× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
Is science really saying that there are ghosts?
google_news print-icon

ভূত কি সত্যিই আছে, কী বলছে বিজ্ঞান?

ভুত
ভুতের পেছনে মূল ভূমিকা মানুষের মস্তিষ্কের। ছবি: সংগৃহীত

ভূত বা অতিলৌকিক ঘটনায় বিশ্বাসী মানুষের সংখ্যা অসংখ্য। পশ্চিমা দেশেও ব্যাপক মাত্রায় রয়েছে ভূত বিশ্বাস। ভৌতিক ঘটনার মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা কি সত্যিই বাস্তব। এ বিষয়ে পরিচালিত হয়েছে বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণা। বিষয়টি নিয়ে একটি নিবন্ধ লিখেছেন বিজ্ঞানবিষয়ক ফ্রিল্যান্স লেখক ক্যাথরিন হিউলিক। সায়েন্স নিউজ ফর স্টুডেন্টসে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি কিছুটা সংক্ষিপ্ত ভাষান্তর করেছেন সঞ্জয় দে।

আবছায়া কেউ একজন যেন দরজা গলে ছুটে এলো। ডোমের বয়স তখন মাত্র ১৫ বছর, তরুণ বয়সেও সেদিনের স্মৃতি একদম পরিষ্কার।

যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা ডোম বলছিলেন, ‘ছায়ামূর্তির শরীর বলতে শুধু একটি কঙ্কাল। সাদাটে ঝাপসা আভায় বেষ্টিত। দেহটি খুব নড়ছিল, মনে হয়নি ওর কোনো মুখ আছে। আমি আতঙ্কে চোখ বন্ধ করে দিলাম। মাত্র এক সেকেন্ডের জন্য ওকে দেখেছি।’

ডোম সেদিন যা দেখেছিলেন, তা কি একটি ভূত ছিল? যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতি ও লোকবিশ্বাসে ভূত বা আত্মা হলো একজন মৃত ব্যক্তি, যিনি সজীব বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। বিভিন্ন গল্পে ভূত ফিসফিস করে বা কান্নাকাটি করতে পারে, জিনিসপত্র নাড়াচড়া করতে বা ফেলে দিতে পারে, ইলেকট্রনিকস সামগ্রীতে গণ্ডগোল বাধাতে পারে; এমনকি একটি ঝাপসা অবয়ব নিয়ে দৃশ্যমান হতে পারে।

ভূতের গল্পগুলো বেশ মজার, বিশেষ করে হ্যালোইনসংক্রান্ত গল্পগুলো। তবে কিছু মানুষ বিশ্বাস করেন, ভূত বিষয়টি বাস্তব। ২০১৮ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ চ্যাপম্যান পরিচালিত একটি সমীক্ষায় অতীন্দ্রিয় বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের বিশ্বাস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। জরিপে অংশ নেয়া ৫৮ শতাংশ মানুষ বলেছেন, বিশেষ কোনো স্থান বিদেহী আত্মার মাধ্যমে ‘ভুতুড়ে’ হয়ে যেতে পারে।

ওয়াশিংটন ডিসির পিউ রিসার্চ সেন্টার পরিচালিত আরেক জরিপে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি পাঁচজনের মধ্যে প্রায় একজন বলেছেন, তারা ভূত দেখেছেন বা ভুতুড়ে পরিবেশে ছিলেন।

ভূতবিষয়ক টেলিভিশন শোতে অনেকে আত্মার কার্যকলাপ রেকর্ড বা পরিমাপের জন্য বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম ব্যবহার করেন। সেই সঙ্গে অসংখ্য ভয়ংকর ছবি ও ভিডিও দেখে মনে হয় সত্যিই যেন ভূত আছে।

যাহোক, এসবের কোনোটিই ভূতের অস্তিত্বের ভালো প্রমাণ দেয় না। মানুষকে বোকা বানানোর জন্য অনেকে বিভিন্ন প্রতারণার আশ্রয় নেন।

এ ছাড়া ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলো কখনও কখনও এমন সব শব্দ, ছবি বা অন্যান্য সংকেত ধারণ করে, যা সাধারণত লোকজন আশা করেন না। এর সম্ভাব্য অনেক ব্যাখ্যা রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে ভূতের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা সবচেয়ে কম।

বৈজ্ঞানিকভাবে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া বা দেয়ালের মধ্য দিয়ে যাওয়ার মতো কাজ ভূতের পক্ষে করা সম্ভব নয়। এ ছাড়া নির্ভরযোগ্য গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করেও বিজ্ঞানীরা ভূতের অস্তিত্বহীনতার প্রমাণ পেয়েছেন। বিজ্ঞানীরা বেশ কিছু কারণ আবিষ্কার করেছেন যার জন্য লোকজন ভূতের মুখোমুখি হওয়ার অভিজ্ঞতা অনুভব করতে পারেন। এসব বৈজ্ঞানিক ডেটা প্রমাণ করে, আপনার চোখ, কান বা মস্তিষ্কও সব সময় আপনাকে সঠিক তথ্য দেয় না।

‘চোখ খোলা রেখে স্বপ্ন দেখছি’

ডোম আট বা নয় বছর বয়স থেকে অস্বাভাবিক অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে শুরু করেন। ঘুম ভাঙার পরও তিনি নড়াচড়া করতে পারতেন না। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তিনি বিষয়টি নিয়ে বোঝার চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি জানতে পারেন, বিশেষ ওই অবস্থাটির একটি বৈজ্ঞানিক নাম রয়েছে, সেটি হলো স্লিপ প্যারালাইসিস বা ঘুমের পক্ষাঘাত।

এটি এমন এক অবস্থা যখন কেউ জাগ্রত অবস্থাতেও নিজেকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত বা নিশ্চল বোধ করেন। তিনি নড়াচড়া বা কথা বলতে পারেন না, এমনকি গভীরভাবে শ্বাস নিতে পারেন না। তিনি এমন কিছু দেখতে, শুনতে বা অনুভব করতে পারেন, যা আসলে সেখানে নেই। একে বলা হয় হ্যালুসিনেশন।

