ডার ক্রসিংও নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তালেবান।

কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবানের সঙ্গে চলমান শান্তি আলোচনাতেও খুব একটা অগ্রগতি নেই।

চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আফগানিস্তানে যুদ্ধে ইতি টানতে এবং দেশ পুনর্গঠনে তালেবান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদী বেইজিং।

বিবৃতিতে বলা হয়, আফগানিস্তানে চলমান সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান বের করতে তালেবানকে অগ্রণী ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।

একই সঙ্গে চীনের নিরাপত্তায় ঝুঁকি হিসেবে ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্ট বিদ্রোহীদের দমনে তালেবানকে সহযোগিতারও আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং। চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশে সক্রিয় বিদ্রোহী সংগঠনটি।

আফগানিস্তানে বর্তমান সহিংস পরিস্থিতির জন্য পশ্চিমা বিশ্ব তালেবানকে দায়ী করলেও গোষ্ঠীটিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে স্বীকৃতি দিয়েছে চীন। চীনে তালেবানের সফরে সে স্বীকৃতি আরও জোরদার হলো বলে মত নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের।

আরও পড়ুন:
তালেবানের ‘পক্ষে বলায়’ আফগানিস্তানে ৪ সাংবাদিক গ্রেপ্তার
আফগানিস্তানে আবার যেভাবে তালেবান
আফগানিস্তানে ২ মাসে ২৪০০ জনের মৃত্যু: জাতিসংঘ
তালেবানের ভয়ে কান্দাহার ছেড়েছে দেড় লাখ মানুষ
ঈদের নামাজে হামলা: কমান্ডারসহ তালেবানের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
Putin is playing Trump

ট্রাম্পকে খেলাচ্ছেন পুতিন!

ট্রাম্পকে খেলাচ্ছেন পুতিন!

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ভ্যাটিকানের ব্যাসিলিকা প্রাসাদে আলোচনা করেছেন। ইউক্রেনে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে এই আলোচনা হয়। আলোচনার পর ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, তার মনে হচ্ছে পুতিন ‘যুদ্ধ থামাতে চান না’ এবং পুতিন তাকে ‘খেলাচ্ছেন।’ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যের আগে ইউক্রেনীয় নেতার সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকটি ‘খুবই ফলপ্রসূ’ ছিল। অন্যদিকে, জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনাটি ছিল ‘প্রতীকী।’ তিনি বলেন, ‘যদি আমরা যৌথ ফল অর্জন করতে পারি, তবে এটি ঐতিহাসিক হওয়ার সম্ভাবনা রাখে।’

গত ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে সাক্ষাতের পর এটি ছিল ট্রাম্প ও জেলেনস্কির প্রথম মুখোমুখি বৈঠক। সেই সাক্ষাতে ট্রাম্প ও মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ইউক্রেনীয় নেতাকে ব্যাপক তিরস্কার করেন। তারা ইউক্রেনকে দেওয়া মার্কিন সহায়তার প্রতি অকৃতজ্ঞতার অভিযোগও এনেছিলেন।

জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনার পর ট্রাম্প নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পুতিনের সমালোচনা করে একটি পোস্ট করেন। ট্রাম্প লেখেন, ‘গত কয়েক দিন ধরে বেসামরিক এলাকা, শহর ও নগরে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার পুতিনের কোনো কারণ ছিল না। এটি আমাকে ভাবতে বাধ্য করছে, সম্ভবত তিনি যুদ্ধ থামাতে চান না, তিনি শুধু আমাকে খেলিয়ে যাচ্ছেন। তার সঙ্গে ভিন্নভাবে মোকাবিলা করতে হবে, ব্যাংকিং বা দ্বিতীয় নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে? অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে!’

ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ অবসানের প্রচেষ্টায় ওয়াশিংটন দুই দেশের মধ্যে জোরালো মধ্যস্থতা করছে। রাশিয়া ২০২২ সালে ইউক্রেনে আক্রমণ করার পর থেকে যুদ্ধ চলছে। গত শুক্রবার ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ মস্কোয় পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি তিন ঘণ্টা ধরে ওয়াশিংটনের শান্তি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন।

এই বৈঠকের বিষয়ে ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যালে অ্যাকাউন্টে লেখেন, ‘বেশির ভাগ মৌলিক বিষয়ে একমত হওয়া গেছে।’ তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি। তিনি কিয়েভ এবং মস্কোর নেতাদের মধ্যে একটি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন। এই বৈঠকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই করা হবে। তিনি বলেন, চুক্তিটি ‘খুব নিকটবর্তী।’

ট্রাম্প চুক্তি নিয়ে আগ্রহী হলেও, শান্তি প্রতিষ্ঠায় মার্কিন পরিকল্পনা এবং ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের কাছে গ্রহণযোগ্য যুদ্ধবিরতির শর্তাবলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়ে গেছে। রয়টার্স শুক্রবার শান্তির দুটি ভিন্ন পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র মস্কোকে অধিকৃত অঞ্চল ধরে রাখার প্রস্তাব দিচ্ছে। এর মধ্যে কৌশলগত ক্রিমিয়া উপদ্বীপও রয়েছে, যা রাশিয়া ২০১৪ সালে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করে নেয়।

