× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
Mahmud Khalil can be expelled from the United States Judge
google_news print-icon

যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাহমুদ খলিলকে বের করে দেওয়া যেতে পারে: বিচারক

যুক্তরাষ্ট্র-থেকে-মাহমুদ-খলিলকে-বের-করে-দেওয়া-যেতে-পারে-বিচারক
যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার হওয়া ফিলিস্তিনি যুবক মাহমুদ খলিল। ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদ করায় গ্রেপ্তার হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া যেতে পারে বলে রায় দিয়েছেন লুইজিয়ানার অভিবাসন আদালতের বিচারক জেমি কোমান্স।

গ্রেপ্তারের প্রায় মাসখানেক পরে স্থানীয় সময় শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এই রায় ঘোষণা করেন বিচারক। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন মাহমুদের আইনজীবীরা। আগামী ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত আপিলের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন বিচারক। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই এমন খবর দিয়েছে।

গত বসন্তে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে সংঘটিত বিক্ষোভে জড়িত থাকার কারণে এ বছরের ৮ মার্চ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা। এরপর থেকে লুইজিয়ানার জেনা শহরে একটি অভিবাসী আটককেন্দ্রে ছিলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইহুদিবিদ্বেষী বিক্ষোভ বন্ধের অভিযানের প্রথম শিকার ৩০ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি যুবক। মাহমুদ খলিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের শিক্ষার্থী। যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের গ্রিনকার্ড রয়েছে তার। গ্রেপ্তারের পরই তার গ্রিনকার্ড বাতিলের কথা জানায় ওয়াশিংটন।

শুক্রবারের এই রায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ফিলিস্তিন-সমর্থিত গ্রিনকার্ডধারী ও ভিসাধারীদের কণ্ঠরোধ ও দমনপীড়নের পথ প্রশস্ত করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

মাহমুদের আইনজীবী ও আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস-নিউ জার্সির নির্বাহী পরিচালক অমল সিনহা বলেছেন, ‘তাড়াহুড়ো করে দেওয়া আদালতের এই রায় পুরোপুরি ভিত্তিহীন। সরকার পক্ষ নিজেদের সমর্থনে তেমন কোনো প্রমাণই উপস্থাপন করতে পারেনি, আসলে তাদের কাছে কোনো প্রমাণই তো নেই মাহমুদের বিরুদ্ধে।’

এই রায়কে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মতামতের লজ্জাজনক অনুসরণ বলে অভিহিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটসের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ডিয়ালা শামাস।

গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ১৯৫২ সালের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের উদাহরণ দিয়ে রুবিও বলেছিলেন, ‘মাহমুদের কার্যকলাপ মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, এজন্য তাকে বিতাড়িত করা উচিত।’

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যকে অগ্রাহ্য করার এখতিয়ার তার নেই বলে জানিয়েছেন বিচারক কোমান্স। তাছাড়া মাহমুদকে বিতাড়িত করতে প্রশাসন তাদের যুক্তি প্রমাণ করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

খলিলের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, লুইজিয়ানার যে আদালতে মাহমুদের মামলার শুনানি হয়েছে, সেখানকার বিচারকরা ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে এই রায় দিয়েছেন।

তারা জানান, ১৯৫২ সালের অভিবাসন আইনের অধীনে নেওয়া সিদ্ধান্তের ‘যুক্তিসংগত কারণ’ সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বিচারকের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। বিচারক সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন।

এদিকে, মাহমুদকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দিতে এই রায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য এই রায়কে উল্লেখযোগ্য বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।

কারণ গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউসে ফিরেই ট্রাম্প অঙ্গীকার করেছিলেন, গত বছর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিপন্থি প্রতিবাদী আন্দোলনে জড়িত কিছু বিদেশি শিক্ষার্থীকে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেবেন। এই আন্দোলনকে তিনি ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে অভিহিত করেন।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যম জেটো নিউজের এক খবরে জানা যায়, রায় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে খলিল বলেন, ‘এই আদালত ঠিক সেটিই করেছেন, ঠিক যে উদ্দেশ্যে আমার পরিবার থেকে প্রায় এক হাজার মাইল দূরে আমাকে পাঠিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। আমি আশা করি যে দ্রুততার সঙ্গে আমার ঘটনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, একইরকম যেন মাসের পর মাস আটকে থাকা বন্দিদের বিষয়েও আদালত দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়।’

ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে গত বসন্তে বিক্ষোভ করায় খলিলের মতো আরও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছেন অভিবাসন কর্মকর্তারা। তাদেরও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মাহমুদকে গ্রেপ্তারের পর তার আইনজীবী কিংবা তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে না জানিয়েই তাকে লুইজিয়ানাতে স্থানান্তর করা হয়, যদিও তার মামলাটি নিউ জার্সির একটি আদালতে বিচারাধীন ছিল।

এর আগে তার গ্রেপ্তারের ঘটনাটি মার্কিন সংবিধানের প্রথম ও পঞ্চম সংশোধনীর আওতায় দেওয়া বাক্‌স্বাধীনতার সুরক্ষাকে লঙ্ঘন করছে কি না সে বিষয়ে হাবিয়েস পিটিশন করেছিল তার আইনজীবীরা।

শুক্রবারের রায় ঘোষণার পর মাহমুদ খলিলের আইনজীবীরা বলেন, ‘মাহমুদকে বিতাড়ন করা আটকাতে লড়াই এখনও শেষ হয়নি। তার পরিবারের কাছে তাকে ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।’

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
Hamas expect real progress in the Cairo discussion to stop the Gaza War

গাজা যুদ্ধ বন্ধে কায়রো আলোচনায় ‘বাস্তব অগ্রগতির’ প্রত্যাশা হামাসের

গাজা যুদ্ধ বন্ধে কায়রো আলোচনায় ‘বাস্তব অগ্রগতির’ প্রত্যাশা হামাসের

গাজা যুদ্ধ বন্ধে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির দিকে ‘বাস্তব অগ্রগতির’ প্রত্যাশা করছে হামাস—শনিবার কায়রোতে মিসরীয় মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে ফিলিস্তিনি সংগঠনটির শীর্ষ নেতাদের বৈঠকের প্রেক্ষাপটে এক কর্মকর্তা এ কথা জানান।

গাজা সিটি থেকে এএফপি জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজায় জিম্মিদের মুক্তি চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে উল্লেখ করেছেন এমন এক সময় এ আলোচনা শুরু হচ্ছে।

এক হামাস কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, তারা আশা করছেন মিসরীয় মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বৈঠকে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি হবে।

যুদ্ধবিরতির আলোচনায় সংশ্লিষ্ট বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমরা আশা করি, বৈঠকে যুদ্ধ অবসান, আগ্রাসন বন্ধ এবং গাজা থেকে দখলদার বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের লক্ষ্যে একটি চুক্তির পথে বাস্তব অগ্রগতি অর্জিত হবে।’

সংগঠনটির প্রধান আলোচক খালিল আল-হাইয়া প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন বলে জানান তিনি।

তার ভাষ্য মতে, ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি সংক্রান্ত খসড়া নথিপত্র বিনিময়ের কথা বলা হলেও হামাস এখনও নতুন কোনো যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পায়নি।

তিনি আরও বলেন, ‘তবে মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ ও আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।’ তিনি ইসরাইলের বিরুদ্ধে গাজায় ‘আগ্রাসন চালিয়ে যাওয়ার’ অভিযোগও করেন।

ইসরাইলের অভিযান অব্যাহত

টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, মিসরের প্রস্তাবের আওতায় আট জীবিত জিম্মি ও আট মৃতদেহ মুক্তি দেওয়া হতে পারে। এর বিনিময়ে ৪০ থেকে ৭০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতি এবং বিপুলসংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দিমুক্তির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

সপ্তাহের শুরুতে হোয়াইট হাউজে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা (গাজায় থাকা) জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গেছি।’

ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক মার্কিন দূত স্টিভ উইটকফকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে, এটি এখন কেবল কয়েক দিনের ব্যাপার।’

ইসরাইল ১৮ মার্চ থেকে গাজায় আবার হামলা শুরু করে, যা দুই মাসব্যাপী যুদ্ধবিরতির ইতি টানে।

হামাস-শাসিত গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এরপর থেকে ১,৫০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। উল্লেখ্য, এক মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় ত্রাণ সহায়তা বন্ধ রেখেছে ইসরাইল।

জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব হামলার অনেকগুলোতে ‘শুধু নারী ও শিশু’ নিহত হয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে আরও সতর্ক করে বলা হয়, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ যেভাবে গাজাবাসীকে নতুন এলাকায় সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে, তা জনগণকে জোরপূর্বক ক্রমেই সংকুচিত জায়গায় ঠেলে দিচ্ছে এবং এতে গাজায় ‘ফিলিস্তিনিদের একটি জনগোষ্ঠী হিসেবে টিকে থাকার ভবিষ্যৎ নিয়ে বাস্তব উদ্বেগ’ তৈরি হয়েছে।

শনিবারও ইসরায়েলের অভিযান অব্যাহত ছিল।

গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানায়, ওইদিন সকালে গাজা সিটিতে একটি বাড়িতে ইসরাইলি বিমান হামলা চালানো হয়।

হামলার পর এএফপির ধারণ করা ভিডিওতে স্থানীয় একটি হাসপাতালে সাদা কাফনে মোড়ানো চার পুরুষের মরদেহ দেখা যায়। দাফনের আগে কয়েকজন ব্যক্তি প্রার্থনায় অংশ নেন।

১৭ মার্চ শেষ হওয়া যুদ্ধবিরতিতে গাজা থেকে ৩৩ জন জিম্মি মুক্তি পেয়েছিল— যাদের মধ্যে আটজন মৃত ছিলেন। একই সময়ে ইসরাইলের কারাগার থেকে প্রায় ১,৮০০ ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পায়।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ইসরাইল আক্রমণের মাধ্যমে গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। এতে ১,২১৮ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই ছিল, ইসরাইলি সরকারি পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এএফপির হিসাব অনুযায়ী বেসামরিক মানুষ।

মারাত্মক ওই হামলায় হামাস ২৫১ জনকে জিম্মি করে, যাদের মধ্যে এখনো ৫৮ জন গাজায় রয়েছে—এদের মধ্যে ৩৪ জনকে মৃত বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শুক্রবার জানিয়েছে, ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভাঙার পর থেকে অন্তত ১,৫৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, ফলে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০,৯১২ জনে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Waqf Act will not be in force in West Bengal Mamata

ওয়াকফ আইন পশ্চিমবঙ্গে বলবৎ হবে না: মমতা

ওয়াকফ আইন পশ্চিমবঙ্গে বলবৎ হবে না: মমতা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের ওয়াকফ আইন পশ্চিমবঙ্গে বলবৎ করা হবে না বলে জানিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এই আইন রাজ্য সরকার সমর্থন করে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে সামাজিকমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন। মমতা বলেন, ‘বাংলায় তা বলবৎও হবে না। তা হলে হিংসা কেন? যারা এই হিংসায় উসকানি দিচ্ছেন, তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

আনন্দবাজার পত্রিকার অনলাইনে এমন খবর দেওয়া হয়েছে।

তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী বলেন, ‘সেই আইনটি কিন্তু আমরা করিনি। আইনটি কেন্দ্রীয় সরকার করেছে। তাই উত্তর যা চাওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চাইতে হবে।’

রাজনৈতিক দলের চক্রান্তের কথাও উল্লেখ করে মমতা, ‘কিছু রাজনৈতিক দল ধর্মকে অপব্যবহার করে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চাইছে। তাদের প্ররোচনায় পা দেবেন না। আমি মনে করি, ধর্ম মানে মানবিকতা, সহৃদয়তা, সভ্যতা ও সম্প্রীতি।’ এ সময়ে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ভারতের ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে দেশটির নানা প্রান্তে তীব্র বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ হচ্ছে। পাশাপাশি দেশের শীর্ষ আদালতেও আইনটি বাতিল করার দাবিতে একাধিক পিটিশন জমা পড়েছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি সাংবিধানিক বেঞ্চ আগামী সপ্তাহেই এই মামলাগুলো শুনবে।

অন্য দিকে উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ওই রাজ্যের হাজার হাজার বিতর্কিত ওয়াকফ সম্পত্তি চিহ্নিত করে তা বাজেয়াপ্ত করার জন্য উদ্যোগ শুরু করে দিয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। ভারতে সব চেয়ে বেশি ওয়াকফ সম্পত্তি আছে উত্তরপ্রদেশেই।

