সয়াবিন তেলের দাম লিটার প্রতি ১৪ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। এতে এক লিটার সয়াবিনের দাম ১৭৫ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮৯ টাকা।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে ভোজ্যতেলের আমদানি ও সরবরাহসহ সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা সংক্রান্ত সভাশেষে এ তথ্য জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেল কিনতে এখন খরচ হবে ১৮৯ টাকা। আগে যা ছিল ১৭৫ টাকা। পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের বোতলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২২ টাকা, যা ছিল ৮৫২ টাকা।
বোতলজাত তেলের পাশাপাশি খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দামও ১৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের কারনে এই মুল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে এই মুল্য আরও কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
এর আগে, গতমাসের ২৭ তারিখে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৮ টাকা এবং খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ১৩ টাকা বাড়াতে চেয়ে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনে চিঠি দেয় ভোজ্যতেল পরিশোধন কারখানাগুলোর সমিতি।
ভোজ্যতেলের আমদানি পর্যায়ে শুল্ক-কর অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হওয়ায় দাম বাড়ানোর দাবি জানায় সমিতিগুলো।
এই নিয়ে গত সপ্তাহে সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি সরকার। অবশেষে আজকের (মঙ্গলবার) বৈঠক শেষে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা।
ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো এবং বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।
আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়েছে, সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
গতকাল বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ফেনীতে ৩৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজ বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ১৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
উল্লেখ্য, আজ ভোর ৬টা পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে সীতাকুণ্ডে ৩৬ মিলিমিটার বা মিমি।
আজ সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৭৫ শতাংশ। ঢাকায় বাতাসের গতি দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার যা অস্থায়ীভাবে দমকায় ঘন্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ভোর ৫টা ৩৬ মিনিটে।
আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মতপার্থক্য দূর করে যেসব জায়গায় সবাই একমত আছে, তার ভিত্তিতে জাতীয় সনদ তৈরি করা যাবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, আলোচনার মধ্য দিয়ে জাতীয় সনদ তৈরির মাধ্যমে জাতির যে রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা, সেদিকে অগ্রসর হওয়া যাবে।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (এনডিএম) সঙ্গে আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে গতকাল পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার সময় আমরা টেবিলের দুই প্রান্তে বসলেও আমরা দুই পক্ষ নই। আমরা একপক্ষ, আমাদের লক্ষ্য এক। আমরা রাষ্ট্র সংস্কারের একটি সুনির্দিষ্ট পথ খুঁজে বের করে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে সবাই চেষ্টা করছি।
আলোচনার শুরুতে অধ্যাপক আলী রীয়াজ আরও বলেন, আমাদের পথের ক্ষেত্রে সামান্য ভিন্নতা আছে। আলোচনার মাধ্যমে এই মতভিন্নতা দূর করা যাবে। যে ঐক্যের মাধ্যমে আমরা একটা ফ্যাসিবাদী শাসনকে পরাস্ত করতে পেরেছি, সেই ঐক্যের জায়গাকে অব্যাহত রেখে তা আরও সুদৃঢ় করতে পারব।
বিজ্ঞপ্তিতে আলী রীয়াজ বলেন, আমাদের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে যত দ্রুততার সঙ্গে সম্ভব একটি জাতীয় সনদের জায়গায় পৌঁছানো। এই কমিশনের মেয়াদ জুলাই মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। আশা করছি প্রাথমিক আলোচনা মে মাসের মাঝামাঝি পর্যায়ে শেষ করা যাবে। এরপর পরবর্তী ধাপে অগ্রসর হবে কমিশন। আমরা বিবেচনা করব কীভাবে এক জায়গায় আসতে পারি।
আলোচনায় এনডিএম-বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বে আট সদস্যের প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন দলটির মহাসচিব মোমিনুল আমিন, ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক উজ জামান চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার সাহিদুল আজম প্রমুখ। এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের বেশির ভাগ জায়গায় এনডিএম একমত জানিয়ে ববি হাজ্জাজ বলেন, তারা সংস্কারগুলো বড়ভাবে দেখতে চান।
