আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন আরো বছর পাঁচেক আগেই। খেলছেন শুধুই আইপিএল। কিন্তু বয়সটা এরই মধ্যে তেতাল্লিশ পেরিয়ে চুয়াল্লিশ ছুঁইছুঁই। তাই বেশ কয়েক বছর ধরেই মহেন্দ্র সিং ধোনিকে ঘিরে সবচেয়ে বড় প্রশ্নটা সম্ভবত, কবে অবসর নেবেন! সেই প্রশ্নকে আরও জোরালো করছে আইপিএলের চলতি আসরে ধোনির পারফরম্যান্স। চেন্নাইয়ের জার্সিতে এখনো পর্যন্ত নিজের ছায়া হয়ে আছেন তিনি। কেউ কেউ এমনও বলছেন, আরও আগেই ক্রিকেট ছাড়া উচিত ছিল ধোনির।
এর মধ্যেই শনিবার প্রথমবার আইপিএলে ধোনির খেলা দেখতে এসেছিলেন তার বাবা পান সিং এবং মা দেবকী। তার আগে ধোনির স্ত্রী সাক্ষী ধোনি এবং মেয়ে জিভার কথোপকথনের মধ্যে ‘শেষ ম্যাচ’ শব্দ দুটি ভাইরাল হয়। তা থেকে ক্রিকেটপ্রেমীদের একাংশ মনে করেন দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলেই অবসর ঘোষণা করবেন মাহি। এবার ধোনি নিজেই তা নিয়ে মুখ খুললেন।
কনটেন্ট ক্রিয়েটর রাজ শামানির সঙ্গে পডকাস্টে অবসর নিয়ে মুখ খুলেছেন ধোনি। জানিয়েছেন আইপিএল থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত তাড়াহুড়ো করে নিতে চান না। ভারতের সাবেক অধিনায়ক বলেছেন, ‘এখনই অবসর নিয়ে ভাবছি না। এখনও আইপিএল খেলছি। বিষয়টা সাধারণ ভাবেই দেখছি। শুধু আইপিএলেই ক্রিকেট খেলি। এখন আমার বয়স ৪৩। ২০২৫ সালের আইপিএল শেষ হওয়ার সময় আমার বয়স হবে ৪৪। তারপর ১০ মাস সময় পাব ভাবার। আরও খেলব না ছেড়ে দেব, তখন ভাবব। আসলে সিদ্ধান্তটা আমি নেব না। আমার শরীর নেবে। সব মিলিয়ে বছরখানেক আছে হাতে। দেখা যাক।’
ধোনি হয়তো বলতে চেয়েছেন, শরীর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ধকল নিতে পারলে আইপিএলে খেলা চালিয়ে যাবেন। নাহলে অবসরের কথা ভাববেন। আপাতত এবারের আইপিএল উপভোগ করতে চাইছেন। ধোনি বলেন, ‘এখন আইপিএল উপভোগ করতে চাইছি। ছোটবেলায় স্কুলে পড়ার সময় যেমন উপভোগ করতাম, এখনো তেমনই করছি। তখন একটা কলোনিতে থাকতাম আমরা। রোজ বিকেল ৪টার সময় খেলতে যেতাম। প্রায় দিনই ক্রিকেট খেলতাম। আবহাওয়া ঠিক না থাকলে ফুটবল খেলতাম। আমি ওই রকম সরলভাবে খেলতে চাই। যদিও কথাটা বলা যত সহজ, কাজে করা তত সহজ নয়।’
কিছু দিন আগেও একবার ধোনি বলেছিলেন, আর যে ক’বছর ক্রিকেট খেলবেন, শিশুর মতো উপভোগ করতে চান। ২০১৯ সালের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেননি ধোনি। এখন আর ঘরোয়া ক্রিকেটও খেলেন না। শুধু আইপিএলেই দেখা যায়, ৪৩ বছরের উইকেটরক্ষক-ব্যাটারকে।
ইউরোপিয়ান ফুটবলের মৌসুম এখনো চলমান। নিশ্চিত করে বলার উপায় নেই কোন লিগের চ্যাম্পিয়ন কারা হচ্ছে। ব্যতিক্রম শুধু লিগ ওয়ান। ইতোমধ্যেই ফরাসি এই লিগের শিরোপা নিশ্চিত হয়ে গেছে। ৬ ম্যাচ হাতে রেখেই অপরাজিত হিসেবে ইউরোপিয়ান ক্লাবগুলোর মধ্যে সবার আগে শিরোপা নিশ্চিত করেছে প্যারিস সেন্ট-জার্মেই (পিএসজি)।
ঘরের মাঠে শিরোপা নিশ্চিত করতে অঁজির বিপক্ষে হার এড়ানোই যথেষ্ট ছিল পিএসজির জন্য। শক্তিতে অনেক এগিয়ে থাকা দলটি যেন কাজ সারতে চাইল গোল উৎসব দিয়ে। আক্রমণের বন্যায় অনেক সুযোগ তৈরি করলেও তত গোল পেল না লুইস এনরিকের দল। তবে জয় দিয়েই তারা ধরে রাখল লিগ আর শিরোপা।