ডোমের কখনও কখনও মনে হতো কোনো প্রাণী তার ওপর হাঁটছে বা বসে আছে। অন্য সময় তিনি চিৎকার শুনতে পান। সেই কিশোর বয়সেই তিনি দরজাভেদী ওই ছায়ামূর্তিটি দেখেছিলেন।

মস্তিষ্কের ঘুমিয়ে পড়া বা জেগে ওঠার প্রক্রিয়ায় বিশৃঙ্খলা ঘটলে সাধারণত ঘুমের পক্ষাঘাত তৈরি হয়। সাধারণত আমরা পুরোপুরি ঘুমানোর পরেই স্বপ্ন দেখতে শুরু করি। ঘুম থেকে ওঠার আগে এই স্বপ্ন দেখাও বন্ধ হয়ে যায়।

ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ কেমব্রিজের স্নায়ুবিজ্ঞানী বালান্দ জালাল বলছিলেন, ‘স্লিপ প্যারালাইসিস হলো চোখ খোলা রেখে স্বপ্ন দেখার মতো।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে প্রাঞ্জল স্বপ্নগুলো ঘুমের একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে ঘটে। এ সময় চোখের বন্ধ পাতার নিচে মণির দ্রুত সঞ্চালন ঘটে। স্বপ্ন দেখার সময়ে চোখ নড়াচড়া করলেও শরীরের বাকি অংশ থাকে নিশ্চল, অনেকটা পক্ষাঘাতগ্রস্ত। (স্বপ্ন দেখার সময় শরীর নিশ্চল না হলে কিন্তু বেশ বিপদ ঘটতে পারে। ধরা যাক, স্বপ্নে আপনি হাত-পা ছুড়ে বাস্কেটবল খেলছেন। সে সময় বাস্তবে হাত-পা সচল থাকলে বিছানার পাশের দেয়ালে আঘাত কিংবা মেঝেতে গড়াগড়ি খেতে হতো।)’

ঘুম থেকে জেগে ওঠার আগে মস্তিষ্ক ফের শরীরের সচলতা ফিরিয়ে দেয়। তবে স্লিপ প্যারালাইসিসের ক্ষেত্রে বিষয়টি ঠিক ওভাবে ঘটে না।

ভূত কি সত্যিই আছে, কী বলছে বিজ্ঞান?

মেঘে ভাসা মুখচ্ছবি

যেখানে যা নেই, সেটি দেখতে সব সময় যে আপনার স্লিপ প্যারালাইসিস থাকতে হবে- তাও কিন্তু নয়। কখনও কি মনে হয়েছে, আপনার ফোন বাজছে, অথচ ধরার পর দেখা গেল সেটি নিশ্চল? অথবা এমন কি কখনও মনে হয়েছে, চারপাশে কেউ নেই, তার পরও কেউ যেন এইমাত্র আপনার নাম ধরে ডাকল? আবার অন্ধকার ছায়ায় হঠাৎ যেন একটি মুখ উঁকি দিয়ে গেল?

ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অফ নর্থামব্রিয়ার মনোবিদ ডেভিড স্মাইলেস বলেছেন, এসবও এক ধরনের হ্যালুসিনেশন। তিনি মনে করেন, প্রায় সবারই এমন অভিজ্ঞতা রয়েছে। বেশির ভাগ মানুষ এটি উপেক্ষা করেন, তবে কেউ কেউ ভাবেন এটা ভূতের কাণ্ডকারখানা।

বিশ্ব সম্পর্কে আমাদের ইন্দ্রিয়গুলো সব সময় সঠিক তথ্য দেবে, এমনটা ভাবতেই আমরা অভ্যস্ত। তাই কখনও হ্যালুসিনেশনের অভিজ্ঞতা হলে আমাদের প্রথম প্রবৃত্তিটি সাধারণত বিশ্বাস স্থাপনের দিকেই যায়।

ডেভিড স্মাইলেস বলেন, ‘আপনি যদি মৃত প্রিয়জনের উপস্থিতি দেখেন বা অনুভব করেন এবং সেই উপলব্ধিতে বিশ্বাস স্থাপন করেন- তাহলেই কিন্তু বিষয়টি ভৌতিক ঘটনায় পরিণত হয়ে যায়। কারণ মস্তিষ্ক আপনাকে মিথ্যা বলছে এমন ধারণার চেয়ে বিশ্বাস স্থাপন করা অনেক বেশি সহজ।’

মস্তিষ্কের কিন্তু খুব কঠিন একটি কাজ আছে। বিশ্বের অজস্র তথ্যের সংকেতের ব্যবস্থাপনায় অক্লান্ত কাজ করে যায় আমাদের মগজ। চোখ রঙের সংকেত দেয়, কান নানান শব্দের সংকেত পাঠায়। ত্বক চাপ-তাপের অনুভব তৈরি করে।

মস্তিষ্ক এই জগাখিচুড়ি সংকেতের জঞ্জাল থেকে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সুবিন্যস্ত করার কাজ করে। একে বলা হয় বটম-আপ প্রসেসিং। আর এ কাজে দারুণ দক্ষ আমাদের মস্তিষ্ক। এই দক্ষতা এতটাই ভালো যে কখনও কখনও অর্থহীন জিনিসগুলোরও অর্থ খুঁজে পায় মাথার মগজ। একে বলা হয় প্যারিডোলিয়া। আপনি মেঘের দিকে তাকিয়ে খরগোশ, জাহাজ বা কোনো মানুষের মুখ যখন দেখেন, সেটি ঘটে এই প্যারিডোলিয়ার কারণে।

মস্তিষ্ক টপ-ডাউন পদ্ধতিতেও সংকেতের প্রক্রিয়াজাত করে। ডেভিড স্মাইলেস বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে সংকেতের সঙ্গে বিশ্ব সম্পর্কে আপনার উপলব্ধির তথ্য যুক্ত হয়। বেশির ভাগ সময় ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে অজস্র সংকেত মস্তিষ্কে আসে। এর সবগুলোতে মনোযোগ দিলে আপনি উন্মাদ হয়ে যাবেন। এ জন্য মস্তিষ্ক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো বেছে নেয়। তারপর তথ্যের বাকিটা পূরণ করে বিশ্ব সম্পর্কে আপনার আগে থেকে তৈরি উপলব্ধি বা পারসেপশন দিয়ে।’