ইউক্রেন এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর কাছে এটি শুরুতেই অগ্রহণযোগ্য বলে মনে হচ্ছে। জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেছেন, এই অঞ্চল ‘ইউক্রেনীয় জনগণের সম্পত্তি।’ ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট কিয়েভে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের অবস্থান অপরিবর্তিত। ইউক্রেনের সংবিধান বলছে, সব সাময়িকভাবে দখলকৃত অঞ্চল...ইউক্রেনের অংশ।’

মস্কো মার্কিন শান্তিচুক্তিতে সম্মত হবে কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়। এই চুক্তিকে রাশিয়ার জন্য যথেষ্ট ছাড় হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত শনিবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ইউক্রেনের সব সৈন্যকে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি মস্কোর একটি প্রধান লক্ষ্য ছিল। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা এই দাবি অস্বীকার করেছেন।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির কারিগরি বিষয়গুলো এখনো ঠিক করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে- রাশিয়ার ওপর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা কীভাবে প্রত্যাহার করা হবে এবং ইউক্রেনকে কী ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়া হবে। ট্রাম্প শুক্রবার স্বীকার করেছেন, আলোচনা ‘খুবই ভঙ্গুর।’ তিনি সতর্ক করেছেন, দুই পক্ষ শিগগিরই একটি চুক্তিতে না পৌঁছালে যুক্তরাষ্ট্র তার মধ্যস্থতা প্রচেষ্টা বন্ধ করে দেবে।

মন্তব্য

তাইওয়ানে অবৈধভাবে বাস করা চীনাদের ওপর ধরপাকড়

তাইওয়ানে অবৈধভাবে বাস করা চীনাদের ওপর ধরপাকড়

চীনা নাগরিকদের মধ্যে যারা অবৈধভাবে তাইওয়ানে বসবাস করছেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ২০ জন তাইওয়ানের নাগরিকত্ব বাতিলসহ চীনা বংশোদ্ভূত কয়েক হাজার তাইওয়ানবাসীর নথিপত্রের তদন্ত চলমান রয়েছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে এমন বলা হয়েছে।

তাইওয়ানের আইন অনুযায়ী, দেশটির নাগরিকদের চীনের নাগরিকত্ব রাখার অনুমতি নেই। যেকারণে গত কয়েক দশকে চীনের নাগরিকত্ব থাকায় শত শত বাসিন্দার তাইওয়ানিজ নাগরিকত্ব কার্যত্ বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে শুরু হওয়া এই অভিযান বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। প্রকাশ্যে তিনজন নারীর নাগরিকত্ব বাতিল করেছে তাইওয়ান সরকার। পাশাপাশি দেশটির ১০ হাজারের বেশি নাগরিক; যারা চীনে জন্মগ্রহণ করলেও তাইওয়ানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন, তাদের একটি অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেওয়ায় এই অভিযানের সমালোচনা শুরু হয়েছে।

নাগরিকদের পরিচয়, আনুগত্য, রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও দেশের নিরাপত্তার মধ্যে সরকার সামঞ্জস্য বজায় রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অনেক তাইওয়ানিজ।

এই অভিযান ও বিতর্কের সূত্রপাত হয় গত ডিসেম্বরে অনলাইনে প্রকাশিত একটি প্রামাণ্যচিত্রকে ঘিরে। চীন গোপনে তাইওয়ানের মানুষকে তাদের দেশের নাগরিকত্ব প্রদান করছে বলে দেখানো হয় সেখানে।

প্রামাণ্যচিত্রে তিনজন ব্যক্তির তথ্য উপস্থাপন করা হয়, যারা চীনের ফুজিয়ান প্রদেশে গিয়ে বাস করতে শুরু করেছিলেন এবং চীনের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন।

এই প্রামাণ্যচিত্র প্রকাশের পর চীনের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানায় তাইওয়ান সরকার। তাইওয়ানের ওপর চীনা কর্তৃত্ব বজায় রাখার অপচেষ্টা থেকেই এই কাজ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করে দেশটির মেইনল্যান্ড অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল (এমএসি)।

প্রামাণ্যচিত্রের সেই তিনজনের মধ্যে একজন সু শিহ। তার ভাষ্যে, ফুজিয়ান প্রদেশে অনেক তাইওয়ানিজ রয়েছে, পাশাপাশি সেখানকার সরকারও উদ্যোক্তাদের নানা রকম ভর্তুকি দিয়ে সহায়তা করেন— এমনটা শুনেই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন।

সু জানান, সেখানে গিয়ে চীনের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন বলে জেনেছিলেন তিনি। এটি তার ব্যবসার জন্য সুবিধাজনক হতে পারে ভেবে তিনি আবেদন করেছিলেন বলে দাবি করেন।

তবে তাইওয়ানের আইনে এই নাগরিকত্ব অবৈধ। যদিও সুয়ের দাবি, অনেক তাইওয়ানিজেরই ফুজিয়ানের নাগরিকত্ব রয়েছে, তারা মূলত এখন রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের শিকার।

চীন-তাইওয়ান দ্বন্দ্ব কেন?

