× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

আন্তর্জাতিক
Indo Pakistan Tension Saudi Iran arrives in mediation
google_news print-icon

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: মধ্যস্থতায় এগিয়ে এলো সৌদি-ইরান

ভারত-পাকিস্তান-উত্তেজনা-মধ্যস্থতায়-এগিয়ে-এলো-সৌদি-ইরান
ভিসা বাতিলের পর নিজ নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছেন ভারত-পাকিস্তানের নাগরিকরা। ছবি: সংগৃহীত

অধিকৃত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নিরসনে দুই দেশকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে মিত্র দেশ সৌদি আরব ও ইরান। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে দেশ দুটির মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছে তারা।

পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ভারতের ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন সৌদি ও ইরানের সমকক্ষ কর্মকর্তারা।

গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই পর্যটক ছিলেন। এ ঘটনায় পাকিস্তান জড়িত বলে অভিযোগ করেছে চিরবৈরী ভারত। যদিও হামলার সঙ্গে কোনোরকম সংশ্লিষ্টতার দায় অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।

এতে দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর দুই দেশের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি হয়।

ভারতের দাবি, পাকিস্তানের সেনারা প্রথমে গুলি ছুড়েছে, তারাও পাল্টা জবাব দিয়েছে। তবে বেসামরিক জনগণের ওপর কোনো গোলাগুলি করা হয়নি বলে উভয় পক্ষ থেকেই নিশ্চিত করা হয়েছে।

এর আগে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ফিরে ভিসা বাতিল করে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এতে ভারত ও পাকিস্তানের নাগরিকেরা নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে শুরু করেন।

এ পরিস্থিতিতে দেশদুটির মধ্যে দ্বন্দ্ব নিরসনে এগিয়ে এসেছে দুই দেশের মিত্র ইরান ও সৌদি। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শুক্রবার সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান পাকিস্তানের তার সমকক্ষ ইসহাক দারের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন।

এ সময় আলাপে ভারতের অভিযোগগুলো প্রত্যাখান করেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এছাড়া পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার বিষয়েও সতর্ক করেছেন তিনি।

পাশাপাশি ভারতের যেকোনো আগ্রাসনের কড়া জবাব দিতে পাকিস্তান দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বলেও উল্লেখ করেন ইসহাক দার। তবে সৌদির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতেও সম্মত হয়েছেন তিনি।

এদিকে সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, তিনি পহেলগামে হামলার বিষয়ে প্রিন্স ফয়সালের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন। এ সময়ে হামলার সঙ্গে সীমান্ত-যোগসূত্র (ক্রস-বর্ডার লিঙ্কেজ) নিয়ে তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।

অন্যদিকে দিল্লি-ইসলামাবাদের মধ্যকার চলমান উত্তেজনা নিরসনে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছে ইরান।

এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশই ইরানের মিত্র। চলমান এই কঠিন পরিস্থিতিতে ইরান দেশদুটিতে তাদের সুপ্রতিষ্ঠিত প্রভাব কাজে লাগিয়ে সমঝোতা করতে প্রস্তুত রয়েছে।’

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন পাকিস্তানের ইসহাক দার। শুক্রবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, ‘কোনো দেশ যদি ভারতের সঙ্গে তাদের মধ্যস্থতার প্রস্তাব দেয়, তারা বিষয়টি বিবেচনা করবেন।’

এদিকে দুই প্রতিবেশীর মধ্যকার এই উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনে তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক
Pakistans preparing to tackle Indias invasion

ভারতের আক্রমণ মোকাবেলায় পাকিস্তানের প্রস্তুতি

ভারতের আক্রমণ মোকাবেলায় পাকিস্তানের প্রস্তুতি

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ হামলার ঘটনার পর পাকিস্তানে ভারতের ‘সামরিক অনুপ্রবেশ’ আসন্ন বলে গতকাল সোমবার মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ।

কাশ্মীরের পহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহত হন এবং এতে ভারতজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবিও ওঠে।

ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তান ২২ এপ্রিল বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এই হামলায় মদদ দিচ্ছে। যদিও কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ ইসলামাবাদে তার কার্যালয়ে ‘জিও নিউজ’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আমরা আমাদের বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করেছি। কারণ, ভারতের আক্রমণ এখন আসন্ন। এমন পরিস্থিতিতে কিছু কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিতে হতো, তাই সেই সিদ্ধান্তগুলো নেয়া হয়েছে।

