বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ফ্যাসিবাদ সরকারের শাসনামলের থেকে এবার ঈদ আনন্দময় পরিবেশে হচ্ছে। আমরা মুক্ত পরিবেশে ঈদ পালন করছি।
সোমবার ঈদের দিন সকালে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
গত ১৫ বছরের ঈদের সাথে এবারকার ঈদের পার্থক্যটা কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক পার্থক্য, এবার আমরা মুক্ত পরিবেশে একটা আনন্দময় পরিবেশে ঈদ পালন করছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের এই দিনে আমরা আশা করব যে, যেই দায়িত্ব নিয়েছেন সেই দায়িত্বে সবাই সফল হবেন এবং বিশেষ করে অন্তবর্তীকালীন সরকার জনগণের কাছে তাদের দেয়া প্রতিশ্রুতি পালন করবেন। আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে অবশ্যই সহায়তা করব।
তিনি বলেন, ‘আজকের এই পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনে প্রত্যেকটি বাংলাদেশী মানুষ যেন আনন্দের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারে সেই জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি।
দোয়া চেয়েছি আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে দ্রুত আমাদের কাছে ফিরে আসেন এবং আমাদের নেতা তারেক রহমান তিনি যেন অতি শিগগিরই আমাদের মাঝে ফিরে আসেন সেই দোয়া চেয়েছি।’
সকাল সাড়ে ১১টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান শেরে বাংলা নগরে জিয়া উদ্যানে জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে এসে তার কবরে ফুল দেন এবং দোয়া করেন।
এ সময়ে আরো উপস্থিত ছিলেন আহমেদ আজম খান, আমান উল্লাহ আমান, মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কবির রিজভী, হাবিব উ্ন নবী খান সোহেল, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মীর সরাফত আলী সপু, রফিকুল ইসলাম, সাইফুল আলম নিরব, মীর নেওয়াজ আলী, রফিক শিকদার, এসএম জাহাঙ্গীর, আমিনুল হকসহ দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সহাস্রাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পর মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদেন বলেন, ‘আমরা দলের পক্ষ থেকে, চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান এবং স্থায়ী কমিটির সদস্যদের পক্ষ থেকে আমরা আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। ‘ঈদ মোবারক’ আপনাদের মাধ্যমে আমরা পুরো দেশবাসীর কাছে ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, ‘ঈদ মোবারক।’
সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র একটি চুক্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই চুক্তির অধীনে সৌদির কাছে ১০ হাজার কোটি ডলারের (১০০ বিলিয়ন) বেশি মূল্যের অস্ত্র বিক্রি করবে যুক্তরাষ্ট্র। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ কথা জানিয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছয়টি সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থাটি বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, আগামী মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৌদি আরব, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের আগেই এ চুক্তি চূড়ান্ত হতে পারে।
রয়টার্স জানায়, লকহিড মার্টিন, আরটিএক্স করপোরেশন, বোয়িং, নর্থরপ গ্রুম্যান এবং জেনারেল অ্যাটমিকসের মতো শীর্ষ অস্ত্র নির্মাতা কোম্পানিগুলো এ চুক্তির আওতায় থাকছে। ট্রাম্পের সফরসঙ্গী হিসেবে এসব প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শীর্ষ নির্বাহীর যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
সূত্রগুলো জানায়, চুক্তির আওতায় সৌদি আরবকে সি-১৩০ পরিবহন প্লেন, ক্ষেপণাস্ত্র এবং রাডার সিস্টেমসহ নানা রকম উন্নত অস্ত্র সরবরাহ করা হতে পারে।
তবে সৌদি আরব লকহিড মার্টিনের তৈরি অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পাবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত কেবল ন্যাটোর মিত্র দেশ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং অস্ট্রেলিয়াকে এ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করে।
রয়টার্স জানায়, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি আরবের সঙ্গে একটি নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তির চেষ্টা করেছিলেন, যার লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক স্বাভাবিক করা। সেই প্রস্তাবিত চুক্তিতে চীনা বিনিয়োগ সীমিত করা এবং বেইজিং থেকে অস্ত্র কেনা বন্ধের বিষয়টিও ছিল। তবে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত চুক্তিতে এসব শর্ত থাকবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