প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লিখিত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে অনুরোধ করে সুপারিশগুলোর স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩৪টি দলের কাছ থেকে মতামত পেয়েছে এবং এ পরিপ্রেক্ষিতে ৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে কমিশন। আগামী ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট পেপার ছাপানোসহ অন্যান্য মুদ্রণ কাজে কাগজ লাগবে ২ লাখ ৩০ হাজার রিম। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৩৫ কোটি টাকার বেশি।
জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার এক আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রণালয় (বিজি প্রেস) থেকে এই চাহিদা দেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। পরবর্তীতে আরও কয়েকটি বৈঠক করে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, বিজি প্রেসের সঙ্গে আমাদের প্রাথমিক বৈঠক হয়েছে। তারা বলেছে, ব্যালট পেপারসহ সব মুদ্রণ কাজ সম্পন্ন করতে তিন মাসের মতো সময় লাগবে। আমরা বলেছি চার মাস সময় নেন।’
এক্ষেত্রে তারা সবকিছু হিসাব করে পরবর্তী বৈঠকে জানাবে বলেও জানান আখতার আহমেদ।
কর্মকর্তারা বলছেন, মূলত ডিসেম্বরকে টার্গেট করেই কাগজ কেনা হবে। এক্ষেত্রে তফসিলের আগেই কাগজ কেনা সম্পন্ন করতে হবে। এজন্য সেপ্টেম্বরের মধ্যে তারা ক্রয় কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। কেননা, তফসিলের আগেই বেশ কিছু মুদ্রণ সম্পন্ন করতে হয়।
আলোচনার পর ইসি সচিব তাদের চার মাস সময় দিয়েছেন। এক্ষেত্রে আগামী মে মাস থেকেই কাগজ কেনার কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
জানা গেছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদের ৩০০টি আসনের নির্বাচন এবং অন্যান্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের (ইউনিয়ন পরিষদ ব্যতীত) নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী সামগ্রীর মুদ্রণ পরিকল্পনা প্রণয়ন করার অংশ হিসেবেই বৈঠকটি হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ২১ প্রকার ফরম, ১৭ প্রকার প্যাকেট, পাঁচ প্রকার পরিচয়পত্র, আচরণ বিধি, প্রতীকের পোস্টার, নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়েল, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়েল, নির্দেশিকা ইত্যাদি মুদ্রণ কার্যক্রম শুরু করা প্রয়োজন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট পেপার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নাম ও প্রতীক সংবলিত হয়ে থাকে। এ কারণে নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার পর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের তালিকা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপুল পরিমাণ পেপার স্বল্প সময়ের মধ্যে মুদ্রণ করে মাঠ কার্যালয়গুলোতে বিতরণ করতে হবে। অন্যান্য ফরম, প্যাকেট, পরিচয়পত্র, আচরণ বিধিমালা, প্রতীকের পোস্টার, ম্যানুয়েল, নির্দেশিকা ইত্যাদি সম্ভাব্য সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে মুদ্রণ করে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
জাতীয় সংসদ এবং অন্যান্য স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ ব্যতীত) নির্বাচনে ব্যালট পেপারসহ অন্যান্য মুদ্রণ সামগ্রী মুদ্রণের জন্য কী পরিমাণ কাগজ প্রয়োজন হবে তার হিসাব জানার জন্য গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেস, তেজগাঁও এবং কাগজের বর্তমান মজুত সম্পর্কে জানার জন্য বাংলাদেশ স্টেশনারি অফিস, তেজগাঁও, ঢাকা-কে গত ১৩ জানুয়ারি চিঠি পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেস, তেজগাঁও ও বাংলাদেশ স্টেশনারি অফিস, তেজগাঁও, ঢাকা নির্বাচন কমিশনে সচিবালয়ের সংরক্ষিত কাগজের বিস্তারিত হিসাব প্রেরণ করে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য নির্বাচন উপলক্ষে এক লাখ ৬১ হাজার ৭৪ রিম কাগজ ক্রয় করা হয়েছিল। আগামীতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচনে দুই লাখ ৩০ হাজার রিম কাগজের প্রয়োজন হবে। বর্তমানে এক লাখ ৬৯ হাজার রিম কাগজ মজুদ রয়েছে। বাকিগুলো কিনতে হবে। এজন্য ৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৫৫ হাজার ৫২৩ টাকা সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে।