ঘরের মাঠে অঁজির বিপক্ষে ১-০ গোলে জিতেছে পিএসজি। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন দিজিরে দুয়ে। পয়েন্ট টেবিলে দলকে নিয়ে গেছেন সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে। ১৮ দলের টুর্নামেন্টে অপরাজিত থেকে শিরোপা ধরে রাখল পিএসজি। ২৮ ম্যাচে ২৩ জয় ও পাঁচ ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৭৪। এক ম্যাচ কম খেলে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে আছে মোনাকো।
ফ্রান্সের শীর্ষ লিগে টানা চতুর্থ ও সব মিলিয়ে ত্রয়োদশ শিরোপা জিতল পিএসজি। দশটির বেশি শিরোপা নেই আর কারও। এক যুগের বেশি সময় ধরে লি আঁয় দাপট দেখাচ্ছে প্যারিসের দলটি। সবশেষ ১৩ আসরের ১১টিতেই শিরোপা জিতেছে তারা।
প্রায় ৮৫ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে প্রথমার্ধে গোলের জন্য ১১টি শট নেয় এনরিকের দল। কেবল একটি রাখতে পারে লক্ষ্যে। ৩৪তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে ভিতিনিয়ার শট ঠেকিয়ে দেন অঁজি গোলরক্ষক ইয়াহিয়া ফোফানা।
বিরতির পরপরই এগিয়ে যায় পিএসজি। খাভিচা কাভারাৎস্খেলিয়ার কাছ থেকে বল পেয়ে জাল খুঁজে নেন ফরাসি ফরোয়ার্ড দুয়ে। এগিয়ে যাওয়ার পর সফরকারীদের আরও চেপে ধরে পিএসজি। ছন্দে থাকা উসমান দেম্বেল মাঠে নামার পর আক্রমণের ধার আরও বাড়ে। কিন্তু ব্যবধান আর বাড়াতে পারেনি স্বাগতিকরা।
চলতি মৌসুমে আরও দুটি শিরোপা জয়ের হাতছানি পিএসজির সামনে। ফরাসি কাপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে দলটি। অধরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা জয়ের আরেকটি চেষ্টায় কোয়ার্টার-ফাইনালে পৌঁছে গেছে দলটি। সেমি-ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে তাদের প্রতিপক্ষে ইংল্যান্ডের ক্লাব অ্যাস্টন ভিলা। আগামী বুধবার প্রথম লেগ হবে প্যারিসে।
সময়ের হিসেবে প্রায় এক বছর আট মাস। ম্যাচের হিসাবে সাতটি লড়াই। এত দীর্ঘ সময় রিয়াদ ডার্বিতে জয়ের স্বাদ পাচ্ছিল না আল-নাসর। সৌদি আরবের ফুটবলের আকর্ষণীয় লড়াইয়ে অবশেষে আল-হিলালকে হারাতে পারল তারা। সেই খরা কাটল দলের সবচেয়ে বড় তারকার সৌজন্যেই। জোড়া গোল করে জয়ের নায়ক ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
গতকাল সৌদি প্রো লিগের ম্যাচে আল-হিলালের মাঠে ৩-১ গোলের দারুণ এক জয় পেয়েছে আল-নাসর। আলি আল হাসান দল এগিয়ে নেওয়ার পরে জোড়া গোল করেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
এই জয়ের পরও অবশ্য পয়েন্ট তালিকার তিন নম্বরেই আছে আল-নাসর। ২৬ ম্যাচে ৫৪ পয়েন্ট তাদের। তাদের চেয়ে তিন পয়েন্ট বেশি নিয়ে দুইয়ে আল-হিলাল। আর ৫১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে কারিম বেনজেমার আল-ইত্তিহাদ।
দুই দলের আগের সাতটি লড়াইয়ে আল-হিলালের জয় ছিল চারটি, ড্র হয়েছিল তিনটি ম্যাচ। অবশেষে প্রথম ডার্বি জয়ের দেখা পেল আল নাসর।
প্রথমার্ধে আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণে ম্যাচ জমে উঠলেও গোল হচ্ছিল না। ৪৫ মিনিট শেষে যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে এগিয়ে যায় আল-নাসর। মিডফিল্ডার আলি আল হাসানের অসাধারণ কার্ল করা শট গোলরক্ষক ইয়াসিন বুনোর হাত ফাঁকি দিয়ে জালে জড়িয়ে যায়।
তবে বিরতি থেকে ফিরেই আবারও জাল খুঁজে নেয় আল নাসর। ম্যাচের ৪৭তম ব্যবধান ২-০ করেন সিআরসেভেন। বক্সের ভেতর সাদিও মানের পাস থেকে চকিতে বাঁ পায়ের শটে দারুণ ফিনিশিংয়ে জালের দেখা পান তিনি।