হোয়াইট হাউস কিংবা সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। চুক্তিতে যুক্ত কোনো অস্ত্র নির্মাতা কোম্পানিও রয়টার্সের প্রশ্নের জবাব দেয়নি।
উল্লেখ্য, সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের পর ২০১৮ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রিতে ব্যাপক বিধিনিষেধ আরোপ করে। ২০২১ সালে মার্কিন কংগ্রেস সৌদি আরবের কাছে আক্রমণাত্মক অস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে, বিশেষ করে ইয়েমেন যুদ্ধে দেশটির ভূমিকার প্রেক্ষাপটে।
তবে ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট দেখা দিলে যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে সৌদি আরবের প্রতি কঠোর অবস্থান শিথিল করে। সবশেষ, ২০২৪ সালে গাজা পুনর্গঠনে সৌদি আরবকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যা
রোমান ক্যাথলিক ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইতালির রোমে পৌঁছেছেন।
আজ শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমানটি রোমে পৌঁছায়। সেখানে ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আগামীকাল শনিবার ভ্যাটিকান সিটিতে পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
অধ্যাপক ইউনূস আজ দোহা থেকে সরাসরি রোমে যান। তিনি চারদিনের সরকারি সফরে কাতারের রাজধানী দোহায় অবস্থান করছিলেন।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে অধ্যাপক ইউনূসের ব্যক্তিগত সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার ছিল। বন্ধুর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তিনি পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে যাচ্ছেন।
পোপ ফ্রান্সিস গত সোমবার মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তিনি ১২ বছর রোমান ক্যাথলিক গির্জার সর্বোচ্চ নেতার দায়িত্ব পালন করেন।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে রেললাইনের পাশ থেকে মোহাম্মদ রফিক (২০) নামের এক তরুণের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর (৯৯৯) থেকে ফোন পেয়ে রফিকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ বলছে, রফিককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। তিনি চিহ্নিত ছিনতাইকারী ছিলেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
পুলিশ জানায়, নিহত রফিকের বাড়ি জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জের অফিস তারাটি এলাকায়। রফিক কারওয়ান বাজার এলাকায় ছিনতাই করতেন। চুরি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে তেজগাঁও থানায় তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা রয়েছে। চুরি ও ছিনতাইয়ের টাকার ভাগবাঁটোয়ারা নিয়ে বিরোধের জেরে সহযোগীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে।
গতকাল শুক্রবার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী শামীমুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে কারওয়ান বাজার রেললাইনের পূর্ব পাশ থেকে রফিকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার সারা শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরে গতকাল সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহত রফিকের সহযোগীরা কারওয়ান বাজারে একটি রেস্তোরাঁর সামনে তাকে ছুরিকাঘাত করেন। খবর পেয়ে রফিকের নানী তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তিনি মারা যান। পরে তার মরদেহটি কারওয়ান বাজারে রেললাইনের পাশে রাখা হয়। ঘটনাটি তেজগাঁও থানা এলাকায় হওয়ায় এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় মামলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাবার ঠিকাদারি লাইসেন্স থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। গতকাল বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক পেজে তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেন। একই সঙ্গে বিষয়টি ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের পর্যায়ে যেতে পারে আশঙ্কায় ওই লাইসেন্স বাতিল করিয়ে পোস্টে ‘বাবার ভুলের জন্য’ ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বাবার ঠিকাদারি লাইসেন্স থাকার বিষয়টি জানিয়ে গত বুধবার রাতে ফেসবুকে পোস্ট দেন এক গণমাধ্যমকর্মী। এর আগে ওই সাংবাদিক বিষয়টির সত্যাসত্য জানতে চেয়েছিলেন আসিফ মাহমুদের কাছে। আসিফ মাহমুদ খোঁজ করে তাকে জানান, তাঁর বাবার লাইসেন্স নেওয়ার বিষয়টি সঠিক। এরপর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হতে থাকে।