আর তাই আপনি এই মুহূর্তে যা দেখছেন, বাস্তবের পৃথিবী তা নাও হতে পারে। যেটি দেখছেন তা আসলে এমন একটি ছবি, যা চোখের মাধ্যমে ধারণ করা সংকেতের ভিত্তিতে মস্তিষ্ক আপনার জন্য এঁকে দিয়েছে। অন্য ইন্দ্রিয়ের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটছে। বেশির ভাগ সময় এই ছবিটি সঠিক। তবে কখনও কখনও মস্তিষ্ক এমন কিছু যোগ করে দেয়, যার অস্তিত্ব আদৌ নেই।

উদাহরণ দিয়ে বলা যেতে পারে, আপনি কোনো গানের কথা শুনতে ভুল করলে মস্তিষ্ক ঠিকই সেখানে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোনো শব্দ যোগ করে দেয়। (এবং আপনি পরে সঠিক শব্দ শিখলেও মস্তিষ্ক সম্ভবত সেই ভুল শোনাকেই অব্যাহত রাখবে।)

তথাকথিত ভূত-শিকারিরা তাদের যন্ত্রে বিশেষ শব্দ ধারণ করে সেগুলোকে ভূতের কথাবার্তা হিসেবে প্রচার করার সময়েও একই ঘটনা ঘটতে পারে। এই রেকর্ডিং সম্ভবত শুধু একরাশ বিশৃঙ্খল শব্দমালা। অনুমান শক্তির ওপর নির্ভর না করলে আপনি এই শব্দমালার কোনো অর্থ খুঁজে পাবেন না। তবে যখন অনুমান করতে চাইবেন, তখন মনে হবে যেন সহজেই তা বুঝতে পারছেন।

আমাদের মস্তিষ্ক বিশৃঙ্খলতার মাঝে কোনো অবয়ব যুক্ত করে দিতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব রোগী ভিজ্যুয়াল হ্যালুসিনেশন অনুভব করেন, তাদের প্যারিডোলিয়ার মাত্রা সম্ভাবনা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি।

ডেভিড স্মাইলেসের মতে, মানুষ সাধারণত একাকী, অন্ধকারাচ্ছন্ন ও ভয়ার্ত পরিবেশে ভূতের অস্তিত্ব অনুভব করেন। অন্ধকার পরিবেশে মানব মস্তিষ্ক বিশ্ব থেকে পর্যাপ্ত চাক্ষুষ তথ্য পেতে ব্যর্থ হয়। এমন অবস্থায় মস্তিষ্কের নিজস্ব সৃষ্টিকে বাস্তবতার ওপর চাপিয়ে দেয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে।

আপনি কি গরিলা দেখেছেন?

মস্তিষ্ক বাস্তবতার চিত্রে কখনও কখনও এমন জিনিস অন্তর্ভুক্ত করে যার অস্তিত্ব আসলে নেই। আবার অনেক সময় বাস্তবে থাকা কোনো জিনিসকে শনাক্ত করতে ব্যর্থতার ঘটনাও ঘটে। একে বলা হয় ‘অমনোযোগী অন্ধত্ব’ বা ইনটেনশনাল ব্লাইন্ডনেস

এটি কীভাবে কাজ করে বুঝতে চাইলে নিচের ভিডিওটি দেখুন।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে সাদা ও কালো শার্ট পরা লোকজন বাস্কেটবল খেলছেন। সাদা শার্ট পরা খেলোয়াড়েরা কতবার বল পাস করছেন গণনা করুন। কয়বার দেখতে পেলেন?

ভিডিওটির এক অংশে গরিলা স্যুটে এক ব্যক্তি খেলোয়াড়দের মধ্য দিয়ে হেঁটে গেছেন। সেটি কি দেখতে পেয়েছেন? এই ভিডিও নিয়ে করা গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় অর্ধেক দর্শক ভিডিও দেখার সময় গরিলার পোশাকে চলে যাওয়া ব্যক্তিকে দেখতে পারেননি।

আপনিও যদি গরিলাকে মিস করেন, তাহলে ধরে নিতে হবে এটা আপনার ইনটেনশনাল ব্লাইন্ডনেসের কারণে ঘটেছে। আপনার মস্তিষ্ক এমন একটি অবস্থায় ছিল, ইংরেজিতে যাকে বলা হয় অ্যাবজরপশন। এমন অবস্থায় আপনি একটি কাজে এতটাই মনোযোগী হন যে, আশপাশের আর সবকিছু নজর এড়িয়ে যায়।

লন্ডনের গোল্ডস্মিথ ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানী ক্রিস্টোফার ফ্রেঞ্চ বলেছেন, ‘মস্তিষ্কের মেমরি ভিডিও ক্যামেরার মতো কাজ করে না। আপনি কেবল সেটাই মনে রাখবেন যাতে আপনি মনোযোগ দিচ্ছেন। কিছু লোকের অন্যদের তুলনায় মনোযোগী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর তাদের ভূতসহ উচ্চমাত্রার অলৌকিকতায় বিশ্বাসের মাত্রাও বেশি।’

ক্রিস্টোফার ও তার সহকর্মীরা ২০১৪ সালে একটি সমীক্ষা চালান। এতে দেখা গেছে, উচ্চতর মাত্রায় অলৌকিকতায় বিশ্বাস এবং অভিনিবেশের উচ্চ প্রবণতা থাকা ব্যক্তিদের অসাবধানতাবশত অন্ধত্বে ভোগার সম্ভাবনা বেশি। তাদের মস্তিষ্কে একসঙ্গে অনেক স্মৃতিশক্তি ধরে রাখার ক্ষমতা কম।

স্মৃতিতে প্রচুর তথ্য রাখতে বা একবারে একাধিক জিনিসের প্রতি মনোযোগ দেয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হলে চারপাশ থেকে সংবেদনশীল সংকেতগুলো হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। আর সে ক্ষেত্রে অনেকে ভুল ধারণার দায় চাপাতে পারেন ভূতের ওপর।