ওই একই রাজ্যের মুজফফরনগরে গত শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় হাতে কালো আর্মব্যান্ড পরে নতুন আইনটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তিন শতাধিক ব্যক্তিকে নোটিশ পাঠিয়ে মাথাপিছু ২ লাখ রুপি করে জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়ও আইনপির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হচ্ছে। গেল বৃহস্পতিবার কলকাতায় এক বিশাল সমাবেশ থেকে ওয়াকফ আইন বাতিল করার দাবিতে কম করে এক কোটি মানুষের স্বাক্ষর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে মুসলিম সংগঠন জমিয়ত-ই-উলেমা হিন্দ।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Gaza War Protest Israel

গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদ: সেনাদের বরখাস্তের ঘোষণা ইসরায়েলের

গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদ: সেনাদের বরখাস্তের ঘোষণা ইসরায়েলের জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে বিক্ষোভরত দেশটির হাজরো মানুষ। ছবি: এপি

গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের সমালোচনা করে প্রকাশিত একটি খোলাচিঠিতে সই করা দেশটির বিমানবাহিনীর রিজার্ভ (অনিয়মিত বা খণ্ডকালীন সেনা) সেনাদের মধ্যে কর্তব্যরত সবাইকে বরখাস্ত করার ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।

স্থানীয় সময় শুক্রবার ( ১১ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) এক কর্মকর্তা।-খবর এসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি)।

এপিতে পাঠানো এক বিবৃতিতে আইডিএফের এক সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘রিজার্ভ সদস্যদের মধ্যে সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব থাকা সেনাসহ অন্য কারোরই অধিকার নেই সামরিক মর্যাদাকে কাজে লাগিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া।’

যুদ্ধে সক্রিয় থাকা অবস্থায় খোলা চিঠিতে সই করে সেনারা তাদের বাহিনীর কমান্ডার ও অধীনদের মধ্যকার শৃঙ্খলা ও আস্থা ভঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ করেন ওই কর্মকর্তা।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বর্তমানে যুদ্ধে কর্তব্যরত রয়েছেন এমন যেসব সদস্য ওই খোলাচিঠিতে সই করেছেন, তাদের বরখাস্ত করা হবে। তবে ঠিক কতজন সদস্যকে বরখাস্ত করা হবে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে গাজায় হামলা শুরু করায় ইসরায়েল প্রশাসনের সমালোচনা করে দেশটির গণমাধ্যমে একটি খোলাচিঠি প্রকাশিত হয়। সেখানে অবসরপ্রাপ্ত সেনাসহ বিমানবাহিনীর রিজার্ভ সেনাদের মধ্যে প্রায় ১ হাজার সদস্যরা সই করেন।

ইসরায়েলে প্রশাসন রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে বলে তারা খোলাচিঠিতে অভিযোগ করেন। তাছাড়া হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্ত করতে প্রশাসনের ব্যর্থতারও সমালোচনা করা হয়। প্রয়োজনে যুদ্ধ বন্ধ করে হলেও জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার প্রতি জোর দেন তারা।

এমন এক সময়ে এই খোলাচিঠি প্রকাশিত হয়েছে, যখন হামাসের হাতে থাকা বাকি জিম্মিদের ফেরানোর অজুহাতে পুনরায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। উপত্যকাটিতে খাদ্য, জ্বালানিসহ জরুরি মানবিক সেবার প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে ইসরায়েল প্রশাসন।

হামাসের হাতে থাকা ৫৯ জিম্মির মধ্যে প্রায় অর্ধেকই মৃত বলে জানা গেছে। হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েলের হামলাতেই তারা প্রাণ হারিয়েছেন। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে গাজায় পুনরায় ইসরায়েল হামলা শুরু করলে বাকি জীবিত জিম্মিদের প্রাণও ঝুঁকিতে পড়ার কথা জানায় হামাস।

তবে এতে ভ্রূক্ষেপ না করেই ভয়াবহ হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। খোলাচিঠিতে সই করা সেনারা নিজেদের দায়িত্ব পালনে অপারগতার কথা না জানালেও গাজায় যা হচ্ছে তা নৈতিকতা বিরুদ্ধ বলে মন্তব্য করেন।

এই চিঠির নেতৃত্বে থাকা বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত পাইলট গাই পোরান বলেন, ‘ইসরায়েলি প্রশাসনের গাজায় এই হামলা শুরু করার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি অযৌক্তিক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন। এতে তারা জিম্মি ও ইসরায়েলের বহুসেনাসহ নিরাপরাধ ফিলিস্তিনিদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলেছে। অথচ এই হামলার সুস্পষ্ট বিকল্প কিন্তু প্রশাসনের হাতে ছিল।’