আসিফ বলেন, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ভারতীয় আক্রমণের আশঙ্কা সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করেছে। তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বা বিস্তারিত কিছু বলেননি তিনি।

পাকিস্তান সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘অস্তিত্বের জন্য সরাসরি হুমকি’ থাকলেই কেবল পাকিস্তান তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের ভাণ্ডার ব্যবহার করবে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Indo Pakistan tension Pageshkians phone calls with Modi and Sharif

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: মোদী ও শরীফের সাথে পেজেশকিয়ানের ফোনালাপ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: মোদী ও শরীফের সাথে পেজেশকিয়ানের ফোনালাপ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ। ছবি: সংগৃহীত

ভারত শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতের সাথে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে ভিসা নিয়ে পাকিস্তান ভ্রমণকারী কমপক্ষে ৩৩৫ জন ভারতীয় নাগরিককে বহিষ্কার করেছে ইসলামাবাদ সরকার।

ভারত সরকার এই ঘোষণা দিয়েছে। ‘ইরানা জানায়’ মঙ্গলবার রাতে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের শ্রীনগর শহর থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পেহেলগামের পর্যটন এলাকায় বন্দুকধারীরা পর্যটকদের ওপর গুলি চালায়। ওই হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হয়। ভারতীয় কর্মকর্তারা ঘটনাটিকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ভারত ওই হামলায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার অভিযোগ করলেও ইসলামাবাদ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ হামলার বিস্তারিত তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।

হামলার পর ভারত সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করা, সীমান্ত বন্ধ করাসহ আরো অনেক কিছু।

অপরদিকে, ভারতের তীব্র প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও একটি কড়া বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন দুই দেশের মধ্যে অভূতপূর্ব উত্তেজনার পরিণতিতে নতুন করে আঞ্চলিক সংঘাতের সূচনা হতে পারে।

উল্লেখ্য, বিতর্কিত কাশ্মীর অঞ্চলে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনী টানা তৃতীয় রাতে গুলি বিনিময় করেছে। পেহেলগাম সন্ত্রাসী ঘটনার কারণে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে।

এদিকে,শনিবার ভারত থেকে কমপক্ষে ৭৫ জন পাকিস্তানি নাগরিক তাদের দেশে ফিরেছেন।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে শনিবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সাথে টেলিফোনে কথা বলেছেন এবং ভুল বোঝাবুঝি নিরসনে তার প্রস্তুতির কথা ব্যক্ত করেছেন।

ফোনালাপে তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যৌথ লড়াইয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী ঘটনাবলি মোকাবেলায় বিশেষ করে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর আর্থিক ও অস্ত্র অবকাঠামো ধ্বংস করার জন্য বৃহত্তর আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। এ অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের সার্বিক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’

টেলিফোন সংলাপে শাহবাজ শরীফ যেকোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, পাকিস্তান নিজেই সন্ত্রাসবাদের শিকার এবং এই অশুভ ঘটনার বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে লড়াই করার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তারা ভালোভাবেই জানে। আমরা দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি এবং পাকিস্তানি জাতির কল্যাণকে উন্নত করতে চাই। ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের মতো আমরা এ অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং স্থায়ী নিরাপত্তার ওপর জোর দিচ্ছি।

শনিবার সন্ধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে টেলিফোনে আলাপকালে ইরানের প্রেসিডেন্ট ভারতের পেহেলগামে সন্ত্রাসী ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। সেইসঙ্গে ভারত সরকার ও জনগণের প্রতি ওই ঘটনার জন্য দুঃখ ও সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন। তিনি সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় আঞ্চলিক দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা এবং এই অভিন্ন হুমকির বিরুদ্ধে সংহতির প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন।

নরেন্দ্র মোদীও পেহেলগাম সন্ত্রাসী ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে এবং সন্ত্রাসবাদের সাথে ইরানি জাতির তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে বলেন, তার বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে ইরান অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে ভারতীয় জনগণের অনুভূতি ও কষ্ট ভালোভাবে বুঝতে পারে। মোদি বলেন আপনার দৃষ্টিভঙ্গির সাথে আমরা সম্পূর্ণ একমত যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে ব্যাপক ঐক্য এবং সহযোগিতা প্রয়োজন।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Cardinals are ready to determine the date of Conclave in the new pope selection