বিশ্লেষণাত্মক চিন্তার শক্তি

যেকোনো ব্যক্তি ঘুমের পক্ষাঘাত, হ্যালুসিনেশন, প্যারিডোলিয়া বা অমনোযোগী অন্ধত্ব অনুভব করতে পারেন। তবে এই অভিজ্ঞতাকে ব্যাখ্যার উপায় হিসেবে সবাই ভূত বা অন্য কোনো অতিপ্রাকৃত সমাধানের পথ খোঁজেন না। এমনকি ডোম কখনও ভাবেননি, ছোটবেলায় তিনি সত্যিই কোনো ভূতের মুখোমুখি হয়েছিলেন। বড় হয়ে তিনি বিষয়টি নিয়ে ঘেঁটেছেন এবং কী ঘটতে পারে সে সম্পর্কে প্রশ্ন করেছেন।

তিনি বিশ্লেষণাত্মক চিন্তাপদ্ধতি ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় উত্তর পেয়েছিলেন। এখনও তিনি স্নায়ুবিজ্ঞানী বালান্দ জালালের তৈরি একটি কৌশল ব্যবহার করেন। ঘুমের পক্ষাঘাত এড়াতে তিনি শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে মনোযোগ দেন, শরীরকে যতটা সম্ভব শিথিল করার চেষ্টা করেন এবং কিছুটা সময় এভাবে পার হতে দেন। ডোম বলেন, ‘আমি এখন একে অনেক ভালোভাবে মোকাবিলা করি। আমি স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুমাই এবং ঘুমকে উপভোগ করি।’

ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ওয়েলসের মনোবিজ্ঞানের শিক্ষার্থী রবিন অ্যান্ড্রুসের ধারণা ছিল, শক্তিশালী বিশ্লেষণাত্মক চিন্তাশক্তির মানুষের অতিলৌকিক বিশ্বাসের প্রবণতা কম। আর এই ধারণা প্রমাণের জন্য তিনি মনোবিজ্ঞানী ফিলিপ টাইসনের সঙ্গে একটি গবেষণা করেছেন।

গবেষণায় ৬৮৭ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। তাদের প্রত্যেককে জিজ্ঞেস করা হয়, ‘মৃতদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব’ অথবা ‘মন বা আত্মা শরীর ছেড়ে ভ্রমণ করতে পারে’- এমন ধারণার সঙ্গে তারা কতটা একমত।

এই গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চতর বিশ্লেষণাত্মক চিন্তাশক্তির শিক্ষার্থীদের অলৌকিক বিশ্বাসের মাত্রা কম। একই সঙ্গে কলা বিভাগে অধ্যয়নরতদের তুলনায় ভৌতবিজ্ঞান, প্রকৌশল বা গণিতের শিক্ষার্থীদের ভূত বিশ্বাস অনেকটা কম। অন্য আরও কয়েকটি গবেষণায় একই প্রবণতা লক্ষ করা গেছে।

তবে অবাক করা বিষয় হলো, বিজ্ঞানে অধ্যয়নরত বা বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত অনেকের মধ্যেও অলৌকিকতায় বিশ্বাস দেখা যায়। একে একটি বড় ধরনের সমস্যা হিসেবেই মনে করছেন রবিন অ্যান্ড্রুস ও ফিলিপ টাইসন।

টাইসন বলছেন, ‘একটি ভূতের গল্প বা ভূতুড়ে অভিজ্ঞতা বাস্তব কি না তা বিচারের সক্ষমতা না থাকলে আপনি যেকোনো বিজ্ঞাপন, অপচিকিৎসা বা ভুয়া খবরের মাধ্যমেও বোকা বনে যেতে পারেন। কীভাবে তথ্য নিয়ে প্রশ্ন করা যায় এবং যুক্তিসংগত ও বাস্তব ব্যাখ্যা খোঁজা যায় তা সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।’

আর তাই কেউ ভূতের গল্প বললে উপভোগ করুন। তবে এতে বিশ্বাস স্থাপনের কিছু নেই, যা বর্ণনা করা হয়েছে সে বিষয়ে সম্ভাব্য সব ব্যাখ্যা নিয়ে চিন্তা করুন। মনে রাখবেন, ভয়ংকর কোনো ধারণায় ডুবিয়ে দিয়ে আপনার মন কিন্তু যেকোনো সময় আপনাকে বোকা বানিয়ে দিতে পারে।

আরও পড়ুন:
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি
আপনি নিঃসঙ্গ কি না, জানাবে রক্ত
সীতাকুণ্ডের হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড কি মেঘে মিশবে?
নিজের শরীর সম্পর্কে নারীরও অজানা অনেক
পৃথিবীর ‘সবচেয়ে বড়’ উদ্ভিদের সন্ধান

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
NASAs chief astronaut told the story of space in Dhaka

ঢাকায় নাসার প্রধান নভোচারী, শোনালেন মহাকাশের গল্প

ঢাকায় নাসার প্রধান নভোচারী, শোনালেন মহাকাশের গল্প ঢাকায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে রোববার শিক্ষার্থীদের মাঝে নাসার প্রধান মহাকাশচারী জোশেফ এম আকাবা। ছবি: সংগৃহীত
নাসার প্রধান মহাকাশচারী জোশেফ এম আকাবা বলেন, ‘আমাদের এই পৃথিবীটা অনেক সুন্দর। মহাশূন্যে একটিমাত্র ভুল পদক্ষেপ মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। আমাদের পৃথিবীতে তেমনটা হয় না। আমার মনে হয় না এখন পর্যন্ত আর কোনো গ্রহ মানুষের বসবাস উপযোগী। তাই এই পৃথিবীটাকে বাঁচিয়ে রাখার ক্ষেত্রে আমাদের আরও বেশি যত্নশীল হওয়া উচিত।’ 

রাজধানী ঢাকায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মহাকাশ অভিযাত্রার গল্প শোনালেন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা)-এর প্রধান নভোচারী জোশেফ এম আকাবা। কথা ও গল্পে শিক্ষার্থীদের সামনে মহাশূন্যের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন এই যশস্বী মহাকাশচারী।

রোববার ‘ফ্রম আর্থ টু অরবিট: অ্যান অ্যাস্ট্রোনাটস টেল’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অসীম শূন্যতায় কাটানো সময়ের গল্প ও চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরেন নাসার এই নভোচারী।