তবে চিঠিতে সই করা সেনাদের মধ্যে কাউকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে তার জানা নেই উল্লেখ করে গাই বলেন, ‘কেউ বরখাস্ত হয়েছে বলে শুনিনি আমি, তবে চিঠি প্রকাশের পর আরও অনেক সেনা এতে সই করছেন।’

এই চিঠি প্রকাশের ঘটনাকে তাচ্ছিল্য করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘বিদেশি কিছু এনজিওর অর্থায়নে এক ঝাঁক আগাছা এই কাজ করেছে। ডানপন্থি জোট সরকারের পতনের উদ্দেশ্যেই তারা এসব করছে।’

সাধারণত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ইসরায়েলের সেনাদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ, তাই প্রশাসনের যেকোনো সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে খুব কমই তাদের প্রতিবাদ করতে শোনা যায়। তবে বর্তমানে চিত্র বদলাচ্ছে।

২০২৩ সালে ৭ অক্টোবরের হামলার পর গাজায় যুদ্ধ চালানোর বিষয়ে সবাই একমত হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভিন্নমত বাড়ছে। গাজায় অব্যাহত হামলার সমালোচনা বেড়েই চলেছে ইসরায়েলের অভ্যন্তরে। বিশেষত যুদ্ধে সেনাদের নিহতের সংখ্যা বাড়ার কারণে ও জিম্মিদের মুক্তিতে ব্যর্থতায় নেতানিয়াহু প্রশাসন সমালোচনার মুখে পড়েছে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
The tensions surrounded the China US trade war

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে ক্যাপশন: ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং শি চিনপিং

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান টানাপোড়েন আরও বাড়ছে। বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনৈতিক পরাশক্তির মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। এই উত্তেজনা এখন পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যযুদ্ধে রূপ নিচ্ছে। সব দেশের ওপর পালটা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করলেও চীনের পণ্যে স্থগিত না করে উল্টো শুল্ক ২১ শতাংশ বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এদিকে মার্কিন পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করেছে চীন।

যুক্তরাষ্ট্রে গত বছর চীন প্রায় ৪৩৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র ১৪৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য চীনে রপ্তানি করেছে। নতুন শুল্কের কারণে উভয় দেশের শিল্পক্ষেত্রে তীব্র সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। মার্কিন শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো অতিরিক্ত খরচ, কর্মী ছাঁটাই এবং প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে।

শুল্ক যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ৮০ শতাংশ বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা। এতে বৈশ্বিক জিডিপি ৭ শতাংশ কমে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, চীনকে মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী গোপন অস্ত্র আছে। তিনি বলেছেন, এসব অস্ত্রের ভয়াবহতা সম্পর্কে কেউ কখনো ধারণাও করতে পারবে না। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সামরিক ক্ষমতার পাশাপাশি আরও শক্তিশালী অস্ত্র আছে।

গত বুধবার ওভাল অফিসে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, চীনের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং সম্ভাব্য বাণিজ্য যুদ্ধ নিয়ে আপনি আতঙ্কিত কি-না। জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিশ্বের অন্যতম একজন স্মার্ট লোক। তিনি এমন কাজ করবেন না। ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র খুবই শক্তিশালী দেশ। এই দেশটির এত ক্ষমতা ও অস্ত্র আছে যে, বিশ্বের কেউ সেই সম্পর্কে ধারণাই করতে পারে না।

এদিকে চীন ও ইউরোপের কাছেও অস্ত্র আছে। সেটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে সয়া বীজ। এই বীজ যে কোনো আকারে পুরো বীজ, পশুখাদ্য বা তেল হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি শিল্পের একটি মূল উপাদান। এটি আমেরিকার কৃষি আয়ের অন্যতম বড় উৎস এবং দেশের জিডিপির প্রায় ০.৬ শতাংশের সমান। মার্কিন কৃষি বিভাগ অনুযায়ী, বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে সয়া বীজ উৎপাদনকারীর সংখ্যা ৫ লাখেরও বেশি এবং এই শিল্পের মাধ্যমে প্রায় ২ লাখ ২৩ হাজার পূর্ণকালীন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এই শিল্পের মূল্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১শ’ ২৪ বিলিয়ন ডলার, যা অনেক দেশের অর্থনীতির চেয়েও বেশি।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ধারাবাহিক শুল্ক আরোপের জবাবে চীন পাল্টা শুল্ক আরোপের মাধ্যমে কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। বেইজিং স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, তারা এই শুল্ক যুদ্ধের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে। চীন অভিযোগ করেছে, ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ জোরপূর্বক ও অনৈতিক এবং তারা এই বিষয়ে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেছে। তীব্র বাকযুদ্ধের পাশাপাশি চীন এখন কৌশলগতভাবে অন্যান্য দেশের সঙ্গে জোট গঠনের উদ্যোগ নিচ্ছে, যাতে আমেরিকার ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করে এই শুল্কনীতি প্রত্যাহার করা যায়।

চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে তারা বাণিজ্য জোরদার করতে আলোচনায় বসেছে। তবে চীনের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, তারা চীনের সঙ্গে একজোট হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করল চীন

গতকাল শুক্রবার চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্কহার ৮৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশে উন্নীত করছে। এই নতুন শুল্ক আজ শনিবার থেকে কার্যকর হবে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বেইজিংয়ের সঙ্গে একত্র হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘একতরফা নিপীড়নের’বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো আহ্বান জানানোর কয়েক ঘণ্টা পরেই এই ঘোষণা আসল।

এর আগে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন। তার আগে বুধবার চীনা পণ্যে ১০৪ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করে ট্রাম্প প্রশাসন। এর পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে বৃহস্পতিবার চীনও মার্কিন পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ৩৪ থেকে ৮৪ শতাংশ করে। আর একদিন পরেই মার্কিন পণ্যে নতুন করে শুল্ক আরোপ করলো বেইজিং।

চীনের অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বর্তমান শুল্কহারের প্রেক্ষাপটে মার্কিন পণ্যের জন্য চীনা বাজারে গ্রহণযোগ্যতার কোনো সম্ভাবনা নেই। যুক্তরাষ্ট্র বারবার অস্বাভাবিকভাবে উচ্চহারে যে শুল্ক আরোপ করছে, তা এখন শুধুই একটি সংখ্যার খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এটির কোনো বাস্তব অর্থনৈতিক বাস্তব ভিত্তি নেই।

বেইজিংয়ের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির কারণেই বিশ্ব অর্থনীতি, বাজার ও বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থাগুলো বড় ধাক্কা খেয়েছে। এই বৈশ্বিক অস্থিরতার সম্পূর্ণ দায় যুক্তরাষ্ট্রকেই নিতে হবে। চিনপিং প্রশাসন আরও দাবি করেছে, ট্রাম্প অন্যান্য দেশের ওপর শুল্ক স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চীনের চাপের ফলেই।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
The plane crashed in Florida

ফ্লোরিডায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত ৩

ফ্লোরিডায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত ৩

দক্ষিণ ফ্লোরিডায় একটি প্রধান মহাসড়কের কাছে একটি ছোট বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৩ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও একজন।

স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে দক্ষিণ ফ্লোরিডায় একটি প্রধান আন্তঃরাজ্য মহাসড়কের কাছে এই দুর্ঘটনা ঘটে। বিমানটি বিধ্বস্ত হয় এবং একটি গাড়ি রেললাইনের উপর পড়ে যায়। এতে এসব হতাহত হয় বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

বোকা র‍্যাটন ফায়ার রেসকিউর সহকারী প্রধান মাইকেল লাসাল জানিয়েছেন, বিমান দুর্ঘটনায় তিনজনই নিহত হয়েছেন। বিমানটি মাটিতে পড়ার পর আগুনের কুণ্ডলির তৈরি হয়। এতে দুর্ঘটনাস্থলের পাশের গাড়িতে থাকা একজন আহত হয়েছেন।

লাসাল জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর বোকা র‍্যাটন বিমানবন্দরের কাছে ইন্টারস্টেট ৯৫-এর কাছে বেশ কিছু রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

দুর্ঘটনার শিকার সেসনা ৩১০ বিমানটিতে তিনজন আরোহী ছিলেন বলে জানিয়েছে ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন।

সংস্থাটি একটি ই-মেইলে বলেছে, বোকা র‍্যাটন বিমানবন্দর থেকে টালাহাসির উদ্দেশে রওনা হওয়ার পর সকাল ১০টা ২০ মিনিটে এটি বিধ্বস্ত হয়।