প্রতি আক্রমণে এরপর ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করে আল-হিলাল। ৬২তম মিনিটে একটি গোল ফিরিয়ে দেয় তারা। কিন্তু ৮৮তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে আল-নাসরের জয় নিশ্চিত করেন রোনালদো।
এই দুই গোলে সৌদি প্রো লিগে পর্তুগিজ মহাতারকার গোল হলো ৭০টি। হাজার গোলের লক্ষণ পূরণের দিকেও তিনি এগিয়ে গেলেন দুই ধাপ। তার ক্যারিয়ার গোল সংখ্যা এখন ৯৩১টি।
ম্যাচ শেষে অবশ্য ৪০ বছর বয়সি তারকা বলছেন, তার কাছে দলের জয়ই সবকিছুর ওপরে। রোনালদো বলেন, ‘এই জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা ছিল দলীয় প্রচেষ্টার। আমার গোল করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ছিল, তবে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ দলের জয়।’
ব্যক্তিগত রেকর্ড নিয়ে ভাবেন না বলেও জানিয়েছেন রোনালদো। সিআরসেভেন বলেন, ‘সৌদি প্রো লিগে ও (এএফসি) চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দলকে সহায়তা করতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি আমি, ব্যক্তিগত রেকর্ড নিয়ে ভাবি না।’
টি-টোয়েন্টি সিরিজে কোনোমতে ওয়াইটওয়াশের লজ্জা থেকে বেঁচে ছিল পাকিস্তান। ওয়ানডে সিরিজেও একই অবস্থার মুখোমুখি হয়েছিল বাবর-রিজওয়ানরা। কিন্তু এবার আর কোনো রক্ষা হয়নি তাদের। পুরো সফরজুড়েই চরম ব্যর্থতার খেসারত দিলো ম্যান ইন গ্রিনরা। বৃষ্টি বাধার শেষ ওয়ানডেতে বেন সিয়ার্সের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচেও নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাস্ত হয়েছে রিজওয়ানরা। এতে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতে হোয়াইট ওয়াশের লজ্জা দিয়েছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড।
গতকাল মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বৃষ্টির কারণে সিরিজের শেষ ম্যাচের টস হয় এক ঘণ্টা বিশ মিনিট দেরিতে। তাতে ম্যাচের পরিধি নেমে আসে ৪২ ওভারে। টস হেরে নিউজিল্যান্ড শুরুতে ব্যাট করে ৮ উইকেটে সংগ্রহ করে ২৬৪ রান। জবাব দিতে নেমে ২২১ রানেই শেষ হয় পাকিস্তানের ইনিংস।
প্রথম দুই ম্যাচের মতো একই দৃশ্য মঞ্চস্থ হয়েছে। পুরো সফরেই কিউই বোলিংয়ের বাউন্স আর মুভমেন্টে খেই হারায় সফরকারীদের ব্যাটিং। এ দিনও পাকিস্তানের ব্যাটারদের বেপরোয়া শট দলকে বিপদে ফেলে। বেন সিয়ার্স ৩৪ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট। যার ৪টিই পড়েছে শর্ট পিচ ডেলিভারিতে। সিরিজ সেরাও তিনি। সফরকারীদের মাঝে আশার সঞ্চার করা মোহাম্মদ রিজওয়ানের (৩৭) উইকেটটিও নিয়েছেন তিনি।
এদিন পাকিস্তানের ইনিংসের টপ স্কোরার ছিলেন বাবর আজম। ৫৮ বলে ৫০ রান করেছেন তিনি। ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক শ্লথ গতির ব্যাটিংয়ে ৫৬ বলে করেছেন ৩৩ রান। পাকিস্তানের ইনিংসের শুরুটাও ভালো ছিল না। কিউই ফিল্ডারের থ্রো ওপেনার ইমাম উল হকের চোয়ালে আঘাত করলে এক রানে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছেড়ে যান তিনি।