জোশেফ এম আকাবা একজন অভিজ্ঞ মহাকাশচারী, যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা এবং একজন শিক্ষক। তিনি অনেক বার মহাকাশ মিশনে অংশ নিয়েছেন। তিনি এখন পর্যন্ত মোট ৩০৬ দিন মহাকাশে কাটিয়েছেন। এছাড়াও তিনি দুবার মহাকাশে হাঁটার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।

ঢাকায় নাসার প্রধান নভোচারী, শোনালেন মহাকাশের গল্প

‘ফ্রম আর্থ টু অরবিট: অ্যান অ্যাস্ট্রোনাটস টেল’ অনুষ্ঠানটি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নাসার একজন দক্ষ মহাকাশচারীর বাস্তব অভিজ্ঞতা জানার সুযোগ করে দিয়েছে। এই অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা নাসার বিভিন্ন মিশন সম্পর্কে ধারণা লাভের সুযোগ পেয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে জোশেফ এম আকাবা তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, মহাকাশে থাকাকালীন বিভিন্ন বিষয়, মহাকাশ অনুসন্ধানের বৈজ্ঞানিক বিস্ময়সহ এসটিইএম (সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাথমেটিক্স) শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ ডাটা অ্যান্ড সায়েন্সেস-এর ডিন প্রফেসর মাহবুবুল আলম মজুমদার। আরও বক্তব্য দেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পাবলিক ডিপ্লোমেসি সেকশনের পাবলিক এনগেজমেন্ট-এর ডিরেক্টর স্কট ই. হার্টম্যান।

নাসার প্রধান মহাকাশচারী তার বক্তব্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘অনেকেই আমাকে বলেছেন যে আমি তাদের অনুপ্রেরণা। কিন্তু আপনাদের মাঝে আসতে পেরে আমি নিজেই অনুপ্রাণিত বোধ করছি। আপনাদের জ্ঞান অর্জনের তৃষ্ণা আমাকে অভিভূত করেছে।’

নভোচারী আকাবা তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীদেরকে লেখাপড়ায় সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিতে বলেন। তিনি বলেন, ‘একমাত্র লেখাপড়ার মাধ্যমেই নিজের স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করা সম্ভব।’

মহাকাশ গবেষণায় আগ্রহীদের তিনি নাসার ওয়েবসাইট ভিজিটের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘যারা মহাকাশচারী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তাদের উচিত নাসার ওয়েবসাইটটা ফলো করা। কারণ সেখানে অসংখ্য সুযোগ এবং পরামর্শ রয়েছে।’

জোশেফ আকাবা শিক্ষার্থীদের ভুলকে ভয় না পাওয়ার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, ‘ভুলকে ভয় পেলে চলবে না। ভুল মানুষকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়।’

তিনি শিক্ষার্থীদেরকে নিজ জীবন ও চ্যালেঞ্জের গল্প বলেন এবং কীভাবে সেই অভিজ্ঞতাগুলো তাকে মহাকাশচারী হওয়ার স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করেছে সেসব তুলে ধরেন।

সুন্দর এই পৃথিবীকে আরও বাসযোগ্য করে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে নাসার প্রধান নভোচারী বলেন, ‘আমাদের এই পৃথিবীটা অনেক সুন্দর। মহাশূন্যে একটিমাত্র ভুল পদক্ষেপ মৃত্যু ডেকে আনতে পারে। আমাদের পৃথিবীতে তেমনটা হয় না। আমার মনে হয় না এখন পর্যন্ত আর কোনো গ্রহ মানুষের বসবাস উপযোগী। তাই এই পৃথিবীটাকে বাঁচিয়ে রাখার ক্ষেত্রে আমাদের আরও বেশি যত্নশীল হওয়া উচিত।’

নাসার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আকাবা বলেন, ‘নাসার লক্ষ্য হলো অজানা সীমানার বাইরে অনুসন্ধান চালানো। একসঙ্গে কাজ করলে আমরা অনেকদূর যেতে পারব। এজন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

মহাকাশ নিয়ে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের কৌতূহল আর উচ্ছ্বাস দেখে আকাবা বলেন, ‘আমার বিশ্বাস, অচিরেই এই শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে কেউ নাসার আর্টেমিস স্কোয়াডে অংশ নেবেন।’

পুরো অনুষ্ঠানে আকাবা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অফিস অফ কমিউনিকেশন্স-এর ডিরেক্টর খায়রুল বাশার।

অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার। তিনি তার বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের মহাকাশ গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি মহাকাশচারীদের তালিকায় একদিন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের নাম থাকবে।’

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পাবলিক ডিপ্লোমেসি সেকশনের পাবলিক এনগেজমেন্ট-এর ডিরেক্টর স্কট ই. হার্টম্যান, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বিএসআরএম স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ডিন প্রফেসর আরশাদ এম চৌধুরী, ডিপার্টমেন্ট অফ কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর চেয়ারপারসন প্রফেসর সাদিয়া হামিদ কাজীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ।

আরও পড়ুন:
ভেঙে পড়েছে সূর্যের বিশাল খণ্ড, বিস্মিত বিজ্ঞানীরা
নাসার অ্যাপোলো সেভেনের সবশেষ মহাকাশচারীর মৃত্যু
এক বছরে প্রায় আড়াই শ গ্রহের সন্ধান
চন্দ্রাভিযান শেষে পৃথিবীতে নাসার ওরিয়ন
চন্দ্রাভিযান শেষে পৃথিবীতে ফিরছে নাসার ওরিয়ন

মন্তব্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
Bakribi researchers claim to produce vinegar from wild dates

বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদনের দাবি বাকৃবি গবেষকের

বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদনের দাবি বাকৃবি গবেষকের বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদন প্রক্রিয়া ও এর সঙ্গে যুক্ত গবেষণা দলের দুই সদস্য। ছবি: ইউএনবি
ভিনেগার তৈরির এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও মাঠ পর্যায়ে সফলতা সম্পর্কে এ অধ্যাপক বলেন, ‘এই গবেষণা স্থানীয় কৃষকদের জন্য একটি নতুন আয় সৃষ্টির পথ খুলতে পারে। একদিকে খেজুর থেকে তৈরি ভিনেগারের উচ্চমান এবং পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হওয়ায় বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের স্থানীয় কৃষিপণ্যের চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করবে।’