দমকল কর্মকর্তারা দক্ষিণ ফ্লোরিডা সান সেন্টিনেলকে জানিয়েছে, বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে একটি গাড়িকে রেললাইনের উপরে ধাক্কা দিয়েছে, যার ফলে লাইনটি বন্ধ হয়ে গেছে।

বোকা র‍্যাটনের মেয়র স্কট সিঙ্গার এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ‘আমরা গভীরভাবে দুঃখিত যে আজ আমাদের একটি বিমান দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এই মুহূর্তে আরও বিস্তারিত জানা যাচ্ছে। আমরা জরুরি উদ্ধারকারী এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি।’

তিনি বলেন, ‘এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য ক্ষতিগ্রস্ত সকলের প্রতি আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি। তদন্ত চলাকালে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ধৈর্যধারণের অনুরোধ করছি এবং সহযোগিতা কামনা করছি।’

এনটিএসবি’র নেতৃত্বে ঘটনাটির তদন্ত করছে এফএএ এবং জাতীয় পরিবহন সুরক্ষা বোর্ড।

জানুয়ারিতে ওয়াশিংটনের কাছে মাঝ আকাশে বিমানের সংঘর্ষে ৬৭ জন নিহত হন। ফেব্রুয়ারিতে সিয়াটল বিমানবন্দরে একটি বিমান আরেকটি বিমানকে ধাক্কা দেয়। মার্চ মাসে ডেনভারে অবতরণের পর আমেরিকান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে আগুন ধরে যায়—এতে আহত ১২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Israeli barbarism in Gaza is not stopping

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা থামছেই না

আরও ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত
গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা থামছেই না ইসরায়েলি বর্বর হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা শহর। ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত রয়েছে। ব্যাপক সমালোচনার মধ্যেও ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে মৃত্যুর মিছিল থামছেই না। সেখানে ইসরায়েলি হামলায় আরও ২৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেয়েসাস গাজায় ইসরায়েলের ত্রাণ অবরোধের কারণে আরও রোগ ও মৃত্যুর আশঙ্কা করেছেন। সেখানের ১০ হাজারের বেশি মানুষকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধে এখন পর্যন্ত মোট ৫০ হাজার ৮৮৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখ ১৫ হাজার ৮৭৫ জন। যদিও উপত্যকাটির সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬১ হাজার ৭০০ জনে দাঁড়িয়েছে। কারণ ধ্বংসস্তূপের মধ্যে যারা চাপা পড়েছেন আশঙ্কা করা হচ্ছে তারাও মারা গেছেন।

যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় বড় আকারের বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করেছে। শুধু তাই নয়, ক্রমাগত নিজেদের নিয়ন্ত্রণ সম্প্রসারণ করে চলেছে দখলদার ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত এই উপত্যকার ৫০ শতাংশ অংশ দখলে নিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। এতে নিজ ভূমিতে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছেন অধিকাংশ ফিলিস্তিনি।

এদিকে গত মঙ্গলবার প্রকাশিত হওয়া পিউ রিসার্চের ওই জরিপে দেখা গেছে, ৫৩ শতাংশ মার্কিন নাগরিক এখন ইসরায়েলের বিষয়ে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেন। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের হামলা এবং পরবর্তীতে গাজায় ইসরায়েলের অভিযানের আগে ২০২২ সালের মার্চে করা এক জরিপে এই হার ছিল ৪২ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকানদের তুলনায় মূলত ডেমোক্র্যাটরা ইসরায়েলের প্রতি বেশি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে থাকেন। পিউ রিসার্চের জরিপে জানা গেছে, বর্তমানে ৬৯ শতাংশ ডেমোক্র্যাট এবং ৩৭ শতাংশ রিপাবলিকান ইসরায়েলকে নিয়ে নেতিবাচক কথা বলেছেন। গাজা যুদ্ধ শুরুর আগে ২০২২ সালের পর এই হার বেড়েছে ১০ শতাংশ।

গাজায় ওষুধের মজুত সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে গেছে

৮০,০০০-এরও বেশি ডায়াবেটিস রোগী এবং দীর্ঘস্থায়ী উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ১,১০,০০০ মানুষ জীবন রক্ষাকারী ওষুধ গ্রহণ করতে পারছেন না। গাজা উপত্যকার হাসপাতালগুলোতে ওষুধের মজুত সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে গেছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য উদ্ধৃত করে এ খবর জানিয়েছে ইরানি বার্তা সংস্থা তাসনিম।