তাইওয়ানকে নিজেদের একটি প্রদেশ বলে দাবি করে বেইজিং। অন্যদিকে নিজেদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দাবি তাইওয়ানের। এ নিয়ে এই অঞ্চলগুলোর বৈরিতা বহু পুরনো।

সাম্প্রতিক সময়ে উত্তেজনা বেড়েছে আরও কয়েকগুণে। তাইওয়ান শান্তিপূর্ণভাবে চীনের সঙ্গে একীভূত না হলে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) সরকার। এমনকি তাইওয়ানের অভ্যন্তরেও সাধারণ নাগরিকসহ সরকার ও সামরিক বাহিনীতে সিসিপি সমর্থিত অনেকে গুপ্তচরবৃত্তি ও তৎপরতা চালান বলে তাইওয়ানের অভিযোগ।

তবে অঞ্চল দুটির মধ্যে উত্তেজনা থাকা সত্ত্বেও চীনের অনেক নাগরিকই তাইওয়ানে বসবাস করে আসছিলেন, আবার তাইওয়ানেরও প্রায় এক লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ চীনে বাস করেন।

তবে গত মার্চে দেশটির অভ্যন্তরে চীনের চলমান গোপন তৎপরতা বন্ধের দাবিতে দুই অঞ্চলের মধ্যে ভ্রমণ ও পুনর্বাসনে কড়াকড়ি আরোপ করেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে।
সে সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চীনের কর্তৃত্ব নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে প্রচারণা চালানোর অভিযোগে তিন চীনা বংশোদ্ভূত নারীর ভিসা বাতিল করে তাইওয়ান সরকার। পরে ওই নারীর তাইওয়ানিজ স্বামী ও সন্তানকে ছেড়ে তাকে চীনে ফেরত পাঠানো হয়।

তাইওয়ানের এ পদক্ষেপের সমালোচনা করে দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেন, তাড়াহুড়ো করে নথিপত্র ঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করেই লোকজনকে নির্বাসিত করা হচ্ছে। স্থানীয় কিছু মানুষজন অভিযোগ করেন, প্রেসিডেন্ট লাই বাক স্বাধীনতা সীমিত করছেন। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট লাই।

লাই জানান, নাগরিকত্ব বাতিল করার আগে দেশটির সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, সেনা সদস্যদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে— তাদের কখনো চীনের নাগরিকত্ব ছিল না। তাছাড়া ১০ হাজারের বেশি সাধারণ জনগণকেও চীনের হুকু (স্থায়ীভাবে চীনের থাকার জন্য এটি দরকার) বাতিলের নথি দাখিল করতে বলা হয়। যারা দাখিল করেনি তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে হুকু বাতিলের প্রমাণ দাখিল না করার জন্য তদন্ত শুরু করেছে তাইওয়ানের জাতীয় অভিবাসন সংস্থা (এনআইএ)। এনআইএ জানায়, যারা হুকু বাতিল করার কাগজ জমা দিয়েছেন, তারা পুনরায় তাইওয়ানের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবে।

তবে তাইওয়ানের সাম্প্রতিক এই পদক্ষেপ নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশটির এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক লিও মেই জুন বলেন, এই নির্বাসন অভিযানে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে চীনা সরকারকে তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের সুযোগ করে দিতে পারে। এতে বেইজিংয়ের প্রপাগান্ডারই বিজয় হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Important Philippines occupied controversial coral reefs to military posts China Report

গুরুত্বপূর্ণ ফিলিপাইন সামরিক পোস্টের কাছে বিতর্কিত প্রবালপ্রাচীর দখল করল চীন

গুরুত্বপূর্ণ ফিলিপাইন সামরিক পোস্টের কাছে বিতর্কিত প্রবালপ্রাচীর দখল করল চীন

চীনের উপকূলরক্ষী বাহিনী দক্ষিণ চীন সাগরে ফিলিপাইনের একটি প্রধান সামরিক ঘাঁটির কাছে বিতর্কিত একটি প্রবালপ্রাচীরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। বেইজিংয়ের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে। এ ঘটনা ম্যানিলার সঙ্গে চীনের দীর্ঘদিনের সীমান্ত উত্তেজনা আরও বাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বেইজিং থেকে এএফপি জানায়, চীন প্রায় পুরো দক্ষিণ চীন সাগরের ওপর সার্বভৌমত্ব দাবি করে আসছে এবং এই দাবির বিরুদ্ধে আঞ্চলিক অন্যান্য দেশের আপত্তি ও আন্তর্জাতিক আদালতের রায়কে আমলে নেয়নি।