এরপর গতকাল আসিফ মাহমুদ বিষয়টি নিয়ে নিজেই পোস্ট দিয়ে তার বাবার ভুলের জন্য ক্ষমা চান।
আসিফ মাহমুদের দেওয়া পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো:
‘প্রথমেই আমার বাবার ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। গত বুধবার রাত ৯টার দিকে একজন সাংবাদিক কল দিয়ে আমার বাবার নামে ইস্যুকৃত ঠিকাদারি লাইসেন্সের বিষয়ে জানতে চাইলেন। বাবার সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হলাম তিনি জেলা পর্যায়ের (জেলা নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার এর কার্যালয় থেকে ইস্যুকৃত) একটি লাইসেন্স করেছেন। বিষয়টি উক্ত সাংবাদিককে নিশ্চিত করলাম। তিনি পোস্ট করলেন, নিউজও হলো গণমাধ্যমে। নানা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে; তাই ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজনবোধ করলাম।
আমার বাবা একজন স্কুল-শিক্ষক। আকুবপুর ইয়াকুব আলী ভূঁইয়া পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। স্থানীয় একজন ঠিকাদার কাজ পাওয়ার সুবিধার্থে বাবার পরিচয় ব্যবহার করার জন্য বাবাকে লাইসেন্স করার পরামর্শ দেন। বাবাও তার কথায় জেলা নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার থেকে একটি ঠিকাদারি লাইসেন্স করেন। রাষ্ট্রের যেকোনো ব্যক্তি ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে যেকোনো লাইসেন্স করতেই পারে। তবে আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় বাবার ঠিকাদারি ব্যবসায় জড়ানো স্পষ্টভাবেই কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট। বিষয়টি বোঝানোর পর আজ (গতকাল) বাবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাইসেন্সটি বাতিল করা হয়েছে।
বাবা হয়তো কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের বিষয়টি বুঝতে পারেননি, সে জন্য বাবার পক্ষ থেকে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি।
উল্লেখ্য, মধ্যবর্তী সময়ে উক্ত লাইসেন্স ব্যবহার করে কোনো কাজের জন্য আবেদন করা হয়নি।
পহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতশাসিত কাশ্মীর এবং ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা হয়েছে মণিপুর এবং মধ্য ও পূর্ব ভারতের বিভিন্ন অংশেও। গত বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ভারত ভ্রমণের বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। এতে ভারতের যেকোনো জায়গা ভ্রমণে ন্যূনতম দ্বিতীয় মাত্রার সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে দেশটির চারটি অঞ্চল ভ্রমণে সর্বোচ্চ চতুর্থ মাত্রার, অর্থাৎ ভ্রমণ না করার নির্দেশনা দিয়েছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ।
পহেলগামে মঙ্গলবারের সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই ছিলেন পর্যটক। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর এটিই কাশ্মীর উপত্যকায় সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা।
যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ভারতের কেন্দ্রশাসিত জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলে সন্ত্রাসী হামলা এবং সহিংস বেসামরিক অস্থিরতা ঘটতে পারে। এই অঞ্চলটি ভ্রমণ করবেন না (তবে লাদাখ ও এর রাজধানী লেহ সফরের অনুমতি রয়েছে)। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে সম্ভাব্য সশস্ত্র সংঘাতের ঝুঁকি থাকায় ওই অঞ্চল এড়িয়ে চলারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বার্তায় আরও বলা হয়েছে, মাওবাদী চরমপন্থি গোষ্ঠী অথবা নকশালপন্থিরা ভারতের একটি বিশাল অঞ্চলে সক্রিয়। এরা স্থানীয় পুলিশ, আধাসামরিক বাহিনী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে অনেক সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।