নতুন পোপ নির্বাচনে কনক্লেভের তারিখ নির্ধারণের জন্য কার্ডিনালরা প্রস্তুত

নতুন পোপ নির্বাচনে কনক্লেভের তারিখ নির্ধারণের জন্য কার্ডিনালরা প্রস্তুত ছবি: সংগৃহীত

পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর, বিশ্বের ১.৪ বিলিয়ন ক্যাথলিকের একজন নতুন নেতা নির্বাচনের জন্য সোমবার কনক্লেভের তারিখ নির্ধারণ করার কথা লাল টুপি পরা কার্ডিনালদের। ভ্যাটিকান সিটি থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

২১ এপ্রিল ৮৮ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন পোপের মৃত্যুর পর থেকে বিশ্বজুড়ে কয়েক ডজন তথাকথিত ‘চার্চের রাজপুত্র’ ভ্যাটিকানে জড়ো হচ্ছেন।

শনিবার এক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ভেতর দিয়ে ফ্রান্সিসকে সমাহিত করা হয়। এ সময় রাজপরিবার, বিশ্বনেতা ও সাধারণ তীর্থযাত্রীসহ সেন্ট পিটার্স স্কয়ার ও তার বাইরে ৪ লাখ মানুষের সমাগম ঘটে।

ভ্যাটিকানের দেয়ালের বাইরে সমাহিত হওয়ার সিদ্ধান্ত রেখে যান ‘দরিদ্রদের পোপ’। রোমের সান্তা মারিয়া ম্যাগিওর ব্যাসিলিকায় তাঁর মার্বেল সমাধি দেখতে রোববারও বিপুল সংখ্যক মানুষ জড়ো হয়।

বিশ্বজুড়ে দ্বন্দ্ব ও কূটনৈতিক সংকটের মধ্যে, ফ্রান্সিসের অধীনে থাকা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইতালীয় কার্ডিনাল পিয়েট্রো প্যারোলিন অনেকের কাছেই পোপের উত্তরসূরি হিসেবে প্রিয়।

তিনি পোপের নিকটতম উপদেষ্টা যাকে পোপের দ্বিতীয় নম্বর হিসেবে দেখা হয়।

ব্রিটিশ বুকমেকার উইলিয়াম হিলকে ম্যানিলার মেট্রোপলিটন আর্চবিশপ এমেরিটাস ফিলিপিনো লুইস আন্তোনিও ট্যাগলের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে রেখেছেন, তারপরের স্থানে রয়েছেন ঘানার কার্ডিনাল পিটার টার্কসন।

পরবর্তী অবস্থানে রয়েছেন জেরুজালেমের ল্যাটিন প্যাট্রিয়ার্ক পিয়েরবাত্তিস্তা পিজ্জাবাল্লা, গিনির কার্ডিনাল রবার্ট সারা এবং বোলোগনার আর্চবিশপ মাত্তেও জুপ্পি।

রোববার ফ্রান্সিসের সমাধি দেখতে আসা তথ্য ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশেষজ্ঞ ৪৪ বছর বয়সী রিকার্ডো ক্রুজ বলেন, একজন ফিলিপিনো হিসেবে তিনি আশা করছেন পরবর্তী পোপ এশিয়া থেকে আসবেন, কিন্তু একজন ক্যাথলিক হিসেবে তিনি আশা করেন কার্ডিনালরা ‘সঠিক পোপ’ বেছে নেবেন।

রোমের পন্টিফিকাল গ্রেগরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গির্জার ইতিহাস ও সংস্কৃতির অধ্যাপক রবার্তো রেগোলি এএফপিকে বলেন, কার্ডিনালরা ‘এমন কাউকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন যিনি বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে জানেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এমন এক সময়ে আছি যেখানে ক্যাথলিক ধর্ম বিভিন্ন মেরুকরণের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তাই আমি কল্পনাও করি না যে খুব দ্রুত একটি সম্মেলন হবে।’

ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর থেকে কার্ডিনালরা শেষকৃত্য এবং তার পরেও সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সাধারণ সভা করেছেন।

সোমবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় (গ্রিনীচ মান সময় ০৭০০ টায়) তারা তাদের পঞ্চম সভা করবেন, যেখানে তাদের একটি সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন ৪ মে পোপের নয় দিনের শোক শেষের নির্ধারিত ক্ষণ শেষের কিছু পর ৫ অথবা ৬ মে সভাটি অনুষ্ঠিত হতে পারে।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Stop the ammunition contract Putin to Trump