প্রতিবেদন অনুসারে, গাজার হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় ওষুধের মজুত সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে গেছে। বিশেষ করে, ৫৯% প্রয়োজনীয় চিকিৎসা এবং ৫৪% ক্যান্সার ও রক্ত-সংশ্লিষ্ট ​​রোগের ওষুধ শেষ হয়ে গেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৮০ হাজারেরও বেশি ডায়াবেটিস রোগী এবং ১ লাখ ১০ হাজার দীর্ঘস্থায়ী উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তি জীবন রক্ষাকারী ওষুধ গ্রহণ করতে পারছেন না।

মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, এই সংকটের কারণ হলো সীমান্ত ক্রসিং পয়েন্ট বন্ধ করে দেওয়া। দখলদার বাহিনী হাসপাতাল ও ক্লিনিকের জন্য চিকিৎসা সরবরাহ এবং ওষুধসহ মানবিক সহায়তা সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে।

ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর আইইডি হামলা

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সামরিক যানবাহনে ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) হামলা হয়েছে। এমন দাবি করেছে সেখানকার যোদ্ধাদল জেনিন ব্রিগেড।

আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, জেনিন ব্রিগেড ইসরায়েলি সামরিক যানবাহনে ‘অত্যন্ত বিস্ফোরক’ আইইডি হামলার দাবি করেছে। আল-জাজিরা আরবির সংবাদদাতারা জানান, ইসরায়েলি দখলদারত্বের বিরুদ্ধে লড়াইরত ফিলিস্তিনিদের একটি গোষ্ঠী জেনিন ব্রিগেড। তারা অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছে। এই দলটি এক বিবৃতিতে ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) হামলার দায় স্বীকার করেছে।

বিবৃতিতে তারা বলেছে, একটি অত্যন্ত বিস্ফোরক ডিভাইস আগে থেকেই প্রস্তুত করা হয়েছিল এবং জেনিনের সিলাত আল-হারিথিয়া শহরের প্রবেশপথে শত্রু যানবাহন পৌঁছালে তা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

তবে প্রাথমিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ইসরায়েলি বাহিনীর থেকে এখনও কোনো তথ্য জানানো হয়নি। আল-জাজিরা বলেছে, সংবাদদাতারা এ বিষয়ে খোঁজ রাখছেন। কোনো পক্ষ থেকে নতুন তথ্য প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা পাঠকদের জানিয়ে দেবে।

ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের (পিআইজে) সশস্ত্র শাখা আল-কুদস ব্রিগেডের নাবলুস ব্যাটালিয়নও নাবলুসের পুরাতন শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর হামলা করেছে। কয়েকটি স্থান থেকে যুদ্ধের খবর এসেছে। তবে সেখানকার পরিস্থিতি খুবই নাজুক হওয়ায় বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি।

প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এ সময় নাবলুসের পুরাতন শহরে নিজ বাড়ি থেকে ফিলিস্তিনি সাংবাদিক সামের খুওয়াইরাকে ধরে নিয়ে গেছে তারা।

বৃহস্পতিবার ভোরে অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুসে অভিযান চালায় বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাহিনী। এ সময় সামেরের বাড়িতে আচমকা ঢুকে পড়ে তারা। একই সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নিকটবর্তী বালাতা শরণার্থী শিবিরে অনুপ্রবেশ করে তাণ্ডব চালায়। তারা বাড়ি থেকে ফিলিস্তিনের বের করে দেয় এবং বেশ কয়েকজনকে চোখ বেঁধে নিয়ে যায়।

ইসরায়েলি বাহিনী মধ্য নাবলুসের পুরাতন শহরেও হামলা চালিয়েছে। আজাজ মসজিদের সামনে সামরিক যানবাহন মোতায়েন করা হয়েছে এবং গ্রেট সালাহ আল-দীন মসজিদের চারপাশ স্থল বাহিনী ঘিরে রেখেছে।

স্থানীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, পুরাতন শহরের আকাবা পাড়ায় একটি ফিলিস্তিনি বাড়িতেও অভিযান চালানো হয়েছে। গত মাসে, ইসরায়েলি বাহিনী পুরাতন শহরের বেশ কয়েকটি মসজিদ তল্লাশি করে এবং লুটপাত চালায়। এ নিয়ে শহরগুলোতে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

মন্তব্য

p
উপরে