চীন ও ফিলিপাইন গত কয়েক মাস ধরে ওই বিতর্কিত জলসীমায় একাধিকবার মুখোমুখি হয়েছে। এদিকে ফিলিপাইন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বড় পরিসরের যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে, যাকে চীন ‘অস্থিতিশীলতাকে উসকে দেওয়া’ বলছে।

রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি শনিবার জানিয়েছে, এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে চীনের উপকূলরক্ষী বাহিনী ‘টাইশিয়ান রিফ’ বা ‘স্যান্ডি কেই’-তে সমুদ্র নিয়ন্ত্রণ কার্যকর করে।

ছোট্ট এই বালুচর স্প্রাটলি দ্বীপপুঞ্জের অংশ এবং থিতু দ্বীপের (ফিলিপাইন ভাষায় ‘পাগ-আসা’) কাছাকাছি, যেখানে একটি ফিলিপাইন সামরিক স্থাপনা রয়েছে।

সিসিটিভি জানায়, উপকূলরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা স্যান্ডি কেই-তে নেমে ‘সার্বভৌমত্ব ও অধিক্ষেত্র প্রয়োগ’, ‘পরিদর্শন’ এবং ‘ফিলিপাইনের বেআইনি কার্যকলাপের ভিডিও প্রমাণ সংগ্রহ’ করেছে।

প্রতিবেদনে একটি ছবি প্রকাশ করা হয় যেখানে দেখা যায়, পাঁচজন কালো পোশাকধারী ব্যক্তি নির্জন ওই প্রবালপ্রাচীরে দাঁড়িয়ে আছেন এবং পাশে একটি কালো রঙের রাবার নৌকা ভাসছে।
আরেকটি ছবিতে চারজন উপকূলরক্ষী সদস্যকে জাতীয় পতাকার সাথে প্রবালপ্রাচীরের ওপর পোজ দিতে দেখা যায়, যেটিকে সিসিটিভি ‘সার্বভৌমত্বের শপথ’ বলে উল্লেখ করে।

সিসিটিভি আরও জানায়, তারা প্রবালপ্রাচীর থেকে ফেলে যাওয়া প্লাস্টিকের বোতল, কাঠের টুকরো এবং অন্যান্য আবর্জনা পরিষ্কার করেছে।

দ্য ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস এক অজ্ঞাতনামা ফিলিপাইন সামুদ্রিক কর্মকর্তার বরাতে জানিয়েছে, পতাকা উত্তোলনের পর চীনা উপকূলরক্ষীরা ওই এলাকা ছেড়ে গেছে।

এখনও পর্যন্ত চীন প্রবালপ্রাচীরে স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন বা কোনো স্থাপনা নির্মাণ করেছে, তার কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

গত কয়েক মাসে দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত অঞ্চলগুলোর পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতির জন্য চীন ও ফিলিপাইন পরস্পরকে দায়ী করে আসছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া শুক্রবার জানায়, দেশটির প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, বেইজিংয়ের ভূমি পুনরুদ্ধার কর্মকাণ্ডে স্থানীয় পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয়নি, ম্যানিলার অভিযোগ মিথ্যা।

থিতু দ্বীপে ফিলিপাইনের সেনা উপস্থিত রয়েছে এবং ২০২৩ সালে সেখানে একটি উপকূলরক্ষী পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র চালু করে ম্যানিলা, চীনের ‘আক্রমণাত্মক মনোভাব’ মোকাবিলার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে।

সোমবার থেকে ফিলিপাইন ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী তিন সপ্তাহব্যাপী বার্ষিক যৌথ মহড়া ‘বালিকাতান’ (অর্থাৎ ‘কাঁধে কাঁধে’) শুরু করেছে। এবারের মহড়ায় প্রথমবারের মতো সমন্বিত আকাশ ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা অনুশীলন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ম্যানিলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইউএস মেরিন কর্পসের লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেমস গ্লিন বলেন, দুই পক্ষ কেবল ১৯৫১ সালের পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি রক্ষার সংকল্পই প্রদর্শন করবে না, বরং তা বাস্তবায়নের ‘অতুলনীয় সক্ষমতাও’ দেখাবে।

তিনি বলেন, ‘‘কোনো কিছুর চেয়ে দ্রুত বন্ধন গড়ে তোলে যৌথ প্রতিকূলতার অভিজ্ঞতা।’’ তবে কোনো নির্দিষ্ট হুমকির নাম তিনি উল্লেখ করেননি।

চীন এ মহড়াকে ‘আঞ্চলিক কৌশলগত স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি’ বলে অভিহিত করেছে এবং ম্যানিলাকে ‘বহিঃআঞ্চলিক দেশগুলোর সঙ্গে ষড়যন্ত্রে’ জড়িত থাকার অভিযোগ করেছে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
India Pakistan tension is ahead of nuclear weapons and overall capacity?

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা, পরমাণু অস্ত্র ও সার্বিক সক্ষমতায় কে এগিয়ে?