'গোলাগুলি থামান', 'চুক্তি সই করুন' : পুতিনকে ট্রাম্প

'গোলাগুলি থামান', 'চুক্তি সই করুন' : পুতিনকে ট্রাম্প ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার বলেছেন, তিনি চান রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন 'গোলাগুলি থামান' এবং একটি শান্তি চুক্তিতে সই করুন।

ভ্যাটিকানে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের এক দিন পর মার্কিন নেতা একথা বললেন।

ট্রাম্প তার শপথ গ্রহণের আগে দাবি করেছিলেন যে তিনি এক দিনের মধ্যে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ থামিয়ে দিতে পারবেন, শপথ নেওয়ার পর থেকে যুদ্ধ থামাতে একটি কূটনৈতিক প্রয়াস শুরু করেন।

এখন পর্যন্ত এই প্রচেষ্টায় কোন ফলাফল না এলেও, ট্রাম্প বলেছেন, 'যেহেতু আমি চাই তিনি গোলাগুলি থামান, বসে আলোচনা করুন এবং একটি চুক্তিতে সই করুন।'

যুক্তরাষ্ট্রের বেডমিনস্টার থেকে এএফপি জানায়, এয়ার ফোর্স ওয়ানে চড়ে ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওয়ান হওয়ার আগে মরিসটাউন বিমানবন্দরে ট্রাম্প এই মন্তব্য করেন। এর আগে শনিবার তিনি রোমে পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

ট্রাম্প ইউক্রেনে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সংঘাতের জন্য মার্কিন প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, 'আমার মনে হয়, আমাদের কাছে একটি চুক্তির কাঠামো আছে, এবং আমি চাই তিনি তা স্বাক্ষর করুন।'

ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে একটি অপ্রীতিকর টেলিভিশন সাক্ষাৎকারের পর ট্রাম্প রোমে পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে প্রথমবারের মতোইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মুখোমুখি হন।

সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় তাদের সংক্ষিপ্ত কথোপকথনের পরে, ট্রাম্প পুতিন আদৌ যুদ্ধ শেষ করতে চান কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।এ যুদ্ধ পূর্ব ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ধ্বংস করেছে এবং হাজারো মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে।

রোববার ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি মনে করেন জেলেনস্কি রাশিয়া কর্তৃক ২০১৪ সালে দখল করে নেয়া ক্রিমিয়ার দাবি ত্যাগ করে শান্তি চুক্তি করতে প্রস্তুত।

'ওহ, আমি তাই মনে করি,' এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প এ কথা বলেন। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল জেলেনস্কি ২০১৪ সালে রাশিয়ার অধিকৃত এই ভূখণ্ড ছাড়তে রাজি হবে বলে তিনি মনে করেন কি না।

রাশিয়া দাবি করেছে যে তারা যুদ্ধবিধ্বস্ত ইইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলীয় চারটি অঞ্চল অঙ্গীভূত করেছে, তবে অঞ্চলগুলোতে তাদের পুরো সামরিক নিয়ন্ত্রণ নেই।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Putin is playing Trump

ট্রাম্পকে খেলাচ্ছেন পুতিন!

ট্রাম্পকে খেলাচ্ছেন পুতিন!

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ভ্যাটিকানের ব্যাসিলিকা প্রাসাদে আলোচনা করেছেন। ইউক্রেনে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে এই আলোচনা হয়। আলোচনার পর ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, তার মনে হচ্ছে পুতিন ‘যুদ্ধ থামাতে চান না’ এবং পুতিন তাকে ‘খেলাচ্ছেন।’ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যের আগে ইউক্রেনীয় নেতার সঙ্গে ট্রাম্পের বৈঠকটি ‘খুবই ফলপ্রসূ’ ছিল। অন্যদিকে, জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনাটি ছিল ‘প্রতীকী।’ তিনি বলেন, ‘যদি আমরা যৌথ ফল অর্জন করতে পারি, তবে এটি ঐতিহাসিক হওয়ার সম্ভাবনা রাখে।’