নির্বাচনী মুদ্রণের কাজ মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন গভর্নমেন্ট প্রিন্টিং প্রেস, বাংলাদেশ সরকারি মুদ্রণালয় (বিজি প্রেস) ও বাংলা নিরাপত্তা মুদ্রণালয়ে সম্পন্ন করা হয়।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০টি সংসদীয় আসনে ৪৮ হাজার ভোটকেন্দ্র ছিল। এবার সে সংখ্যা বাড়তে পারে৷ এছাড়া ভোটার সংখ্যাও বেড়ে সাড়ে ১২ কোটি হতে পারে। তাদের ব্যালট পেপার, মনোনয়নপত্রসহ ৫৩ ধরনের নির্বাচনী উপকরণ ছাপাতে হয়।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের করা পৃথক দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ২৯ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
দুই মামলায় দুদকের দেওয়া চার্জশিট আমলে গ্রহণ করে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এর মধ্যে এক মামলায় ১২ জন ও অন্য মামলায় ১৭ জন আসামি। আসামিরা পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। একইসঙ্গে আসামিদের গ্রেপ্তারসংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২৯ এপ্রিল দিন ধার্য করা হয়েছে। এ নিয়ে দুদকের করা ছয় মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলো।
দুদকের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য আসামিরা হলেন- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন ও সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য তন্ময় দাস, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সাবেক সদস্য শফি উল হক, পরিচালক মো. কামরুল ইসলাম, পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন ও সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
আসামিদের মধ্যে শেখ হাসিনা, পূরবী গোলদার, আনিছুর রহমান, নাসির উদ্দীন, সামসুদ্দীন, নায়েব আলী, খুরশীদ আলম, শরীফ আহমেদ, শহীদ উল্লা, ওয়াছি উদ্দিন ও সাইফুল ইসলাম দুই মামলাতেই রয়েছেন। সে হিসেবে দুই মামলায় মোট ১৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলো।
এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান বাদী হয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়কে প্রধান ও শেখ হাসিনাকে সহযোগী আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় আরও ১৩ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।
গত ১৪ জানুয়ারি দুদকের উপপরিচালক মো. সালাউদ্দিন বাদী হয়ে শেখ হাসিনাসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তদন্ত শেষে ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল করে দুদক।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে শেখ হাসিনা নিজের মালিকানায় ও তার ছেলে, মেয়ে, বোন এবং বোনের দুই ছেলেমেয়ের নামে ঢাকা শহরে বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরেও সেই তথ্য গোপন করে পূর্বাচল নতুন শহর আবাসন প্রকল্পের প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। এতে বরাদ্দসংক্রান্ত আইন ও নীতিমালা লঙ্ঘন হয়েছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার দপ্তরসহ প্রকল্পের বরাদ্দবিষয়ক দায়িত্বপ্রাপ্ত গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউকের কর্মচারীদের প্রভাবিত করে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।
জানা যায়, পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার প্রমাণ পাওয়ায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানার পরিবারের সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন এবং জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক ৮টি অভিযোগপত্র বা চার্জশিট দাখিল করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ১২, ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো দায়ের করা হয়।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সরকারের সর্বোচ্চ পদাধিকারী ও পাবলিক সার্ভেন্ট হিসেবে বহাল থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের ওপর অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হওয়া সত্ত্বেও অসৎ উদ্দেশ্যে পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নং সেক্টরের ২০৩নং রাস্তার ৬টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ১৬১/১৬৩/১৬৪/৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
দেড় দশক দেশ শাসনের পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর থেকে সেখানেই রয়েছেন তিনি।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরোওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় আবারও বাড়িয়েছেন আদালত। আদালত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে ২১ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছেন। এ নিয়ে এ মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ ১১৭ বার পেছানো হলো।