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করা নিউজিল্যান্ডকে শুরুতে পথ দেখায় রাইস মারিউর ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরি। দলের ১৩ রানে আরেক ওপেনার নিক কেলি (৩) বিদায় নিলে সেই ধাক্কা সামাল দেন মারিউ। মাত্র দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমে ৬১ বলে উপহার দেন ৫৮ রানের দায়িত্বশীল একটি ইনিংস। তার মধ্যে ছয় ছিল ২টি, চার ৪টি। মিডল অর্ডারে কিউইদের বেশ কয়েকজন দারুণ শুরু পেলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ডেথে শুধু অধিনায়ক মাইকেল ব্রেসওয়েলই ঝোড়ো গতিতে খেলে স্কোর বাড়াতে অবদান রেখেছেন। ৪০ বলে উপহার দেন ৫৯ রানের দারুণ একটি ইনিংস। তাতে ছিল ৬টি ছয় এবং ১টি চার। ম্যাচসেরাও তাই ব্রেসওয়েল।
পাকিস্তানের হয়ে ৬২ রানে ৪টি উইকেট নেন আকিফ জাভেদ। ৫৪ রানে দুটি নেন নাসিম শাহ। একটি করে নিয়েছেন ফাহিম আশরাফ ও সুফিয়ান মুকিম।
শঙ্কা কাটিয়ে বর্তমানে অনেকটাই সুস্থ তামিম ইকবাল। তবে হৃদযন্ত্রের বর্তমান অবস্থা ও শারীরিক অন্যান্য দিক আরও ভালোভাবে পর্যালোচনার জন্য সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন তামিম ইকবাল। শুরুতে থাইল্যান্ড যাওয়ার কথা থাকলেও পরিবারের সিদ্ধান্তে গন্তব্য বদলে যাচ্ছেন সিঙ্গাপুরে। এরই মধ্যে ভিসা ও বিমানের টিকিট চূড়ান্ত করা হয়েছে। পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, আগামী ৭ এপ্রিল সিঙ্গাপুরের একজন অভিজ্ঞ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে দেখা করবেন তামিম। সেখানে পরামর্শ নেওয়ার পাশাপাশি পুরো শরীরের পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করাবেন তিনি।
বর্তমানে দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেন না বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে ফিরে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) অংশ নিয়েছেন। যদিও এই মুহূর্তে ঈদের ছুটিতে আছেন তারা। সেই বিশ্রামের সময় ফুরিয়ে আসছে। কারণ কিছুদিন পরই আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যস্ততা আছে বাংলাদেশ দলের। এপ্রিলেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টাইগাররা দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে।
সে উপলক্ষে আগামী ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হবে বাংলাদেশ দলের অনুশীলন ক্যাম্প। ক্যাম্প হবে সিলেটের মাটিতে। যেখানে থাকবেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে থাকা ক্রিকেটাররা। যদিও এখনও আসন্ন সিরিজের জন্য দল ঘোষণা করেনি বিসিবি। ডিপিএলে ১০ এপ্রিল ম্যাচ খেলেই জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা সিলেটের অনুশীলন ক্যাম্পে যোগ দেবেন।
দুই টেস্ট খেলতে আগামী ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশে পা রাখবে জিম্বাবুয়ে। এরপর ২০ এপ্রিল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টে মুখোমুখি হবে দুই দল। দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট হবে ২৮ এপ্রিল, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে।
যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানোর পর থেকেই লিওনের মেসির সঙ্গে জুড়ে গেছে একটি নাম—ইয়াসিন চুকো। মেসির সান্নিধ্য পেতে মাঝেমধ্যেই মাঠে ঢুকে পড়া ভক্তদের থামিয়ে দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এরই মধ্যে পরিচিতি পেয়েছেন দৃঢ় শারীরিক গঠনের এই দেহরক্ষী। তবে সেসব দৃশ্য এখন থেকে আর দেখা যাবে না।
মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) নিয়মবহির্ভূত হওয়ায় খেলা চলাকালে ইয়াসিনের মাঠে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে লিগ কর্তৃপক্ষ। এখন থেকে তিনি শুধু মাঠের বাইরে থেকেই মেসির নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
এমএলএসের নিয়ম অনুযায়ী, খেলা চলাকালে খেলোয়াড়, কোচ ও রেফারিই কেবল মাঠে প্রবেশ করতে পারেন। তাছাড়া চুকোর হুটহাট মাঠে ঢুকে পড়ার বিষয়টি বিব্রতকর বলেও জানানো হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে নাখোশ চুকো। অনলাইনে ভিডিও বিষয়ক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হাউস অফ হাইলাইটসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব ঘটনায় তিনি নিজে ‘সমস্যা নন’ বলে জানিয়েছেন।
তার কথায়, ‘ইউরোপে আমি সাত বছর কাজ করেছি। লিগ ১ ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে আমার। ইউরোপে ওই ৭ বছরে মাত্র ৬ জন মাঠে প্রবেশ করে। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে সেখানে গত ২০ মাসে ইতোমধ্যে ১৬ মাঠে ঢুকেছে। এটি একটি বড় সমস্যা।’
‘সমস্যা আসলে এখানকার, আমি নই। আমাকে মেসিকে সাহায্য করতে দিন।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘এমএলএস ও কনকাকাফ (ফুটবল) আমি ভালোবাসি, তবে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমি সহযোগিতা করতে পছন্দ করি। আমি হয়তো অনেকের চেয়ে ভালো নই, কিন্তু ইউরোপ থেকে আমার ব্যাপক অভিজ্ঞতা অর্জন হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা আমি মেনে নিয়েছি, কিন্তু একসঙ্গে আমরা আরও ভালো করতে পারতাম।’
তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাকে সরিয়ে স্বয়ং এমএলএস কর্তৃপক্ষ মাঠে মেসির নিরাপত্তার ভার নিয়েছে।
মেসির সঙ্গে কাটানো গত কয়েক মাসের ব্যবধানে নিজেকে শুধু মহাতারকার দেহরক্ষী নন, বরং তার চেয়ে বেশি কিছু বলে মনে করেন চুকো।
‘নিজেকে (মেসির) পরিবারের একজন বলে মনে হয় আমার। শুধু শারীরিকভাবেই তাকে রক্ষা করা আমার কাজ নয়, মানসিকভাবেও। সে (মেসি) আমাকে পুরোপুরি বিশ্বাস করে এবং আমার ওপর নির্ভরও করে। নিজের সমস্ত মনোযোগ আমি তার ওপর রাখার চেষ্টা করি।’
২০২৩ সালে পিএসজি ছেড়ে ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর চুকোকে নিজের দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োগ দেন লিওনেল মেসি। তারপর থেকে ফুটবলের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ এই খেলোয়াড়ের সঙ্গে আঁঠার মতো লেগে আছেন তিনি। এমনকি স্ত্রীর সঙ্গে আর্জেন্টাইন মায়েস্ত্রো যখন একাকি সময় কাটান, তখনও কাছাকাছি অবস্থান করতে দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ‘নেভি সিলের’ সাবেক সদস্য দাবি করা এই নিরাপত্তাকর্মীকে।
তায়কোয়ান্দো, বক্সিং ও মিক্সড মার্শাল আর্টে পারদর্শী ইয়াসিন শুধু মেসির নিরাপত্তাই নিশ্চিত করেন না, তার পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্বও পালন করে থাকেন। তার অধীনে ৫০ জনের একটি নিরাপত্তা দল কাজ করে, যারা মাঠে ও মাঠের বাইরে মেসি ও তার পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত।
মন্তব্য