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা, পরমাণু অস্ত্র ও সার্বিক সক্ষমতায় কে এগিয়ে? পাকিস্তান এবং ভারতের সমরাস্ত্র। ছবি: সংগৃহীত

পেহেলগামে জঙ্গি হামলার ঘটনায় আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। কাশ্মীরের এই ইস্যুতে পাকিস্তানের ঘাড়েই দোষ চাপাচ্ছে ভারত। ইতোমধ্যে দুদেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু নদের পানি চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে দিল্লি। দিল্লির এমন মারমুখী প্রতিক্রিয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে ইসলামাবাদও।

রীতিমতো যুদ্ধের আশঙ্কা চিরশত্রু এই দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের। প্রশ্ন উঠছে, পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে যদি সত্যিই যুদ্ধ শুরু হয় সেক্ষেত্রে জয়ের সম্ভাবনা কার? যদি যুদ্ধ বেঁধেই যায়, কার জয়ের সম্ভাবনা কতটুকু, তা নিয়েও শুরু হয়েছে বিশ্লেষণ। আলোচনা চলছে কার কত সামরিক ক্ষমতা, তা নিয়েও।

এই সক্ষমতার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো নিয়ে বিশ্লেষণমূলক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মালয়েশিয়াভিত্তিক ‘ডিফেন্স সিকিউরিটি এশিয়া’।

ডিফেন্স সিকিউরিটি এশিয়া জানিয়েছে, ১২৭ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারতের বর্তমান সামরিক বাজেট প্রায় ৭৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অন্যদিকে ১৯ কোটি মানুষের দেশ পাকিস্তানের সামরিক বাজেট ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার।

সামগ্রিক সামরিক র‍্যাঙ্কিং ও সক্ষমতা সূচক

‘জিএফপি ২০২৫’–এ ৬০টির বেশি বিষয়ের (জনশক্তি, সামরিক সরঞ্জাম, অর্থনৈতিক ও ভৌগোলিক অবস্থা ইত্যাদি) ভিত্তিতে ১৪৫টি দেশকে মূল্যায়ন করা হয়েছে। সে অনুযায়ী, সামগ্রিক র‍্যাঙ্কিংয়ে ভারত বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ, সক্ষমতা সূচকে স্কোর ০.১১৮৪ (কম স্কোর মানে বেশি শক্তিশালী সেনাবাহিনী)। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তান বিশ্বে ১২তম, স্কোর ০.২৫১৩।

র‍্যাঙ্কিংয়ে ভারতের এ অবস্থান দেশটির বড় জনসংখ্যা, বৃহত্তর প্রতিরক্ষা বাজেট ও বিস্তৃত পরিসরের সামরিক সম্পদের প্রতিফলন। অন্যদিকে পাকিস্তান ছোট অর্থনীতির কারণে নানা সীমাবদ্ধতা ও বৈদেশিক সরবরাহকারী, বিশেষ করে চীনের ওপর নির্ভরশীলতা সত্ত্বেও ভারতকে মোকাবিলায় কৌশলগত বিষয়গুলোয় মনোযোগী। ফলে নির্দিষ্ট খাতগুলোয় প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে রয়েছে দেশটি।

পারমাণবিক সক্ষমতা

ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই পারমাণবিক ক্ষমতার অধিকারী। তাদের প্রতিরক্ষা কৌশলে এ সক্ষমতার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে ১৩০ থেকে ১৪০টি। ডেলিভারি সিস্টেমের মধ্যে রয়েছে অগ্নি–থ্রি/ফাইভ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (পাল্লা ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার কিলোমিটার), মিরেজ ২ হাজার ও রাফায়েল এবং সামুদ্রিক প্রতিরক্ষায় আইএনএস আরিহান্ট।

পারমাণবিক অস্ত্র আগে ব্যবহার না করার (নো ফার্স্ট ইউজ/এনএফইউ) নীতির পক্ষে ভারত। তবে এ ধরনের হামলার শিকার হলে ব্যাপক আকারে প্রতিশোধমূলক হামলার পক্ষে দেশটি।

অন্যদিকে পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ১৪০ থেকে ১৫০। এদিক থেকে পাকিস্তানের সক্ষমতা ভারতের চেয়ে বেশি। ডেলিভারি সিস্টেমের মধ্যে আছে শাহিন–টু/থ্রি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাত্র, এফ–১৬ যুদ্ধবিমান, বাবর ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের ক্ষেত্রে দেশটি ‘ফুল–স্পেকট্রাম ডেটারেন্স’ নীতি অনুসরণের পক্ষপাতী। এ নীতিতে যুদ্ধক্ষেত্রে দেশটি প্রয়োজনে আগেভাগে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।