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে গতকাল মঙ্গলবার এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের ধার্য দিন ছিল। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পক্ষ থেকে আজ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি।
এক যুগ পর সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ৪ নভেম্বর মামলার আগের তদন্ত সংস্থা র্যাবের কাছ থেকে মামলার নথিপত্র বুঝে নিয়েছে পিবিআই। সংস্থাটি এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় এই সাংবাদিক দম্পতি নৃশংসভাবে খুন হন। সাগর মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক ছিলেন। রুনি ছিলেন এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক।
সাগর-রুনি হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। প্রথমে এই মামলা তদন্ত করছিল শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ। চার দিন পর মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিনের মাথায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি। এরপর আদালত র্যাবকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তখন থেকে মামলাটির তদন্ত করছে র্যাব।
২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি লিখিতভাবে র্যাব আদালতকে জানিয়েছিল, সাগর-রুনির বাসা থেকে জব্দ করা আলামতের ডিএনএ পর্যালোচনায় অজ্ঞাত পরিচয় দুই পুরুষের উপস্থিতি মিলেছে। অজ্ঞাত পরিচয় দুই পুরুষকে শনাক্ত করতে যুক্তরাষ্ট্রের ইনডিপেনডেন্ট ফরেনসিক সার্ভিসেস (আইএফএস) ল্যাবে ডিএনএ পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে ছবি প্রস্তুতির চেষ্টা চলছে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ডিএনএ ল্যাবের ফলাফল জেনেছে র্যাব। তবে অজ্ঞাত পরিচয় দুজনের ডিএনএ থেকে ছবি তৈরির সন্তোষজনক ফল আসেনি।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে দুজন জামিনে, বাকি ছয়জন কারাগারে।
৩০ সেপ্টেম্বর সাগর ও রুনি হত্যা মামলার তদন্তে বিভিন্ন সংস্থার অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠন করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। স্বরাষ্ট্র সচিবের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তদন্ত শেষে ছয় মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে স্থলপথে সুতাসহ বেশ কিছু পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। দেশটি থেকে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া অন্য পণ্যগুলো হচ্ছে ডুপ্লেক্স বোর্ড, নিউজপ্রিন্ট, ক্রাফট পেপার, সিগারেট পেপার, মাছ, সুতা, আলু, গুঁড়া দুধ, টোব্যাকো, রেডিও-টিভি পার্টস, সাইকেল ও মোটর পার্টস, ফরমিকা শিট, সিরামিকওয়্যার, স্যানিটারিওয়্যার, স্টেইনলেস স্টিলওয়্যার, মার্বেল স্ল্যাব ও টাইলস এবং মিক্সড ফেব্রিক্স। সংস্থাটির কাস্টমস উইং থেকে গতকাল মঙ্গলবার জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কাস্টমস আইন, ২০২৩-এর ধারা ৮-এর উপধারা (১)-এর ক্ষমতাবলে এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এ ছাড়া নেপাল ও ভুটান থেকে আমদানিযোগ্য বেশ কয়েকটি পণ্যের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এনবিআর। এর মধ্যে রয়েছে নেপাল ও ভুটানে উৎপাদিত এবং প্রক্রিয়াজাত সুতা ও আলু। তবে এর বাইরে প্রচলিত অন্য যেসব পণ্য আমদানি হচ্ছে সেগুলোতে বাধা দেওয়া হয়নি। তবে মূসক নিবন্ধিত বিড়ি উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো কাঁচামাল হিসেবে তামাক ডাঁটা আমদানি করতে পারবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে।
ভারত থেকে স্থলপথে সুতা আমদানি বন্ধ
প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুবিধা বাতিল করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গতকাল মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট জারি করা প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে নতুন এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এই আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হয়। ওই সব স্থলবন্দর দিয়ে মূলত ভারত থেকে সুতা আমদানি হতো।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে বস্ত্র খাতের অন্যতম কাঁচামাল সুতা আমদানি বন্ধের দাবি জানায় বস্ত্রশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। এরপর গত মার্চ মাসে এক চিঠিতে পোশাকশিল্পে দেশে তৈরি সুতার ব্যবহার বাড়াতে স্থলবন্দর দিয়ে পোশাকশিল্পের সুতা আমদানি বন্ধ করার জন্য এনবিআরকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন।