এদের হুমকির তীব্রতার কারণে মার্কিন কর্মকর্তাদের বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়, পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয় এবং উড়িষ্যা রাজ্যের বেশিরভাগ অঞ্চলে ভ্রমণের আগে অনুমতি নিতে হবে। তবে তারা যদি কেবল এই রাজ্যগুলোর রাজধানী শহরে ভ্রমণ করেন তবে অনুমতির প্রয়োজন নেই। মার্কিন কর্মকর্তাদের জন্য মহারাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চল এবং মধ্যপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলে ভ্রমণেও অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।
সহিংসতা এবং অপরাধের হুমকির কারণে মনিপুর ভ্রমণেও সর্বোচ্চ চতুর্থ মাত্রার সতর্কতা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়া, জাতিগত বিদ্রোহীদের মধ্যে সহিংসতার কারণে উত্তরপূর্ব ভারতের কিছু এলাকায় ভ্রমণ পুনর্বিবেচনা করার পরামর্শ দিয়েছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। বলা হয়েছে, ভারতে ভ্রমণকারী মার্কিন সরকারি কর্মকর্তাদের সিকিম এবং অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যে ভ্রমণের আগে এবং আসাম, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয় এবং ত্রিপুরার রাজধানী শহরগুলোর বাইরের যেকোনো এলাকা পরিদর্শনের সময় পূর্বানুমতি নিতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে মেধাসম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার ও মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে সকলকে উদ্যোগী হতে হবে।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক সৃজনশীল প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করার প্রয়োজনে দেশে শক্তিশালী উদ্ভাবনী সংস্কৃতি গড়ে তুলতে সবাই কার্যকর অবদান রাখবেন-এ প্রত্যাশা করি।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস উপলক্ষ্যে এক বাণীতে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস-২০২৫’ উদযাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। এ বছরের প্রতিপাদ্য- 'আইপি এন্ড মিউজিক : ফিল দ্য বিট অব আইপি' যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।"
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সংগীত এক সর্বজনীন ভাষা, যা হৃদয়ের গভীরে প্রতিধ্বনিত হয় এবং আমাদের ঐতিহ্য ও বৈচিত্র্যময় শিল্পধারাকে প্রতিফলিত করে। লোকগান থেকে শুরু করে আধুনিক গানের মূর্ছনায় আমাদের শিল্পীরা প্রতিনিয়ত বিশ্বকে মুগ্ধ করে চলেছেন।
তিনি বলেন, সংগীত শিল্পের সৃজনশীলতা, উদ্ভাবন এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির মধ্যে শক্তিশালী সংযোগ গড়ে তুলতে মেধাসম্পদ আইন ও নীতির যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন। এতে শিল্প ও আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে আমাদের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি আরো ত্বরান্বিত হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি বৈষম্যহীন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি ‘বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস-২০২৫’ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।'
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আমার মূল এজেন্ডা তিনটি। গুণগত শিক্ষা, মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ও পরিবেশের উন্নয়ন। এ লক্ষ্যেই আমরা এখন কাজ করছি।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে উপদেষ্টার ভাবনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে আমি ওই অঞ্চলের প্রতিটি কর্নারে গিয়েছি। মানুষের অবস্থা জানতে চেয়েছি। প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর অবস্থা জানার চেষ্টা করেছি। প্রত্যেকের প্রয়োজনীয়তাগুলো জানতে চেয়েছি। আমার মনে হয়েছে ওই অঞ্চলের লিডারদের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন আছে। খাগড়াছড়ি, বান্দরবন ও রাঙ্গামাটিতে কোথায় কী প্রয়োজন এসব কিছু একজন লিডার এর জানা প্রয়োজন। জেলা পরিষদ ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোতে কিছু যোগ্য লিডার আছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার অনেক টাকা পয়সা দিচ্ছে। কিন্তু আমরা সামষ্টিকভাবে কিছু করতে পারছি না। সরকারি অফিসগুলো সামষ্টিকভাবে কিছু করতে পারছে না। সরকারের অনেক টাকা ওই অঞ্চলে গেছে কিন্তু উন্নয়নটা সেভাবে হয়নি।
পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিগোষ্ঠীগুলোর জন্য গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সব সময় চিন্তা ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামে গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করা। আমাদের প্রতিযোগিতায় আসতে হবে। কেননা সব সময় তো আর আমাদের কোটা থাকবে না। এই প্রতিযোগিতায় আসতে হলে আমাদের কিছু ভালো স্কুল, কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমার চিন্তা হলো— স্যাটেলাইট এডুকেশন। এটা করতে হলে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে হোস্টেল তৈরি করতে হবে। ক্লাস থ্রি-ফোর পর্যন্ত পড়ালেখা শেষে বাচ্চারা উপজেলার হোস্টেলে এসে পড়ালেখা করবে ক্লাস এইট পর্যন্ত। এরপর ইন্টামেডিয়েট (উচ্চ মাধ্যমিক) পর্যন্ত পড়বে জেলার হোস্টেলে থেকে। এ জন্য আমাদের উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে কিছু ভালো স্কুল করতে হবে। তারা যদি এসব স্কুলগুলোতে থেকে পড়ালেখা করতে পারে তবে তারা যেকোনো পর্যায়ে প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত হবে। আমি যখন উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলাম সেসময় পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় ৪০টি হোস্টেল তৈরির কথা বলেছিলাম। এগুলো হবে কিনা জানি না।
তিনি আরও বলেন, গুণগত শিক্ষা ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আমার আরও দুটি এজেন্ডা আছে। ওই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও পরিবেশের উন্নয়ন। আমাদের টি-আর সব নারীদের দিচ্ছি। আমার চিন্তা হলো-নারীদের ক্ষমতায়ন করা গেলে পরিবারের সক্ষমতা বাড়বে। পরিবারের সক্ষমতা বাড়লে তাদের সন্তানদের পড়ালেখা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। পাহাড়ের সকল জাতিগোষ্ঠীর ক্যাপাসিটি এক না। এদের প্রত্যেককেই ছোট-বড় সহযোগিতার মাধ্যমে উঠিয়ে নিয়ে আসতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, আমার তৃতীয় এজেন্ডা পাহাড়ের পরিবেশের উন্নয়ন। পাহাড়ে যত্রতত্র বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে। আমি এটার পক্ষে না। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, পাহাড়ের বড় নদীগুলোতে পানির পরিমাণ কমে গেছে। আমাদের বনভূমি রক্ষা করতে হবে। এ জন্য পানি সংরক্ষণ করে রাখে এমন গাছ লাগাতে হবে। তবেই আমাদের বন আগের অবস্থায় ফিরে যাবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামকে পর্যটন আকর্ষণীয় করা ও নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, এই অঞ্চলে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার অনেক কিছু আছে কিন্তু সিকিউরিটির অভাব আছে। এগুলো একদিনে হবে না। প্রতিনিয়ত কাজ করে যেতে হবে। পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন হলে পার্বত্য এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নও হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে চাঁদাবাজি বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, দিনদিন আমাদের উন্নয়ন হচ্ছে। আমাদের বাহিনীগুলোও অনেক অবদান রাখছে। কিন্তু নিরাপত্তা নিয়ে এখনো আমাদের কিছু অসুবিধা রয়ে গেছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। আমার চিন্তা হলো- চাঁদাবাজি করা লোকদের যদি আমরা চাকরি ব্যবস্থা করার মাধ্যমে পুনর্বাসন করতে পারি তবে আশা করা যায় ওই অসুবিধাটা কমে যাবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের মূল প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের জন্য সকল দরজা খুলে রাখছে। কিন্তু মূল সমস্যা হলো- আমাদের লোকেরা জানে না কোথায় কোন সুবিধা নিতে হবে। পার্বত্য অঞ্চলে সবচেয়ে ভালো করেছে কৃষি বিভাগ। দেখা গেছে, গাছ লাগিয়েছে পানিও দিচ্ছে কিন্তু গাছে ফল দিচ্ছে না। এটা তো একটা সমস্যা। এর সমাধান কিন্তু কৃষি অফিসে গেলেই পাওয়া যাবে। কিন্তু তারা এটা জানেই না। এজন্য পাহাড়িদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমার লোকেরা নিজেরাই জানে না কোথায় কী চাইতে হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, এছাড়া ওই অঞ্চলে অনেক হস্তশিল্প আছে। যেটা তারা কাপড় হিসেবে বিক্রি করে একশো টাকায়। কিন্তু ওইটা ড্রেস হিসেবে বিক্রি করলে হবে সাত শত টাকা। এ জিনিসটাই আমরা তাদের বুঝাতে চেষ্টা করছি। পার্বত্য চট্টগ্রামে আমার একটি প্রজেক্ট চলছে। সেখানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ৬০-৭০ জন মহিলা কাজ করছেন। তাদের মাধ্যমে কাপড় উৎপাদন করে তা বাজারজাত কীভাবে করা যায় সে চেষ্টা আমরা করছি।
মন্তব্য