বন্য খেজুর থেকে পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে ভিনেগার উৎপাদনের দাবি করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান মজুমদার ও তার গবেষক দল।

বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার তৈরি বাংলাদেশের খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের জন্য একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেন এ অধ্যাপক।

গবেষক আনিছুর রহমান বলেন, ‘বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদনে প্রক্রিয়াকরণের জন্য গাজন প্রক্রিয়াটি পরিবেশবান্ধব। স্থানীয় কৃষিসম্পদ কাজে লাগিয়ে এবং অপচয় কমিয়ে এ পদ্ধতি খাদ্য উৎপাদনের কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতেও সহায়ক হতে পারে। গবেষণাটি বাংলাদেশের বৃহত্তর টেকসই উন্নয়ন এবং খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।’

উৎপাদিত ভিনেগারটির দেশের বাজারে প্রভাব সম্পর্কে অধ্যাপক আনিছুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে এই গবেষণার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ভিনেগার উৎপাদন কেবল খাদ্য ও পানীয় হিসেবে ব্যবহারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি প্যাকেজিং, কসমেটিক ও ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পেও ব্যবহৃত হতে পারে।

‘বিশেষ করে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের কাছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পুষ্টিকর ভিনেগারের চাহিদা বাড়ছে, যা বাজারে এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবে।’

বাংলাদেশে বিগত কয়েক বছরে খাদ্য নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য স্থানীয় কৃষি সম্পদের টেকসই ব্যবহারের ওপর বাড়তি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক আনিছুর বলেন, ‘বাংলাদেশে বন্য খেজুর ইদানীং ব্যাপকভাবে পাওয়া যাচ্ছে। এটি বেশ সস্তা ও স্থানীয়ভাবে সহজলভ্য।

‘এই খেজুর গাছ সাধারণত গ্রামীণ এলাকায় এবং রাস্তার পাশের জমিতে পাওয়া যায়, তবে নানা পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ হওয়ার পরও এই বন্য খেজুর দেশের প্রেক্ষাপটে অনেকটাই অব্যবহৃত একটি সম্পদ।’

গবেষণা পদ্ধতি সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আনিছুর বলেন, ‘বন্য খেজুরের রস ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়া মাধ্যমে ভিনেগারে পরিণত করা হয়েছে। এ গবেষণায় এক ধরনের ইস্ট ব্যবহার করে ওই রসে অ্যালকোহল তৈরি করা হয় এবং পরে অ্যাসিটোব্যাক্টর প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া দিয়ে অ্যালকোহলকে অ্যাসিটিক অ্যাসিডে রূপান্তর করা হয়।’

গবেষক আরও বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে যে, রসের ঘনত্ব যত বেশি হয়, তত বেশি অ্যালকোহল ও অ্যাসিডিটি বৃদ্ধি পায়। বেশি ঘনত্বের রসটি সবচেয়ে ভালো পুষ্টিগুণ, অ্যাসিডিটি ও ম্যাক্রো মিনারেলস (পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, সোডিয়াম) সমৃদ্ধ হয়। তাই এটি স্বাস্থ্য সচেতন ভোক্তাদের জন্য একটি আকর্ষণীয় পণ্যও বটে।’

গবেষণাটি বিশ্ববিখ্যাত প্রকাশনা এলসভিয়ারের নামী সাময়িকী অ্যাপ্লায়েড ফুড রিসার্চে সম্প্রতি প্রকাশ হয়েছে।

ভিনেগার তৈরির এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর্মসংস্থান ও মাঠ পর্যায়ে সফলতা সম্পর্কে এ অধ্যাপক বলেন, ‘এই গবেষণা স্থানীয় কৃষকদের জন্য একটি নতুন আয় সৃষ্টির পথ খুলতে পারে। একদিকে খেজুর থেকে তৈরি ভিনেগারের উচ্চমান এবং পুষ্টিগুণ সম্পন্ন হওয়ায় বিশ্ব বাজারে বাংলাদেশের স্থানীয় কৃষিপণ্যের চাহিদা বাড়াতে সাহায্য করবে।’

অধ্যাপক আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে বাকৃবি, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) আরও ছয় জন গবেষক এই প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন। বাকৃবি থেকে গবেষক দলে রয়েছেন ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলিম, একই বিভাগের অধ্যাপক ড. পলি কর্মকার এবং ওই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্নকারী শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা ও আ ন ম ইফতেখার আলম।

এ ছাড়া সিকৃবির খাদ্য প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. ফাহাদ জুবায়ের এবং ডুয়েটের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক লোপা আনসারী গবেষক দলে যুক্ত ছিলেন।

আরও পড়ুন:
ব্রহ্মপুত্রের বালুতে মিলেছে ৬টি মূল্যবান খনিজ পদার্থ
শুল্ক ১০ শতাংশ কমলেও খেজুরের দাম নাগালের বাইরে
সুস্থ থাকতে দিনে কতটুকু হাঁটলেই চলে, কী বলছে গবেষণা?
সৌদির খেজুরে হাসি আইনজীবী জাকিরের
খেজুরের স্বাস্থ্যগত ৭ উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

মন্তব্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
Earth Sun Jupiter will be in the same row tomorrow

পৃথিবী-সূর্য-বৃহস্পতি একই সারিতে থাকবে কাল

পৃথিবী-সূর্য-বৃহস্পতি একই সারিতে থাকবে কাল
ফোর্বস ম্যাগাজিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতি গ্রহ শনিবার সারারাত আকাশে দৃশ্যমান থাকবে। এটি দেখার জন্য এই সময়ের আগে-পরে এক মাস ধরে এই বিস্ময়কর ঘটনা পর্যবেক্ষণের সুযোগ থাকবে।

মানব বসতির পৃথিবী, সূর্য ও বৃহস্পতি গ্রহ একই সরলরেখায় অবস্থান করবে আগামীকাল শনিবার। এদিন সারারাত বৃহস্পতি আকাশে দৃশ্যমান থাকবে। এই অবস্থানকে বলা হয় ‘জুপিটার্স অপজিশন’। এমন বিরল মহাজাগতিক ঘটনা সৌরজগতের রহস্য ও সৌন্দর্যের প্রতি মানুষের কৌতূহলকে বাড়িয়ে দেয়।