সেনা সংখ্যা

ভারতের সক্রিয় সেনা সংখ্যা ২১ লাখ ৪০ হাজার। রিজার্ভে রয়েছে ১১ লাখ ৫৫ হাজার সৈন্য। এছাড়াও, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে মিলবে ৩১ কোটি সেনা। অপরদিকে, পাকিস্তানে সক্রিয় সেনা রয়েছে ৬ লাখ ৫৩ হাজার। রিজার্ভে রয়েছে ৫ লাখ ১৩ হাজার সেনা। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে দেশটিতে মিলবে চার কোটি সেনা।

স্থলবাহিনী

ভারতের স্থলবাহিনীর হাতে রয়েছে চার হাজার ৬১৪টি ট্যাংক। সামরিক যান রয়েছে পাঁচ হাজার ৬৮১টি। রকেট আর্টিলারি রয়েছে ২৯২টি। পাকিস্তানের স্থলবাহিনীর রয়েছে দুই হাজার ৭৩৫টি ট্যাংক। সামরিকযান রয়েছে তিন হাজার ৬৬টি। রকেট আর্টিলারি রয়েছে ১৩৪টি।

বিমান বাহিনী

ভারতের যুদ্ধবিমান রয়েছে দুই হাজার ২১৬টি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে রাশিয়ায় তৈরি মিগ-২১, মিগ-২৭, মিগ-২৯, সুখোই-৩০এমকেআই, ব্রিটেন-ফ্রান্সের তৈরি জাগুয়ার এবং ফ্রান্সের তৈরি মিরেজ ২০০০। পাকিস্তানের যুদ্ধবিমান রয়েছে এক হাজার ১৪৩টি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে চীনের তৈরি এফ-৭পিজি এবং যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-১৬ ফেলকন।

নৌবাহিনী

আমর্ডফোর্সেসের হিসাবে ভারতের নৌবাহিনীর রয়েছে ১৫টি সাবমেরিন, ১৫টি ফ্রিগেট, ১১টি ডেস্ট্রয়ার এবং বিমানবহনকারী জাহাজ দুটি। অন্যদিকে পাকিস্তানের রয়েছে পাঁচটি সাবমেরিন এবং ৯টি ফ্রিগেট।

প্রতিরক্ষা বাজেট

ভারতের বাজেট (২০২৫-২৬) ৭ হাজার ৯০০ কোটি ডলার (যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পর তৃতীয়)। এটি জিডিপির ২ দশমিক ১ শতাংশ। এ ব্যয় পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। পাকিস্তানের বাজেট ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ কোটি ডলার (অর্থনৈতিক সংকটের কারণে শীর্ষ দেশের তালিকায় নেই)। এ ব্যয় জিডিপির ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। বৈদেশিক সামরিক সহায়তা ১০ কোটি ডলার (মূলত চীন ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে)।

ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেট পাকিস্তানের ৬ থেকে ৮ গুণ। এ বিপুল প্রতিরক্ষা ব্যয় ভারতের সামরিক খাতে প্রযুক্তি ও অবকাঠামোগত এবং জনশক্তির আধুনিকীকরণে আরও বেশি বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে সহায়ক হচ্ছে। পাকিস্তান বাজেট–সংকটে ভুগলেও চীনের সহায়তা এটিকে সামাল দিচ্ছে। পাকিস্তানের সামরিক ব্যয়ের বড় অংশ ব্যয় হয় বৃহৎ সে

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Indo Pakistan Tension Saudi Iran arrives in mediation

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: মধ্যস্থতায় এগিয়ে এলো সৌদি-ইরান

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: মধ্যস্থতায় এগিয়ে এলো সৌদি-ইরান ভিসা বাতিলের পর নিজ নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছেন ভারত-পাকিস্তানের নাগরিকরা। ছবি: সংগৃহীত

অধিকৃত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিরসনে দুই দেশকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে মিত্র দেশ সৌদি আরব ও ইরান। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে দেশ দুটির মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছে তারা।

পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ভারতের ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন সৌদি ও ইরানের সমকক্ষ কর্মকর্তারা।

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই পর্যটক ছিলেন। এ ঘটনায় পাকিস্তান জড়িত বলে অভিযোগ করেছে চিরবৈরী ভারত। যদিও হামলার সঙ্গে কোনোরকম সংশ্লিষ্টতার দায় অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।

এতে দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর দুই দেশের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি হয়।

ভারতের দাবি, পাকিস্তানের সেনারা প্রথমে গুলি ছুড়েছে, তারাও পাল্টা জবাব দিয়েছে। তবে বেসামরিক জনগণের ওপর কোনো গোলাগুলি করা হয়নি বলে উভয় পক্ষ থেকেই নিশ্চিত করা হয়েছে।

এর আগে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ফিরে ভিসা বাতিল করে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এতে ভারত ও পাকিস্তানের নাগরিকেরা নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে শুরু করেন।

এ পরিস্থিতিতে দেশদুটির মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসনে এগিয়ে এসেছে দুই দেশের মিত্র ইরান ও সৌদি। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শুক্রবার সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান পাকিস্তানের তার সমকক্ষ ইসহাক দারের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন।