গত ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে সাক্ষাতের পর এটি ছিল ট্রাম্প ও জেলেনস্কির প্রথম মুখোমুখি বৈঠক। সেই সাক্ষাতে ট্রাম্প ও মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ইউক্রেনীয় নেতাকে ব্যাপক তিরস্কার করেন। তারা ইউক্রেনকে দেওয়া মার্কিন সহায়তার প্রতি অকৃতজ্ঞতার অভিযোগও এনেছিলেন।

জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনার পর ট্রাম্প নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পুতিনের সমালোচনা করে একটি পোস্ট করেন। ট্রাম্প লেখেন, ‘গত কয়েক দিন ধরে বেসামরিক এলাকা, শহর ও নগরে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার পুতিনের কোনো কারণ ছিল না। এটি আমাকে ভাবতে বাধ্য করছে, সম্ভবত তিনি যুদ্ধ থামাতে চান না, তিনি শুধু আমাকে খেলিয়ে যাচ্ছেন। তার সঙ্গে ভিন্নভাবে মোকাবিলা করতে হবে, ব্যাংকিং বা দ্বিতীয় নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে? অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে!’

ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ অবসানের প্রচেষ্টায় ওয়াশিংটন দুই দেশের মধ্যে জোরালো মধ্যস্থতা করছে। রাশিয়া ২০২২ সালে ইউক্রেনে আক্রমণ করার পর থেকে যুদ্ধ চলছে। গত শুক্রবার ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ মস্কোয় পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি তিন ঘণ্টা ধরে ওয়াশিংটনের শান্তি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেন।

এই বৈঠকের বিষয়ে ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যালে অ্যাকাউন্টে লেখেন, ‘বেশির ভাগ মৌলিক বিষয়ে একমত হওয়া গেছে।’ তবে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি। তিনি কিয়েভ এবং মস্কোর নেতাদের মধ্যে একটি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন। এই বৈঠকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই করা হবে। তিনি বলেন, চুক্তিটি ‘খুব নিকটবর্তী।’

ট্রাম্প চুক্তি নিয়ে আগ্রহী হলেও, শান্তি প্রতিষ্ঠায় মার্কিন পরিকল্পনা এবং ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের কাছে গ্রহণযোগ্য যুদ্ধবিরতির শর্তাবলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়ে গেছে। রয়টার্স শুক্রবার শান্তির দুটি ভিন্ন পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র মস্কোকে অধিকৃত অঞ্চল ধরে রাখার প্রস্তাব দিচ্ছে। এর মধ্যে কৌশলগত ক্রিমিয়া উপদ্বীপও রয়েছে, যা রাশিয়া ২০১৪ সালে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করে নেয়।

ইউক্রেন এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর কাছে এটি শুরুতেই অগ্রহণযোগ্য বলে মনে হচ্ছে। জেলেনস্কি জোর দিয়ে বলেছেন, এই অঞ্চল ‘ইউক্রেনীয় জনগণের সম্পত্তি।’ ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট কিয়েভে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের অবস্থান অপরিবর্তিত। ইউক্রেনের সংবিধান বলছে, সব সাময়িকভাবে দখলকৃত অঞ্চল...ইউক্রেনের অংশ।’

মস্কো মার্কিন শান্তিচুক্তিতে সম্মত হবে কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়। এই চুক্তিকে রাশিয়ার জন্য যথেষ্ট ছাড় হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত শনিবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ইউক্রেনের সব সৈন্যকে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি মস্কোর একটি প্রধান লক্ষ্য ছিল। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা এই দাবি অস্বীকার করেছেন।

যুদ্ধবিরতি চুক্তির কারিগরি বিষয়গুলো এখনো ঠিক করতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে- রাশিয়ার ওপর আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা কীভাবে প্রত্যাহার করা হবে এবং ইউক্রেনকে কী ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেওয়া হবে। ট্রাম্প শুক্রবার স্বীকার করেছেন, আলোচনা ‘খুবই ভঙ্গুর।’ তিনি সতর্ক করেছেন, দুই পক্ষ শিগগিরই একটি চুক্তিতে না পৌঁছালে যুক্তরাষ্ট্র তার মধ্যস্থতা প্রচেষ্টা বন্ধ করে দেবে।