ফোর্বস ম্যাগাজিনের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, শনিবার বৃহস্পতিকে দেখার জন্য এই সময়ের আগে-পরে এক মাস ধরে এই বিস্ময়কর ঘটনা পর্যবেক্ষণের সুযোগ থাকবে। এমনকি একটি ছোট টেলিস্কোপ বা সাধারণ দূরবীন দিয়েও এই গ্রহের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে।

বিজ্ঞানীরা বলেছেন, শুক্রবার পৃথিবী থেকে প্রায় ৬১১ মিলিয়ন কিলোমিটার বা ৩৮০ মিলিয়ন মাইল দূরে থাকবে বৃহস্পতি। এই দূরত্বে বৃহস্পতিকে বেশ উজ্জ্বল দেখাবে।

আরও পড়ুন:
আর্টেমিসে ৯২ হাজার কি.মি. দূর থেকে পৃথিবীর ছবি
মহাকাশে ইঁদুর-বানরের প্রজননক্ষমতা দেখতে চায় চীন
জেফ বেজোসের রকেটে বিস্ফোরণ
পৃথিবীর কাছে আসতে থাকা গ্রহাণু নিয়ে যা জানাচ্ছে নাসা
এসএলএস উৎক্ষেপণের নতুন ক্ষণ জানাল নাসা

মন্তব্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
Worlds largest coral discovery

বিশ্বের বৃহত্তম প্রবাল আবিষ্কার

বিশ্বের বৃহত্তম প্রবাল আবিষ্কার
প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে বিশ্বের বৃহত্তম প্রবালের সন্ধান পেয়েছেন একদল গবেষক। সলোমন দ্বীপপুঞ্জের কাছে তিনশ’ বছরেরও বেশি পুরনো প্রবালটি খুঁজে পান ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ভিডিওগ্রাফার মানু সান ফেলিক্স। দৈর্ঘ্যে ১১১ ফুট ও প্রস্থে ১০৪ ফুট প্রবালটির আকার একটি পূর্ণবয়স্ক নীল তিমির চেয়েও বড়।

প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে বিশ্বের বৃহত্তম প্রবালের সন্ধান পেয়েছেন একদল গবেষক। সলোমন দ্বীপপুঞ্জের কাছে তিনশ’ বছরেরও বেশি পুরনো প্রবালটি খুঁজে পান ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ভিডিওগ্রাফার মানু সান ফেলিক্স। দৈর্ঘ্যে ১১১ ফুট ও প্রস্থে ১০৪ ফুট প্রবালটির আকার একটি পূর্ণবয়স্ক নীল তিমির চেয়েও বড়।

ধারণা করা হচ্ছে, এক বিলিয়নের বেশি ক্ষুদ্র প্রাণী ও জলজ অণুজীবের উপস্থিতি রয়েছে প্রবালটিতে। এর মাধ্যমে জলজ প্রকৃতি নিয়ে গবেষণার নতুন দ্বার উন্মোচিত হলো বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

তিনশ’ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে লোকচক্ষুর আড়ালে ছিল এই বিশাল প্রবাল। সদ্য আবিষ্কৃত এই জলজ বিস্ময়টি এখন পর্যন্ত জানা বিশ্বের সবচেয়ে বড় একক প্রবাল বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা।

কোরাল বা প্রবাল এক ধরনের সামুদ্রিক অমেরুদণ্ডী প্রাণী। বছরের পর বছর ধরে একসঙ্গে থাকতে থাকতে, পুঞ্জিভূত হয়ে গঠিত হয় বিশাল প্রবাল প্রাচীর। সঙ্গে যুক্ত হয় শৈবাল, মৃত জলজ প্রাণীর দেহাবশেষ ও পলিপ। সব মিলিয়ে জীবন্ত প্রাণীর তৈরি এক আশ্চর্য স্থাপনা এই প্রবাল।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বব্যাপী গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে সামুদ্রিক জীব-বৈচিত্র্য। আজারবাইজানের বাকুতে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলন কপ-২৯ এর মধ্যেই, সমুদ্র তলদেশের অবস্থা পর্যালোচনা করতে বৈজ্ঞানিক অভিযান চালায় ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক।

অনেকটা দৈবক্রমেই প্রবালটি আবিষ্কার করেন ন্যাট জিও’র ভিডিওগ্রাফার মানু সান ফেলিক্স। সলোমন দ্বীপপুঞ্জের কাছে স্বচ্ছ পানিতে ছেলেকে নিয়ে ডুব দেন তিনি। প্রথমে এটিকে জাহাজের ধ্বংসাবশেষ মনে করে এগিয়ে গেলেও পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর বুঝতে পারেন জীবন্ত প্রাণীদের তৈরি অসামান্য সৌন্দর্য আবিষ্কার করে ফেলেছেন তিনি।

গবেষকদের ধারণা, বিশ্বের বৃহত্তম জলজ প্রাণী নীল তিমির চেয়েও আকারে অনেকটা বড় এই প্রবাল।

এতোদিন যুক্তরাষ্ট্রের সামোয়াতে থাকা ‘বিগ মামা’ প্রবালটিই বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবাল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে আসছিল। তবে নতুন সন্ধান পাওয়া প্রবালটি ‘বিগ মামা’র চেয়েও প্রায় তিন গুণ বড়। ৩৪ মিটার দীর্ঘ প্রবালটি এতটাই বিশাল যে ধারণা করা হচ্ছে, মহাকাশ থেকেও দেখা যাবে এটি।

মন্তব্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
The new DG of Science and Technology Museum is Munira Sultana

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের নতুন ডিজি মুনীরা সুলতানা

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের নতুন ডিজি মুনীরা সুলতানা জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ভবন। ছবি: উইকিমিডিয়া কমন্স
জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ১৯৬৫ সালের ২৬ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় আসে।

জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) মুনীরা সুলতানা।

এ নিয়োগ দিয়ে সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর ১৯৬৫ সালের ২৬ এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় আসে।