এ সময় আলাপে ভারতের অভিযোগগুলো প্রত্যাখান করেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার বিষয়েও সতর্ক করেছেন তিনি।

পাশাপাশি ভারতের যেকোনো আগ্রাসনের কড়া জবাব দিতে পাকিস্তান দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলেও উল্লেখ করেন ইসহাক দার। তবে সৌদির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতেও সম্মত হয়েছেন তিনি।

এদিকে সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, তিনি পহেলগামে হামলার বিষয়ে প্রিন্স ফয়সালের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন। এ সময়ে হামলার সঙ্গে সীমান্ত-যোগসূত্র (ক্রস-বর্ডার লিঙ্কেজ) নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

অন্যদিকে দিল্লি-ইসলামাবাদের মধ্যকার চলমান উত্তেজনা নিরসনে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছে ইরান।

এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশই ইরানের মিত্র। চলমান এই কঠিন পরিস্থিতিতে ইরান দেশদুটিতে তাদের সুপ্রতিষ্ঠিত প্রভাব কাজে লাগিয়ে সমঝোতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।’

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন পাকিস্তানের ইসহাক দার। শুক্রবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, ‘কোনো দেশ যদি ভারতের সঙ্গে তাদের মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেয়, তারা বিষয়টি বিবেচনা করবেন।’

এদিকে দুই প্রতিবেশীর মধ্যকার এই উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনে তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
India will actually stop the river water flow in Pakistan

পাকিস্তানে নদীর পানিপ্রবাহ আসলেই বন্ধ করতে পারবে ভারত!

বিবিসির বিশ্লেষণ
পাকিস্তানে নদীর পানিপ্রবাহ আসলেই বন্ধ করতে পারবে ভারত! ছবি: সংগৃহীত

কাশ্মীরে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর ইন্দাস নদীর পানিবণ্টন নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার ঐতিহাসিক চুক্তি ‘ইন্দাস ওয়াটারস ট্রিটি’ কার্যত স্থগিত করেছে ভারত। ১৯৬০ সালে সই হওয়া এ চুক্তিটি দুই দেশের মধ্যে সংঘটিত দুটি যুদ্ধের মধ্যেও গত মঙ্গলবারের ওই হামলার আগে পর্যন্ত বহাল ছিল। এ ছাড়াও এটি আন্তর্জাতিক সীমান্তের পানি ব্যবস্থাপনার এক সফল উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এবার ভারত এই চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে কার্যক্রম স্থগিত করায় দুই দেশের মধ্যে তৈরি হয়েছে নতুন উত্তেজনা।

ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদে মদদ দিচ্ছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যদি ভারত পানি বন্ধ করে দেয়, তাহলে সেটি ‘যুদ্ধ ঘোষণার শামিল’ হবে।

চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্তের পর থেকে প্রশ্ন উঠেছে, ভারত কি সত্যিই পাকিস্তানের পানিপ্রবাহ বন্ধ করতে পারবে? বিশেষ করে ইন্দাস অববাহিকার সেই তিনটি নদীর প্রবাহ, যেগুলো পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দ। চুক্তি অনুযায়ী ইন্দাস অববাহিকার রাভি, বিয়াস এবং শতদ্রু ভারতের জন্য বরাদ্দ থাকলেও ইন্দাস, ঝেলম এবং চেনাব নদীর পানির ৮০ শতাংশ পাকিস্তান পায়। পাকিস্তানের কৃষি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের বড় একটি অংশ এই পানির ওপর নির্ভরশীল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের বিদ্যমান অবকাঠামো দিয়ে এ বিশাল পরিমাণ পানি আটকে রাখা বা অন্যদিকে প্রবাহিত করা বাস্তবে খুব একটা সম্ভব নয়। ভারতের অধিকাংশ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পই ‘রান-অব-দ্য-রিভার’ বা পানির প্রবাহকে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রযুক্তিনির্ভর, যেখানে বড় আকারে পানি জমিয়ে রাখার ব্যবস্থা নেই। ফলে বর্ষার সময় বিশাল এই জলপ্রবাহ আটকে বা ঠেকিয়ে রাখা কঠিন।