মন্তব্য

তাইওয়ানে অবৈধভাবে বাস করা চীনাদের ওপর ধরপাকড়

তাইওয়ানে অবৈধভাবে বাস করা চীনাদের ওপর ধরপাকড়

চীনা নাগরিকদের মধ্যে যারা অবৈধভাবে তাইওয়ানে বসবাস করছেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত ২০ জন তাইওয়ানের নাগরিকত্ব বাতিলসহ চীনা বংশোদ্ভূত কয়েক হাজার তাইওয়ানবাসীর নথিপত্রের তদন্ত চলমান রয়েছে। ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে এমন বলা হয়েছে।

তাইওয়ানের আইন অনুযায়ী, দেশটির নাগরিকদের চীনের নাগরিকত্ব রাখার অনুমতি নেই। যেকারণে গত কয়েক দশকে চীনের নাগরিকত্ব থাকায় শত শত বাসিন্দার তাইওয়ানিজ নাগরিকত্ব কার্যত্ বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে শুরু হওয়া এই অভিযান বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। প্রকাশ্যে তিনজন নারীর নাগরিকত্ব বাতিল করেছে তাইওয়ান সরকার। পাশাপাশি দেশটির ১০ হাজারের বেশি নাগরিক; যারা চীনে জন্মগ্রহণ করলেও তাইওয়ানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন, তাদের একটি অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেওয়ায় এই অভিযানের সমালোচনা শুরু হয়েছে।

নাগরিকদের পরিচয়, আনুগত্য, রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও দেশের নিরাপত্তার মধ্যে সরকার সামঞ্জস্য বজায় রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন অনেক তাইওয়ানিজ।

এই অভিযান ও বিতর্কের সূত্রপাত হয় গত ডিসেম্বরে অনলাইনে প্রকাশিত একটি প্রামাণ্যচিত্রকে ঘিরে। চীন গোপনে তাইওয়ানের মানুষকে তাদের দেশের নাগরিকত্ব প্রদান করছে বলে দেখানো হয় সেখানে।

প্রামাণ্যচিত্রে তিনজন ব্যক্তির তথ্য উপস্থাপন করা হয়, যারা চীনের ফুজিয়ান প্রদেশে গিয়ে বাস করতে শুরু করেছিলেন এবং চীনের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন।

এই প্রামাণ্যচিত্র প্রকাশের পর চীনের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানায় তাইওয়ান সরকার। তাইওয়ানের ওপর চীনা কর্তৃত্ব বজায় রাখার অপচেষ্টা থেকেই এই কাজ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করে দেশটির মেইনল্যান্ড অ্যাফেয়ার্স কাউন্সিল (এমএসি)।

প্রামাণ্যচিত্রের সেই তিনজনের মধ্যে একজন সু শিহ। তার ভাষ্যে, ফুজিয়ান প্রদেশে অনেক তাইওয়ানিজ রয়েছে, পাশাপাশি সেখানকার সরকারও উদ্যোক্তাদের নানা রকম ভর্তুকি দিয়ে সহায়তা করেন— এমনটা শুনেই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন।

সু জানান, সেখানে গিয়ে চীনের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন বলে জেনেছিলেন তিনি। এটি তার ব্যবসার জন্য সুবিধাজনক হতে পারে ভেবে তিনি আবেদন করেছিলেন বলে দাবি করেন।

তবে তাইওয়ানের আইনে এই নাগরিকত্ব অবৈধ। যদিও সুয়ের দাবি, অনেক তাইওয়ানিজেরই ফুজিয়ানের নাগরিকত্ব রয়েছে, তারা মূলত এখন রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের শিকার।

চীন-তাইওয়ান দ্বন্দ্ব কেন?

তাইওয়ানকে নিজেদের একটি প্রদেশ বলে দাবি করে বেইজিং। অন্যদিকে নিজেদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দাবি তাইওয়ানের। এ নিয়ে এই অঞ্চলগুলোর বৈরিতা বহু পুরনো।

সাম্প্রতিক সময়ে উত্তেজনা বেড়েছে আরও কয়েকগুণে। তাইওয়ান শান্তিপূর্ণভাবে চীনের সঙ্গে একীভূত না হলে সামরিক অভিযানের মাধ্যমে অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) সরকার। এমনকি তাইওয়ানের অভ্যন্তরেও সাধারণ নাগরিকসহ সরকার ও সামরিক বাহিনীতে সিসিপি সমর্থিত অনেকে গুপ্তচরবৃত্তি ও তৎপরতা চালান বলে তাইওয়ানের অভিযোগ।