তখন ট্যারিফ কমিশন থেকে এনবিআর চেয়ারম্যানকে পাঠানো চিঠিতে দেশীয় টেক্সটাইল শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে সব সীমান্তসংলগ্ন সড়ক ও রেলপথ এবং স্থলবন্দর ও কাস্টম হাউসের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসারে সুতা কাউন্ট নির্ণয়ে যথাযথ অবকাঠামো প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সমুদ্রবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুপারিশ করা হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান এ-সংক্রান্ত আদেশ জারি করেন। তবে স্থলপথ ছাড়া সমুদ্রপথে বা অন্য কোনো পথে সুতা আমদানি করা যাবে।
জানা গেছে, ভারতের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলে উৎপাদিত সুতা কলকাতায় গুদামজাত করা হয়। এরপর সেখান থেকে সুতা বাংলাদেশে পাঠানো হয়। এসব সুতা তুলনামূলক কম দামে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এ কারণে দেশি সুতার পরিবর্তে স্থলবন্দর দিয়ে আসা সুতা বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে। এ কারণে দেশের বস্ত্রশিল্প কারখানাগুলো বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছে বলে দাবি করেছিল বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)।
জানা গেছে, চীন, তুরস্ক, উজবেকিস্তান এবং দেশে উৎপাদিত সুতার দাম প্রায় একই রকম হলেও স্থলবন্দর দিয়ে আসা ভারতীয় সুতার দাম অনেক কম থাকে। অর্থাৎ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি করা সুতা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ঘোষিত দামের চেয়ে অনেক কম দামে আসে। এতে দেশের সুতা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা এবং অবৈধ রি-এক্সপোর্ট বা রিরাউটিং রোধ করতেই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে টেক্সটাইল, কাগজ ও সিরামিক পণ্য খাতে দেশীয় শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা রক্ষা করাই মূল উদ্দেশ্য। তবে কিছু ব্যবসায়ী মহল থেকে এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করা হচ্ছে। তারা বলছেন, বিকল্প উৎস থেকে পণ্য আমদানিতে খরচ বাড়বে, যা শেষ পর্যন্ত ভোক্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা না দিলেও, ধারণা করা হচ্ছে বাজেটপূর্ব রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষার অংশ হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সাবেক উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী লুৎফর রহমান ও মাহদী হাসান বাদী হয়ে এই মামলা করেছেন।
সোমবার (১৪ই এপ্রিল) নগরীর খানজাহান আলী থানায় মামলা দুটি নথিভুক্ত করা হয়। তবে গতকাল (মঙ্গলবার) নথিপত্র আদালতে পাঠানো হলে মামলার বিষয়টি সামনে আসে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন। তিনি জানান, ২০১৭ সালের ১ মে রাতে কুয়েটের লালন শাহ হলের গেস্ট রুমে মামলার এক বাদী লুৎফর রহমানকে রাতভর মারধর করা হয়। এতে ওই শিক্ষার্থীদের দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে যায়। একই রাতে বাদী মাহদী হাসানকেও মারধর করা হয়। এতে তার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ওসি কবির হোসেন আরও জানান, চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি ভুক্তভোগীরা খুলনা মহানগর হাকিমের আদালতে মামলার আবেদন করেন। পরে আদালত থানাকে মামলাটি গ্রহণের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে সোমবার মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, লুৎফর রহমানের মামলায় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সোবহান মিয়া, সাবেক রেজিস্ট্রার জি এম শহিদুল ইসলাম, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাফায়েত হোসেন নয়ন, সাধারণ সম্পাদক আলী ইমতিয়াজ সোহান, ছাত্রলীগ কর্মী মো. আসাদুজ্জামান, লালন শাহ্ হলের তৎকালীন ছাত্রলীগ কর্মী ও পরবর্তী কুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি রুদ্রনীল সিংহ শুভ, ছাত্রলীগ নেতা এইচ এম তানভীর রেজওয়ান সিদিক, আল ইশমাম, রেশাদ রহমান, তারিকুল তিলক, পরিমল কুমার রায়, আলী ইবনুল সানি, তারিক আহমেদ শ্রাবন ও দৌলতপুর থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেনকে আসামি করা হয়েছে।
অন্যদিকে মাহদী হাসানের মামলায় সাবেক উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতা আলী ইবনুল সানি, কুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান, বঙ্গবন্ধু হলের ছাত্রলীগ কর্মী আবির স্বপ্নিল, তাশরিফ সালেহ রাহুল, ফয়সাল, মশারুর আলম কৌশিক, আসাদুজ্জামান রিয়ান, পরিমল কুমার রায়, তারিক আহমেদ শ্রাবন ও দৌলতপুর থানার সাবেক সভাপতি এস এম আনোয়ার হোসেনকে আসামি করা হয়েছে।
মন্তব্য