তবে ভারত যদি চুক্তির বাধ্যবাধকতা ছাড়া নতুন বাঁধ বা অবকাঠামো নির্মাণে যায়, তাহলে শুকনো মৌসুমে এর প্রভাব পাকিস্তানের ওপর ভয়াবহ হতে পারে। কারণ, তখন নদীতে স্বাভাবিকভাবে পানির প্রবাহ কম থাকে এবং ভারত যদি সেই পানি ধরে রাখে, তবে পাকিস্তানের কৃষি ও জনজীবন বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, চুক্তি অনুযায়ী ভারতকে পানিপ্রবাহ ও বন্যা সম্পর্কিত তথ্য পাকিস্তানের সঙ্গে ভাগ করে নিতে হয়। এখন চুক্তি স্থগিতের ফলে ভারত চাইলে এ তথ্য পাকিস্তানকে জানানো বন্ধ করে দিতে পারে। পাকিস্তানের সাবেক কর্মকর্তাদের অভিযোগ, আগেও ভারত এ-সংক্রান্ত মাত্র ৪০ শতাংশ তথ্য পাকিস্তানকে দিত।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একে ‘ওয়াটার বম্ব’ হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব। অর্থাৎ উজানের দেশ হিসেবে ভারত যদি হঠাৎ পানি আটকে রাখে এবং পরে আকস্মিক তা ছেড়ে দেয়, তাহলে ভাটিতে ভয়াবহ বন্যা হতে পারে। এতে ভারতের নিজস্ব এলাকাও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে। এ প্রসঙ্গে আরও একটি কৌশলগত দিকও সামনে এসেছে। ইন্দাস নদীর উৎস চীনের তিব্বতে। ২০১৬ সালে ভারতের হুঁশিয়ারির পর চীন একবার ব্রহ্মপুত্র নদের একটি উপনদী আটকে দিয়েছিল। এখন চীন তিব্বতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাঁধ নির্মাণ করছে, যা ভারতের জন্যও উদ্বেগের বিষয়।

সব মিলিয়ে, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক চাপে নেওয়া ভারতের এই পানিচুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্তের বাস্তব রূপায়ণ সহজ নয়। তবে শুষ্ক মৌসুমে এর কৌশলগত প্রভাব পাকিস্তানের জন্য ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।

মন্তব্য

কাশ্মীরে হামলা ভারতের ‘সাজানো নাটক’

পাকিস্তানের দাবি
কাশ্মীরে হামলা ভারতের ‘সাজানো নাটক’ পাকিস্তানের সিনেটে সর্বসম্মতিক্রমে ভারতবিরোধী বিল পাস। ছবি: সংগৃহীত
ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে দোষারোপ করা হচ্ছে

সম্প্রতি ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ হামলা চালানো হয়। এতে কয়েকজন নিহত হয়েছেন। এ হামলাকে ভারত সরকারের ‘সাজানো নাটক’ বলে দাবি করেছে পাকিস্তান। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারত যেন এ ধরনের ‘নিন্দনীয় কর্মকাণ্ড’ থেকে সরে আসে। বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারত যেন পেহেলগাম হামলার মতো ঘটনা ‘পরিকল্পিতভাবে সাজিয়ে, পরিচালনা করে এবং রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে কাজে লাগানোর’ পথ পরিহার করে। গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুকধারীদের গুলিতে কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ২৫ জন ভারতের ও একজন নেপালের নাগরিক। এ সময় আহত হন আরও ১৭ জন। এ ঘটনায় ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে দোষারোপ করা হচ্ছে।

পেহেলগাম হামলায় পাকিস্তানকে দায়ী করার ভারতের এই প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করে গতকাল শুক্রবার পাকিস্তানি সিনেট সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব পাস করেছে। প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার। এতে বলা হয়, পাকিস্তান তার সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষায় সম্পূর্ণ সক্ষম ও প্রস্তুত রয়েছে-হোক তা পানিসন্ত্রাস কিংবা সামরিক উসকানি।

প্রস্তাবে বলা হয়, পেহেলগাম হামলার সঙ্গে পাকিস্তানকে জড়ানোর ভারতের যে ‘ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চেষ্টা’, তা সিনেট স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। একই সঙ্গে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের ‘পরিকল্পিত ও অসৎ প্রচারাভিযান’-এরও তীব্র নিন্দা জানানো হয়।

প্রস্তাবে ভারত কর্তৃক ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানিচুক্তিকে একতরফাভাবে স্থগিত করাকে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল বলে উল্লেখ করা হয়। এ চুক্তি বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত হয়েছিল এবং দশকের পর দশক ধরে যুদ্ধ ও বৈরিতার মধ্যেও টিকে ছিল। পেহেলগাম হামলার পর ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে, কূটনৈতিক সম্পর্ক কমিয়ে দেয় এবং ইসলামাবাদকে ‘সীমান্তপাড়ে সন্ত্রাসে মদদদাতা’ হিসেবে অভিযুক্ত করে পদক্ষেপ নেয়।

সিনেটের প্রস্তাবে আরও বলা হয়, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান যেভাবে ভারতের আগ্রাসনের জবাব দিয়েছে, ভবিষ্যতেও যেকোনো ভুল পদক্ষেপের মুখে কঠোর ও সঠিক জবাব দেওয়া হবে। প্রস্তাব পেশকালে ইসহাক দার বলেন, কেউ যদি পাকিস্তানে আগ্রাসনের চিন্তা করে, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুত। অতীতে যেমন জবাব দিয়েছি, এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। তিনি সতর্ক করে বলেন, ভারতের এমন কোনো পদক্ষেপ পুরো অঞ্চলজুড়ে শান্তি, স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন ও দারিদ্র্য হ্রাসের প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করবে।

মন্তব্য

p
উপরে