তবে অঞ্চল দুটির মধ্যে উত্তেজনা থাকা সত্ত্বেও চীনের অনেক নাগরিকই তাইওয়ানে বসবাস করে আসছিলেন, আবার তাইওয়ানেরও প্রায় এক লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ চীনে বাস করেন।

তবে গত মার্চে দেশটির অভ্যন্তরে চীনের চলমান গোপন তৎপরতা বন্ধের দাবিতে দুই অঞ্চলের মধ্যে ভ্রমণ ও পুনর্বাসনে কড়াকড়ি আরোপ করেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে।
সে সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চীনের কর্তৃত্ব নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে প্রচারণা চালানোর অভিযোগে তিন চীনা বংশোদ্ভূত নারীর ভিসা বাতিল করে তাইওয়ান সরকার। পরে ওই নারীর তাইওয়ানিজ স্বামী ও সন্তানকে ছেড়ে তাকে চীনে ফেরত পাঠানো হয়।

তাইওয়ানের এ পদক্ষেপের সমালোচনা করে দেশটির বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেন, তাড়াহুড়ো করে নথিপত্র ঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করেই লোকজনকে নির্বাসিত করা হচ্ছে। স্থানীয় কিছু মানুষজন অভিযোগ করেন, প্রেসিডেন্ট লাই বাক স্বাধীনতা সীমিত করছেন। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট লাই।

লাই জানান, নাগরিকত্ব বাতিল করার আগে দেশটির সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, সেনা সদস্যদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে— তাদের কখনো চীনের নাগরিকত্ব ছিল না। তাছাড়া ১০ হাজারের বেশি সাধারণ জনগণকেও চীনের হুকু (স্থায়ীভাবে চীনের থাকার জন্য এটি দরকার) বাতিলের নথি দাখিল করতে বলা হয়। যারা দাখিল করেনি তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে হুকু বাতিলের প্রমাণ দাখিল না করার জন্য তদন্ত শুরু করেছে তাইওয়ানের জাতীয় অভিবাসন সংস্থা (এনআইএ)। এনআইএ জানায়, যারা হুকু বাতিল করার কাগজ জমা দিয়েছেন, তারা পুনরায় তাইওয়ানের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবে।

তবে তাইওয়ানের সাম্প্রতিক এই পদক্ষেপ নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। দেশটির এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক লিও মেই জুন বলেন, এই নির্বাসন অভিযানে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে চীনা সরকারকে তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের সুযোগ করে দিতে পারে। এতে বেইজিংয়ের প্রপাগান্ডারই বিজয় হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মন্তব্য

আন্তর্জাতিক
Important Philippines occupied controversial coral reefs to military posts China Report

গুরুত্বপূর্ণ ফিলিপাইন সামরিক পোস্টের কাছে বিতর্কিত প্রবালপ্রাচীর দখল করল চীন

গুরুত্বপূর্ণ ফিলিপাইন সামরিক পোস্টের কাছে বিতর্কিত প্রবালপ্রাচীর দখল করল চীন

চীনের উপকূলরক্ষী বাহিনী দক্ষিণ চীন সাগরে ফিলিপাইনের একটি প্রধান সামরিক ঘাঁটির কাছে বিতর্কিত একটি প্রবালপ্রাচীরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। বেইজিংয়ের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে। এ ঘটনা ম্যানিলার সঙ্গে চীনের দীর্ঘদিনের সীমান্ত উত্তেজনা আরও বাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বেইজিং থেকে এএফপি জানায়, চীন প্রায় পুরো দক্ষিণ চীন সাগরের ওপর সার্বভৌমত্ব দাবি করে আসছে এবং এই দাবির বিরুদ্ধে আঞ্চলিক অন্যান্য দেশের আপত্তি ও আন্তর্জাতিক আদালতের রায়কে আমলে নেয়নি।

চীন ও ফিলিপাইন গত কয়েক মাস ধরে ওই বিতর্কিত জলসীমায় একাধিকবার মুখোমুখি হয়েছে। এদিকে ফিলিপাইন বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বড় পরিসরের যৌথ সামরিক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে, যাকে চীন ‘অস্থিতিশীলতাকে উসকে দেওয়া’ বলছে।

রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি শনিবার জানিয়েছে, এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে চীনের উপকূলরক্ষী বাহিনী ‘টাইশিয়ান রিফ’ বা ‘স্যান্ডি কেই’-তে সমুদ্র নিয়ন্ত্রণ কার্যকর করে।