জাদুঘরটি বাংলাদেশের একমাত্র বিজ্ঞান জাদুঘর এবং জাতীয় পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে।

আরও পড়ুন:
গণভবন হবে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’
নির্ধারিত সময়ের আগেই জাতীয় জিন ব্যাংক স্থাপন
ডাটা সুরক্ষায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না থাকলে আমাদের সার্বভৌমত্ব থাকবে না
ইন্টারনেট সংযোগ সম্প্রসারণে সিডিনেটকে ইউএসটিডিএর সমীক্ষা অনুদান
এশিয়া-প্যাসিফিকে শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবনী কোম্পানির তালিকায় ষষ্ঠ ইনফিনিক্স

মন্তব্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
Three people won the Nobel Prize in Chemistry for their research on proteins

প্রোটিন নিয়ে গবেষণায় রসায়নে নোবেল পেলেন তিনজন

প্রোটিন নিয়ে গবেষণায় রসায়নে নোবেল পেলেন তিনজন রসায়নে চলতি বছর নোবেল পুরস্কার পাওয়া ডেভিড বেকার, ডেমিস হ্যাসাবিস ও জন এম. জাম্পার। ছবি: নোবেল প্রাইজ আউটরিচ
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে বুধবার জানানো হয়, এ বছর তিন গবেষকের মধ্যে একজনকে পুরস্কারের অর্ধেক এবং বাকি দুজনকে অর্ধেক দেয়া হয়েছে।

প্রোটিন নিয়ে গবেষণা করে ২০২৪ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন তিন রসায়নবিদ।

নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে বুধবার জানানো হয়, এ বছর তিন গবেষকের মধ্যে একজনকে পুরস্কারের অর্ধেক এবং বাকি দুজনকে অর্ধেক দেয়া হয়েছে।

সাইটে উল্লেখ করা হয়, কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইন নিয়ে গবেষণার জন্য এ বছর রসায়নে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে ডেভিড বেকারকে। অন্যদিকে প্রোটিনের কাঠামো নিয়ে পূর্বাভাসের জন্য ডেমিস হ্যাসাবিস ও জন এম. জাম্পারকে এ পুরস্কারের অর্ধেক দেয়া হয়।নো হ বু এ

তিন গবেষকের মধ্যে হ্যাসাবিস ও জাম্পার জ্ঞাত প্রায় সব প্রোটিনের কাঠামো নিয়ে পূর্বাভাস দিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে (এআই) সফলভাবে কাজে লাগান। অন্যদিকে ডেভিড বেকার প্রোটিনের বিষয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ জানার পাশাপাশি সম্পূর্ণ নতুন কিছু প্রোটিন উদ্ভাবন করেন।

আরও পড়ুন:
শান্তিতে নোবেল পেলেন ইরানের কারাবন্দি মানবাধিকারকর্মী নার্গিস  
রসায়ন পরীক্ষায় ফেল করা ছেলেটিই পেল রসায়নে নোবেল
সাহিত্যে নোবেল পেলেন নরওয়ের লেখক জন ফসে
ন্যানোটেকনোলজি নিয়ে গবেষণায় রসায়নে নোবেল পেলেন তিনজন
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী

মন্তব্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি
Two researchers won the Nobel Prize in Physics

কৃত্রিম স্নায়বিক নেটওয়ার্ক নিয়ে গবেষণায় পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন দুজন

কৃত্রিম স্নায়বিক নেটওয়ার্ক নিয়ে গবেষণায় পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন দুজন পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল ‍পুরস্কার পাওয়া দুই গবেষক জন জে. হপফিল্ড ও জেফরি ই. হিন্টন। ছবি: নোবেল প্রাইজ আউটরিচ
নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, কৃত্রিম স্নায়বিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মেশিন লার্নিংকে সক্ষম করা মৌলিক আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে জন জে. হপফিল্ড ও জেফরি ই. হিন্টনকে।

পদার্থবিজ্ঞানে এবার নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির গবেষক জন জে. হপফিল্ড ও কানাডার টরন্টো ইউনিভার্সিটির গবেষক জেফরি ই. হিন্টন।

সুইডেনের স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিট) পদার্থবিজ্ঞানে নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণা করে রয়েল সুইডিশ অ্যাকাডেমি।

নোবেল পুরস্কারের ওয়েবসাইটে জানানো হয়, কৃত্রিম স্নায়বিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মেশিন লার্নিংকে সক্ষম করা মৌলিক আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে জন জে. হপফিল্ড ও জেফরি ই. হিন্টনকে।

এতে উল্লেখ করা হয়, হপফিল্ড একটি কাঠামো নির্মাণ করেন, যেটি তথ্য মজুত ও পুনর্নির্মাণ করতে পারে। অন্যদিকে হিন্টন এমন একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন, যা ডেটাতে স্বতন্ত্রভাবে প্রোপার্টি আবিষ্কার করতে পারে। বর্তমানে ব্যবহৃত বৃহদাকার স্নায়বিক নেটওয়ার্কের জন্য এ উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ।

পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেয়া হচ্ছে ১৯০১ সাল থেকে। আজকের আগে ১১৭ জন এ পুরস্কার পান।

এ শাস্ত্রে সবচেয়ে কম ২৫ বছর বয়সে নোবেল পান লরেন্স ব্র্যাগ, যিনি ১৯১৫ সালে পুরস্কারটি পেয়েছিলেন। সবচেয়ে বেশি ৯৬ বছর বয়সে নোবেল পুরস্কার পান আর্থার অ্যাশকিন। তিনি ২০১৮ সালে পুরস্কারটি পেয়েছিলেন।

আরও পড়ুন:
রসায়ন পরীক্ষায় ফেল করা ছেলেটিই পেল রসায়নে নোবেল
সাহিত্যে নোবেল পেলেন নরওয়ের লেখক জন ফসে
ন্যানোটেকনোলজি নিয়ে গবেষণায় রসায়নে নোবেল পেলেন তিনজন
পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী
করোনার টিকা উদ্ভাবনে ভূমিকায় চিকিৎসায় নোবেল পেলেন দুই গবেষক

মন্তব্য

p
উপরে