ছোট্ট এই বালুচর স্প্রাটলি দ্বীপপুঞ্জের অংশ এবং থিতু দ্বীপের (ফিলিপাইন ভাষায় ‘পাগ-আসা’) কাছাকাছি, যেখানে একটি ফিলিপাইন সামরিক স্থাপনা রয়েছে।

সিসিটিভি জানায়, উপকূলরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা স্যান্ডি কেই-তে নেমে ‘সার্বভৌমত্ব ও অধিক্ষেত্র প্রয়োগ’, ‘পরিদর্শন’ এবং ‘ফিলিপাইনের বেআইনি কার্যকলাপের ভিডিও প্রমাণ সংগ্রহ’ করেছে।

প্রতিবেদনে একটি ছবি প্রকাশ করা হয় যেখানে দেখা যায়, পাঁচজন কালো পোশাকধারী ব্যক্তি নির্জন ওই প্রবালপ্রাচীরে দাঁড়িয়ে আছেন এবং পাশে একটি কালো রঙের রাবার নৌকা ভাসছে।
আরেকটি ছবিতে চারজন উপকূলরক্ষী সদস্যকে জাতীয় পতাকার সাথে প্রবালপ্রাচীরের ওপর পোজ দিতে দেখা যায়, যেটিকে সিসিটিভি ‘সার্বভৌমত্বের শপথ’ বলে উল্লেখ করে।

সিসিটিভি আরও জানায়, তারা প্রবালপ্রাচীর থেকে ফেলে যাওয়া প্লাস্টিকের বোতল, কাঠের টুকরো এবং অন্যান্য আবর্জনা পরিষ্কার করেছে।

দ্য ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস এক অজ্ঞাতনামা ফিলিপাইন সামুদ্রিক কর্মকর্তার বরাতে জানিয়েছে, পতাকা উত্তোলনের পর চীনা উপকূলরক্ষীরা ওই এলাকা ছেড়ে গেছে।

এখনও পর্যন্ত চীন প্রবালপ্রাচীরে স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন বা কোনো স্থাপনা নির্মাণ করেছে, তার কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি।

গত কয়েক মাসে দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত অঞ্চলগুলোর পরিবেশগত ক্ষয়ক্ষতির জন্য চীন ও ফিলিপাইন পরস্পরকে দায়ী করে আসছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া শুক্রবার জানায়, দেশটির প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, বেইজিংয়ের ভূমি পুনরুদ্ধার কর্মকাণ্ডে স্থানীয় পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয়নি, ম্যানিলার অভিযোগ মিথ্যা।

থিতু দ্বীপে ফিলিপাইনের সেনা উপস্থিত রয়েছে এবং ২০২৩ সালে সেখানে একটি উপকূলরক্ষী পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র চালু করে ম্যানিলা, চীনের ‘আক্রমণাত্মক মনোভাব’ মোকাবিলার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে।

সোমবার থেকে ফিলিপাইন ও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী তিন সপ্তাহব্যাপী বার্ষিক যৌথ মহড়া ‘বালিকাতান’ (অর্থাৎ ‘কাঁধে কাঁধে’) শুরু করেছে। এবারের মহড়ায় প্রথমবারের মতো সমন্বিত আকাশ ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা অনুশীলন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ম্যানিলায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইউএস মেরিন কর্পসের লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেমস গ্লিন বলেন, দুই পক্ষ কেবল ১৯৫১ সালের পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি রক্ষার সংকল্পই প্রদর্শন করবে না, বরং তা বাস্তবায়নের ‘অতুলনীয় সক্ষমতাও’ দেখাবে।

তিনি বলেন, ‘‘কোনো কিছুর চেয়ে দ্রুত বন্ধন গড়ে তোলে যৌথ প্রতিকূলতার অভিজ্ঞতা।’’ তবে কোনো নির্দিষ্ট হুমকির নাম তিনি উল্লেখ করেননি।

চীন এ মহড়াকে ‘আঞ্চলিক কৌশলগত স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি’ বলে অভিহিত করেছে এবং ম্যানিলাকে ‘বহিঃআঞ্চলিক দেশগুলোর সঙ্গে ষড়যন্ত্রে’ জড়িত থাকার অভিযোগ করেছে।

মন্তব্য

p
উপরে